অনলাইন ডেস্কঃ
ঢাকায় বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় দোষীদের বিচার ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে রাজধানীর বাইরে বিভিন্ন স্থানে আজ শনিবারও বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থীরা। তারা বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে দ্রুত ৯ দফা দাবি বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছে।
খুলনার শিববাড়ী এলাকায় পুলিশ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বাধার মুখে শিক্ষার্থীরা আজ কোনো কর্মসূচি পালন করতে পারেনি। ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। তবে সাতক্ষীরায় শিক্ষার্থীদের মিছিল ও মানববন্ধন কর্মসূচির সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেছেন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক সাদিকুর রহমান। কিশোরগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সামা মোহাম্মদ ইকবাল হায়াত শিক্ষার্থীদের হাতে ফুল ও চকলেট দিয়ে যৌক্তিক দাবির সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে তাদেরকে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন শেষে শ্রেণিকক্ষে ফেরার আহ্বান জানিয়েছেন।
ঢাকার বাইরে আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর।
কিশোরগঞ্জ : নিরাপদ সড়কের দাবিতে কিশোরগঞ্জে আজও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছে শিক্ষার্থীরা। জেলা শহরের কালীবাড়ী মোড় এলাকায় বেলা সাড়ে ১১টায় জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে স্কুলড্রেস পরিধান করে তারা মানববন্ধন কর্মসূচি শুরু করে। শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন ধরনের ব্যানার, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে ব্রিজের দুই পাশে দাঁড়িয়ে শান্তিপূর্ণভাবে মানববন্ধন করে। এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে’ এ ধরনের স্লোগান দেয়।
মানববন্ধন শেষে শিক্ষার্থীরা আখড়া বাজার মোড় ও কালীবাড়ী মোড়ে বিভিন্ন যানবাহনের কাগজপত্র ও চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষা করে।
মানববন্ধন চলাকালে কিশোরগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সামা মোহাম্মদ ইকবাল হায়াত শিক্ষার্থীদের হাতে ফুল ও চকলেট দিয়ে যৌক্তিক দাবির সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করেন এবং তাদেরকে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন শেষে শ্রেণিকক্ষে ফেরার আহ্বান জানান।
শিক্ষার্থীরা জানায়, তারা নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলন করছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চলবে।
খুলনা : পুলিশ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বাধার মুখে খুলনার শিববাড়ী এলাকায় শিক্ষার্থীরা আজ কোনো কর্মসূচি পালন করতে পারেনি। সকাল থেকে নগরীর শিববাড়ী মোড় এলাকায় পুলিশ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা অবস্থান নেয়। দুপুর ১২টার পর কিছু শিক্ষার্থী শিববাড়ী প্রবেশের চেষ্টা করলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা মারধর করে বলে অভিযোগ রয়েছে।
পরে শিক্ষার্থীরা সোনাডাঙ্গা সোলার পার্কে গিয়ে জড়ো হয়। দুপুর ১টার দিকে শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে সোনাডাঙ্গায় মজিদ সরণি দিয়ে শিববাড়ী মোড় এলাকায় আসার চেষ্টা করে। এই সময় পুলিশের একটি গাড়ি মিছিলের সামনে আড়াআড়ি রেখে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। পরে সেখানে সোনাডাঙ্গা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বুলু বিশ্বাস এসে তাদের মিছিল করা থেকে নিবৃত্ত করে বাসায় ফিরে যেতে বাধ্য করে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া : আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে এবং ৯ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থীরা। আজ শনিবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ প্রাঙ্গণ থেকে শিক্ষার্থীরা মিছিল বের করার চেষ্টা করলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বাধা দেন।
