রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৪৪ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
সশস্ত্র বাহিনীর ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতার সময় বাড়ল আরও ৬০ দিন স্বৈরাচারের কোনো ষড়যন্ত্রই সফল হবে না : তারেক রহমান নারায়ণগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধিদের সভা অনুষ্ঠিত তালায় ফুলকুঁড়ি আসরের সূবর্ণ জয়ন্তী পালিত পাঁচবিবিতে কৃত্রিম সংকট ও সিন্ডিকেটে বাড়ছে বীজ আলুর দাম নিষিদ্ধ হওয়া ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা গ্রেপ্তার রাজধানীতে নিষিদ্ধঘোষিত হিজবুত তাহরীরের ২ সদস্য গ্রেপ্তার বগুড়ায় আইন কর্মকর্তা নিয়োগ বিএনপি-জামায়াতপন্থি ১০৭ জন অতি বৃষ্টির কারণে লালমনিহাট জেলায় বন্যা নিম্ন অঞ্চল প্লাবিত বগুড়ায় ট্রাক পরিবহনের সভাপতি-সম্পাদকের বিরুদ্ধে ১০ কোটি টাকার আত্মসাৎ ও মামলা

আশুলিয়ার জামগড়ায় ৪’শতাধিক শ্রমিকের বকেয়া বেতনের দাবিতে সমাবেশ-পোশাক কারখানা বন্ধ ঘোষণা-প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা!

বাংলার প্রতিদিন ডেস্ক ::
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ৩১ জুলাই, ২০১৮
  • ২০৪ বার পড়া হয়েছে

 

আশুলিয়া থেকে শাহিন হাওলাদারঃ
আজ ৩১ জুলাই, মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে শত শত পোশাক শ্রমিক সমাবেশ করছে রাস্তায়। তাদের দাবি, বাঁধন পোশাক কারখানায় তাদের দুই মাসের বকেয়া বেতন ও ঈদ বোনাস পাওনা রয়েছে। মালিক পক্ষ শ্রমিকদের সাথে কোনো আলোচনা না করেই কারখানাটি বন্ধ ঘোষণা করেছেন।

শ্রমিক ও পুলিশ জানায়, ঢাকার আশুলিয়ার জামগড়ার বাঁধন নামের পোশাক কারখানার চার শতাধিক শ্রমিকের দুই মাসের বকেয়া বেতন ও ঈদ বোনাস না দিয়ে অফিস বন্ধ ঘোষণা করেছেন মালিক পক্ষ।

গতকাল (৩০ জুলাই ২০১৮) বেতন দেয়ার কথা বলে ওই কারখানাটি জুলাই মাসের ১০ তারিখে কাজ বন্ধ করে দেন মালিক পক্ষ।

শ্রমিক ও শিল্প পুলিশ জানান, ৩০ জুলাই শ্রমিকদের বকেয়া বেতন না দিয়েই আবার ১৬ আগস্ট বেতন দিবে বলে অফিসের গেটে নোটিশ টানিয়ে দিয়েছে মালিকপক্ষ।

এ বিষয়ে বাঁধন পোশাক কারখানার অপারেটর রত্না, ও আন্নাসহ কয়েকজন শ্রমিক বলেন, আমাদের দুই মাসের বকেয়া বেতন ও ঈদের বোনাস না দিয়েই হঠাৎ করে অফিসের গেটে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে কারখানা বন্ধ ঘোষণা করেছেন মালিক পক্ষ।

কান্নাজনিত ভাবে শ্রমিকরা বলছে, আমরা বাসা ভাড়া, দোকানের বিল পরিশোধ করতে না পারায় অপমানিত হচ্ছি। এখন আবার ১৬ আগস্ট বেতন দিবে বলে মালিক পক্ষ নোটিশ দিয়েছেন। আমরা না খেয়ে আছি, আমাদের খবর কেউ রাখে না। আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

শ্রমিকরা বলেন, আমরা আন্দোলন করলে সরকারের বদনাম হবে, তাই আমাদের দুই মাসের বকেয়া বেতন ও বোনাস পরিশোধ না করলে আমরা বাধ্য হয়ে আন্দোলনে যাবো।

শ্রমিকরা আরও বলেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতার নাম ভাঙ্গিয়ে মালিক পক্ষ মাসের পর মাস বেতন না দিয়ে উল্টো আমাদেরকে আরও হুমকি দেয় তারা মামলা দিবে বলে।

জানা গেছে, এই সুযোগটাকে কাজে লাগিয়ে শ্রমিকদের নিয়ে আন্দোলন করার কথা বলছেন অনেকেই। আশুলিয়ার জামগড়ার বাঘবাড়ি রোডে অবস্থিত “বাঁধন নামের উক্ত পোশাক কারখানা” এ বছরের শুরু থেকেই শ্রমিকদের বেতন দেয়া নিয়ে অনিয়ম করে আসছেন মালিকপক্ষ। শ্রমিকরা জানান, তারা বাসা ভাড়া সময়মত না দিতে পারায়- বাসার মালিক তাদেরকে বাসা থেকে বেড় করে দিচ্ছেন, অপমান করছেন। মুদি দোকানদারকে বাঁকি টাকা না দিতে পারায় খরচ বন্ধ, খরচ আর বাকিতে দিচ্ছেন না। অনেক শ্রমিক সারাদিনে এক বেলা খেয়ে ও না খেয়ে, অনাহারে অর্ধাহারে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। এ অবস্থাতে আসন্ন ঈদের সামনে শ্রমিকরা তাদের সংশ্লিষ্ট পোশাক কারখানার মালিকের কাছে বেতন বোনাস দ্রুত পরিশোধ করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন।

