অনলাইন ডেস্কঃ
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভুল তথ্য দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল হক নূর।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে কোটা সংস্কারের প্রজ্ঞাপন জারির দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) এক বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করা হয়। মিছিলটির পরে আয়োজিত সমাবেশে নুরুল হক নূর এ অভিযোগ করেন।
‘আমাদের কথা শুনুন’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অনুরোধ জানিয়ে নুরুল হক নূর বলেন, ‘কোটা সংস্কার নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে ভুল তথ্য দেওয়া হচ্ছে। তাই আমরা প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করব, ছাত্র প্রতিনিধিদের নিয়ে আপনি বসুন। আমাদের কথা শুনুন। কেননা, আপনি এর আগে বলেছেন, গণভবন সবার জন্য উন্মুক্ত। আমরা আমাদের যৌক্তিক দাবি সুন্দরভাবে উপস্থাপন করতে চাই। আমাদের দাবি ও আন্দোলনকে নিয়ে আপনার কাছে ভুল তথ্য দেওয়া হচ্ছে।’
‘দয়া করে রাজনৈতিক ট্যাগ দেবেন না’
কোটা সংস্কার প্রজ্ঞাপনের কমিটি প্রসঙ্গে নূর বলেন,‘কোটা সংস্কার করতে ১৫ দিনের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। যেটা পরবর্তী সময়ে ৯০ দিন বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু ৯০ দিন যেতে না যেতেই নির্বাচন চলে আসবে। তখন আর কোটা সংস্কার হবে না। আমরা কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত নই। সারা বাংলার ছাত্রসমাজ এই আন্দোলনে জড়িত। দয়া করে কেউ আমাদের রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত বলে ট্যাগ দেবেন না।’
‘দোষ পেলে উন্মোচন করত, ধর্ষণের হুমকি কেন?’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য প্রসঙ্গে নুরুল হক নূর বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের বলেছেন, শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় ছাত্রলীগের কেউ জড়িত নয়। আমরা বলি, ছাত্রলীগের কিছু সন্ত্রাসী আমাদের ওপর হামলা করেছে। যেসব সন্ত্রাসী হামলা করেছে, তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। শান্তিপূর্ণ আন্দোলন ছিল, আন্দোলনে আমাদের বিন্দুমাত্র যদি দোষ পেত, তাহলে সেটা জাতির সামনে উন্মোচন করত। কেন আমাদের ধর্ষণের হুমকি দেওয়া হবে? আমার বাবার তুল্য শিক্ষকদের দিকে ওই কুকুরেরা আঙুল উঁচিয়ে কেন কথা বলে?’ এ সময় তিনি অতি শিগগিরই কোটা সংস্কার ও প্রজ্ঞাপন জারির দাবি জানান। তা না হলে আন্দোলন অব্যাহত থাকবে বলেও ঘোষণা দেন তিনি।
এ সময় আন্দোলনকারীরা তিন দফা দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হলো কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর বর্বর হামলাকারী সন্ত্রাসী, ছাত্রী ও শিক্ষক লাঞ্ছনাকারীদের বিচার, গ্রেপ্তারকৃত নিরপরাধ শিক্ষার্থীদের মুক্তি এবং পাঁচ দফা আলোকে কোটা সংস্কারের সংস্কারের প্রজ্ঞাপন।
এর আগে যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল হক নূরের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল বের করে আন্দোলনকারীরা। মিছিলে ঢাবির প্রায় আটশ শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে বলে জানা যায়। মিছিলটি কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি থেকে শুরু করে কলাভবন, ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ, সিনেট ভবন, ভিসি চত্বর, টিএসসি, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, সায়েন্স লাইব্রেরি এবং কার্জন হল ঘুরে টিএসসির রাজু ভাস্কর্যে এসে শেষ হয়।