শিক্ষার্থীরা কলেজের ফটক আটকে দেয়। পরে তারা বাধা উপেক্ষা করে শহরের প্রধান সড়কে মিছিল করে। এতে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়। শিক্ষার্থীরা দ্রুত ৯ দফা দাবি বাস্তবায়নের জন্য এবং শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করে বিচারের দাবি জানায় সরকারের কাছে।
নারায়ণগঞ্জ : নিরাপদ সড়কের দাবিতে নারায়ণগঞ্জে মহাসড়কসহ বিভিন্ন পয়েন্টে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে শিক্ষার্থীরা। সড়কে সুশৃঙ্খল বজায় রাখতে রিকশা ও অন্যান্য যানবাহন চলাচলে আলাদা লেন করে দিচ্ছে তারা। চালকদের লাইসেন্স ও যানবাহনের কাগজপত্র ঠিক আছে কি না তাও পরীক্ষা করছে শিক্ষার্থীরা।
অন্যদিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কসহ নারায়ণগঞ্জের অভ্যন্তরীণ সড়কে যাত্রীবাহী বাস চলাচল বন্ধ রেখেছে মালিক ও শ্রমিক সংগঠনগুলো।
নারায়ণগঞ্জ বাস মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি মোক্তার হোসেন জানান, নিরাপত্তার আশঙ্কায় ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ, ঢাকা-মুন্সীগঞ্জ সড়ক ও মহাসড়কে যাত্রীবাহী বাস সার্ভিস বন্ধ রাখা হয়েছে।
বৃষ্টি মাথায় নিয়ে আজ সকাল ১০টায় নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়া বিজয় স্তম্ভ চত্বর, প্রেসক্লাব চত্বর, দুই নম্বর গেট, ডিআইটি, খানপুর মেট্টো সিনেমা চত্বর, ৩০০ শয্যা হাসপাতাল এলাকা, লিংক রোডের সাইনবোর্ড এলাকা, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাড়কের মৌচাক, সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল ও মদনপুর চৌরাস্তাসহ ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে রূপগঞ্জের ভুলতাসহ কয়েকটি পয়েন্টে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ চলতে দেখা গেছে। এ ছাড়া পোস্টার ও প্ল্যাকার্ড হাতে চাষাঢ়া বিজয় স্তম্ভ চত্বরে মানববন্ধন ও নগরীতে দফায় দফায় মিছিল করতে দেখা গেছে শিক্ষার্থীদের।
ঢাকা: নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানের পদত্যাগ ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছে শিক্ষার্থীরা। আজ দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার থেকে মিছিল বের করে শিক্ষার্থীরা। পরে মিছিলটি ঢাকা- আরিচা মহাসড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রান্তিক গেটে গিয়ে শেষ হয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানের পদত্যাগ দাবি করে ও সরকারের কাছে নিরাপদ সড়কের দাবি জানায়।
অন্যদিকে সকালে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সাভার বাজার বাসস্ট্যান্ড, রেডিওকলোনি, নবীনগর, জিরাবো মহাসড়ক অবরোধ করার চেষ্টা করে শিক্ষার্থীরা। পরে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে শিক্ষার্থীদের মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দেয়।
এদিকে আজও ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক ও বাইপাইল-আব্দুল্লাহপুর মহাসড়কে পরিবহন সংকট দেখা দিয়েছে। বাসযাত্রীরা পড়েছে চরম দুর্ভোগে। কেউ কেউ ঝুকিপূর্ণভাবে লেগুনা ও ট্রাকে করে চলাচল করছে। বাস যাত্রীদের গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়া। এ ছাড়া মহাসড়কে যেগুলো গাড়ি চলছে তাদের লাইন্সেস আছে কি না, তা পরীক্ষা করছে শিক্ষার্থীরা ।