শ্রমিকরা বলেন, আমরা আন্দোলন করতে চাই না, আন্দোলন করলে সরকারের বদনাম হবে।

জানা গেছে, এই পোশাক কারখানার মালিকপক্ষ সরকারি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে প্রায় প্রতি মাসেই শ্রমিকদের পাওনা বেতন দেয়া নিয়ে তালবাহানা করে থাকেন। শ্রমিকরা কোন প্রতিবাদ করলে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দেয়ার হুমকি দিয়ে থাকেন। এর কারণে এক শ্রেণির শ্রমিক নেতা কৌশলে শ্রমিকদের ফুসলিয়ে হাত করে আন্দোলনের চেষ্টা করছে।

উল্লেখ্য গত ২০ জুলাই, শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক সমাবেসে সিপিবির সহযোগী শ্রমিক সংগঠনটির পক্ষ থেকে এক হুঁশিয়ারি দেয়া হয়। এ সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জলি তালুকদার পোশাক কারখানার মালিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনাদের অত্যাচার, জুলুম, হামলা, মামলা, হুলিয়াসহ কোনকিছুতেই আমরা তোয়াক্কা করব না। তিনি বলেন, ঈদের পরে শক্তিশালী শ্রমিক আন্দোলন হবে। যে আন্দোলন ২০০৬, ২০১০ ও ২০১৩ সালকে ছাড়িয়ে যাবে বলে তিনি জানান। “মালিক পক্ষ থেকে ন্যুনতম মজুরি ৬ হাজার ৩০০ টাকা নির্ধারণের প্রস্তাবের কথা উল্লেখ করে জলি বলেন, “আমরা যদি মাঠে না নামি,আন্দোলন না করি তা না হলে শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি পাবে না। উক্ত সংগঠনের সভাপতি অ্যাডভোকেট মন্টু ঘোষ বলেন, সকলের কাছে শ্রমিক শ্রেণির দোহাই দিয়ে বলছি-এখন থেকে প্রতিটি শ্রমিককে বলতে হবে ১৬ হাজার টাকা মজুরি না নিয়ে আমরা কেউ ঘুমাবো না, কেউ আর চুপ থাকবো না। ওই দিন শ্রমিকরা সমাবেশ শেষে প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে একটি মিছিল বের করে তারা সুপ্রিম কোর্টের কদম ফোয়ারা ঘুরে পল্টন মোড় হয়ে সিপিবি কার্যালয়ের সামনে গিয়ে সমাবেশ শেষ করেন।

উক্ত আশুলিয়ার জামগড়া এলাকার “বাঁধন পোশাক কারখানার বিষয়ে “ জাগো বাংলাদেশ গামেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন এর আশুলিয়া শাখার সভাপতি আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, এ কারখানায় প্রায় চার শতাধিক শ্রমিক রয়েছে, তাদের মালিক পক্ষ শ্রমিকদের দুই মাসের বকেয়া বেতন ও ঈদ বোনাস না দিয়ে কারখানাটি বন্ধ ঘোষণা করেছেন। তিনি বলেন, আমি অনেক শ্রমিকদের নেতা, তাই মালিক পক্ষের সাথে আলোচনা করে গত জুন মাসের বেতন ৩০ জুলাই দিবেন বলে মালিক পক্ষ জানায়, আবার ৩০ জুলাই বেতন না দিয়ে রাতের অন্ধকারে নোটিশ দিয়েছে আগামী ১৬ আগস্ট বেতন দেয়া হবে। তিনি বলেন, শ্রমিকদের সাথে কোনো প্রকার আলোচনা না করেই মালিক পক্ষ এসব করেছেন। কিন্তু প্রশ্নঃ কোন খুঁটির জোড়ে এমন করছেন মালিক পক্ষ? এ বিষয়ে আমরা আশুলিয়ার সকল শ্রমিক ঐক্যবদ্ধভাবে জানতে চাই। এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করছি সবাই।

এ ব্যাপারে শিল্প পুলিশের এ এস পি জানে আলম বলেন, এই বাঁধন শিল্প কারখানার শ্রমিকরা দুই মাসের বকেয়া বেতন ও ঈদ বোনাস এর জান্য মিছিল করেছেন। আমরা জনগণের নিরাপত্তায় কাজ করছি। এখানে কোনো হড্ডগোল হয়নি। শ্রমিকরা শান্তিপূর্ণ ভাবে আলোচনা করে বাসায় চলে গেছেন বলে তিনি জানান।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে “বাঁধন পোশাক কারখানার এডমিন আকতার হোসেন বলেন, কারখানায় বিদ্যুৎ এর সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এই কারণে কারখানাটি বন্ধ আছে। আর শ্রমিকদের পাওানা বেতন দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি ঘুমে ছিলাম, এখন আরও ঘুমাবো। এ বিষয়ে জামগড়া জোন বিদ্যুৎ অফিসের কর্মকর্তা আব্দুল হান্নান বলেন, বাঁধন পোশাক কারখানার বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকার কারণে সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। বিল পরিশোধ করলে আমরা ওই সংযোকটি চালু করে দিবো।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © banglarprotidin.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazarbanglaro4451