নাটোর : আজও নাটোরে আন্দোলন করছে শিক্ষার্থীরা। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে নাটোর প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান নেয়। পরে নিরাপদ সড়কের দাবিতে সেখানে মানববন্ধন করে তারা। মানববন্ধন শেষে শিক্ষার্থীরা পুনরায় মিছিল নিয়ে মাদ্রাসা মোড় তিন রাস্তায় অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে। এ সময় শিক্ষার্থীরা যানবাহনের কাগজপত্র পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে থাকে।
পরে সদর আসনে আওয়ামী লীগদলীয় সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুল সেখানে উপস্থিত হয়ে ছাত্রদের দাবি পূরণ হয়েছে জানিয়ে ক্লাসে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানান। এরপরও শিক্ষার্থীরা বেশ কিছু সময় ওই এলাকায় অবস্থান নিয়ে যানবাহনের কাগজপত্র পরীক্ষা করে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ : নিরাপদ সড়কের দাবিতে আজ চাঁপাইনবাবগঞ্জে সোনামসজিদ মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা। সকাল থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের বিশ্বরোড মোড়ে নিরাপদ সড়কের দাবিতে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অবস্থান নেওয়া শুরু করে। এ সময় তারা নিরাপদ সড়কের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেওয়ার পাশাপাশি যানবহনের কাগজপত্র যাচাই করে। মহাসড়কে শিক্ষার্থীদের অবস্থানের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের সড়ক থেকে সড়ে যাওয়ার আহ্বান জানালেও শিক্ষার্থীরা তা প্রত্যাখান করে।
দুপুরে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের শান্ত করলে তারা অদক্ষ চালকদের আইনের আওতায় আনা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাকে লাইসেন্স প্রদানসহ চার দফা দাবি উত্থাপন করে অবস্থান কর্মসূচি শেষ করে।
সাতক্ষীরা : ‘নিরাপদ সড়ক চাই, ঘাতক চালকদের ফাঁসি চাই’ স্লোগান দিয়ে মিছিল ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে সাতক্ষীরার শিক্ষার্থীরা। তারা বলেছে, সড়কে আর কোনো মৃত্যু দেখতে চাই না। সড়কে বেপরোয়া গাড়ি চালানোও দেখতে চাই না।
আজ শনিবার সকালে সাতক্ষীরার নিউমার্কেট চত্বর ও সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে দুই দফায় অনুষ্ঠিত হয় এই মানববন্ধন। এর আগে শিক্ষার্থীরা শহরজুড়ে বিক্ষোভ মিছিল করে। তারা স্লোগান দিয়ে বলে, সড়কে ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলবে না, গাড়িতে অতিরিক্ত যাত্রী নেওয়া চলবে না, দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকার সড়কে স্পিডব্রেকার দিতে হবে, সারা দেশে শিক্ষার্থীদের হাফ ভাড়ায় বহন করতে হবে বলেও দাবি জানায় তারা।
শিক্ষার্থীদের মিছিল ও মানববন্ধন কর্মসূচির সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক সাদিকুর রহমান। এ সময় ‘প্রধানমন্ত্রী ছাত্রদের ন্যায়সঙ্গত সব দাবি মেনে নিয়েছেন’ জানিয়ে সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইফতেখার হোসেন ও পুলিশ সুপার সাজ্জাদুর রহমান ছাত্রছাত্রীদের পড়ার টেবিলে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানান। মিছিলে ক্লান্ত ও ঘর্মাক্ত শিক্ষার্থীদের পানি খাওয়ান তাঁরা।
সুনামগঞ্জ : সকাল থেকে সুনামগঞ্জ শহরের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের হাজারো শিক্ষার্থী সড়কে অবস্থান নিয়েছে। তারা বিভিন্ন যানবাহন, মোটরসাইকেল ও পুলিশের গাড়ির লাইসেন্স দেখতে চেয়েছে। প্রচণ্ড গরম উপেক্ষা করে শিক্ষার্থীরা প্রায় তিন ঘণ্টা সড়কে অবস্থান নেয়।
সকাল সাড়ে ১০টায় সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা কলেজ থেকে মিছিল নিয়ে আলফাত উদ্দিন স্কয়ারে জড়ো হয়। পরে তাদের সঙ্গে শহরের সুনামগঞ্জ মহিলা কলেজ, পৌর কলেজ, নর্থ সাউথ কলেজ, সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয়, সরকারি এসসি উচ্চ বিদ্যালয়, এইচএমপি উচ্চ বিদ্যালয়, বুলচান্দ উচ্চ বিদ্যালয়সহ শহরের সবকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়ে পুরাতন বাসস্টেশন সড়কে অবস্থান নেয়। পরে শিক্ষার্থীরা বেলা ১২টার দিকে হোসেন বখত চত্বরে গিয়ে অবস্থান নেয়। সেখানে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা বক্তব্য দেয়। তারা প্রতিবাদী গান ও কবিতা আবৃত্তি করে। একই সময়ে শিক্ষার্থীরা ট্রাফিক পয়েন্ট, কালিবাড়ী মোড়ে অবস্থান নেয়।
এদিকে সকাল থেকে শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
দুপুর দেড়টায় শিক্ষার্থীরা অবস্থান কর্মসূচি শেষ করে। পরের কর্মসূচি কী হবে জানতে চাইলে সাধারণ শিক্ষার্থী জানায়, ঢাকা থেকে যে সিদ্ধান্ত আসবে, তা দেখে পরবর্তী কর্মসূচি পালন করা হবে।
ফরিদপুর : নিরাপদ সড়ক ও ৯ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আজও ফরিদপুরের বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করেছে শহরে। এ উপলক্ষে আজ সকাল সাড়ে ১০টায় ছাত্র সমাজের উদ্যোগে ফরিদপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সামনে গিয়ে শেষ হয়। এ সময় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়।
পরে প্রেসক্লাবের সামনে ছাত্র সমাজের উদ্যোগে সংক্ষিপ্ত এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বক্তারা অবিলম্বে নিরাপদ সড়ক এবং ৯ দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
জয়পুরহাট : নিরাপদ সড়কের দাবিতে আজ জয়পুরহাটেও বিক্ষোভ করেছে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। বেলা ১১টায় জয়পুরহাট সরকারি কলেজ থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে শহরের প্রধান সড়কে যায়। এ সময় শহরের অন্যান্য স্কুল ও কলেজেরে শিক্ষার্থীরা তাদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে মিছিলে যোগ দেয়। এরপর শিক্ষার্থীদের মিছিলটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
এ ছাড়া দুপুরে শিক্ষার্থীরা জয়পুরহাট রামদেও বাজলা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে জয়পুরহাট সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে বিভিন্ন যানবাহনের চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স ও কাগজপত্র পরীক্ষা করে পুলিশকে সহযোগিতা করে।
গত ২৯ জুলাই রাজধানীর কুর্মিটোলার বিমানবন্দর সড়কে জাবালে নূর পরিবহনের বাসের চাপায় দুই কলেজ শিক্ষার্থী নিহত হয়। এ ছাড়া আহত হয় বেশ কয়েকজন। নিহত শিক্ষার্থীরা হলো শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের একাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী দিয়া খানম মিম ও দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র আবদুল করিম রাজীব। এরপর থেকে শিক্ষার্থীরা ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে রাস্তায় অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছে। তারা যানবাহন ও চালকের লাইসেন্স তল্লাশি করছে।
সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময় শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিহতদের প্রত্যেক পরিবারকে এরই মধ্যে ২০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র দিয়েছেন। নৌমন্ত্রী শাজাহান খানও প্রত্যেক পরিবারকে পাঁচ লাখ টাকা দিয়েছেন।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা নয়টি দাবি করেছে। তাদের সব দাবি মেনে নেওয়ার কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালও বলেছেন, শিক্ষার্থীদের সব দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে। এখন তাদের ক্লাসে ফিরে যাওয়ার উচিত বলে জানান তিনি।
এরই মধ্যে গণপরিবহন মালিক-শ্রমিক সমিতির নেতারা বলেছেন, নিরাপদ বোধ না করা পর্যন্ত তারা রাস্তায় বাস নামাবেন না। ফলে অঘোষিত ধর্মঘট চলছে। গতকাল থেকেই আন্তজেলা বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।