ফরিদ আহমেদ রুবেল, চট্টগ্রাম:
জনপ্রিয় ব্যান্ড সংগীতের কিংবদন্তি শিল্পী আইয়ুব বাচ্চুর তৃতীয় এবং শেষ জানাজা অনুষ্ঠিত হয় তার জন্মস্থান চট্টগ্রামে। নগরীর দামপাড়াস্থ জামিয়াতুল ফালাহ মসজিদ ময়দানে বাদ আসর ৪টা ৩৫মিনিট জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ইমামতি করেন জমিয়াতুল ফালাহ মসজিদের খতিব অধ্যক্ষ মাওলানা সৈয়দ আবু তালেব মোঃ আলাউদ্দিন।
জানাজায় উপস্থিত ছিলেন আইয়ুব বাচ্চুর পিতা মোহাম্মদ ইছহাক, ছেলে আহনাফ তাজওয়ার সহ পরীবারের অনেকেই সেই সাথে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার আব্দুল মান্নান, পুলিশ কমিশনার মাহবুবুর রহমান, নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, সিডিএ চেয়ারম্যান আবদুস ছালাম, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, নগর যুবলীগের আহবায়ক মহিউদ্দিন বাচ্চু, নগর ছাত্রলীগের সভাপতি ইমরান আহমেদ ইমু ও ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীর, নগর বিএনপির সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন, সামাজিক সংগঠন স্মার্ট হার্টসে্র সাধারন সম্পাদক আহমেদ ফরিদ রুবেল, ক্লাব একুশের আহবায়ক বেলাল উদ্দীন জুয়েল সহ নগরীর এবং জেলার অনেক রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্ব ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
অসংখ্য ভক্তানুরাগীর অংশগ্রহণে পুরো জমিয়াতুল ফালাহ মসজিদ ময়দান জনসমুদ্রে পরিণত হয়। মাঠ ছাড়িয়ে পাশের সড়কেও সাধারণ মানুষ অবস্থান নেন। আশপাশের বিভিন্ন ভবনের উপরে জড়ো হন নারী ও শিশুরা। বিপুল সংখ্যক মানুষের ঢল সামলাতে হিমশিম খেতে হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের।
এর আগে চসিক মেয়রের আ জ ম নাছিরউদ্দিনের অনুরোধে চট্টলার সর্বস্তরের জনগনের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য তার মরদেহ দুপুর ২.৩০ মিনিটে রাখা হয় জামিয়াতুল ফালাহ্ প্রাঙ্গনে, তখন থেকেই মানুষ জড় হতে শুরু করেন।
জানাজা শেষে আইয়ুব বাচ্চুর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয়েছে নগরীর চৈতন্যগলির বাইশ মহল্লা কবরস্থানে। যেখানে মায়ের পাশেই সমাহিত করা হয় তাকে। সেখানে উপস্থিত ছিলো পরিবার ও নিকটআত্বীয়দের অনেকেই।
ভক্তদের অশ্রুশিক্ত চোখে ছিলো যেন হাহাকার। প্রিয় এই গুনী শিল্পী বিয়োগে অনেকেই আবেগ ধরে রাখতে না পেরে চিৎকার করে কেঁদে উঠেন। কথা হয় খুদে এক ভক্ত আবদুল্লাহ্ মিনহারের সাথে, বৃহস্পতিবার যখন শুনতে পাই আইয়ুব বাচ্চু আর নেই, সেই থেকে আজ পর্যন্ত সে কোন কিছুই খাইনি। ছলছল চোখে যেন ভালোবাসার কোন কমতি নেই। স্মার্ট হার্টসে্র উপদেষ্টা মহিউদ্দীন তুর্য বাংলার প্রতিদিনকে বলেন, এমন একজন গুনীকে আমরা হারিয়েছে তা কোন মূল্যেই পূরন করা সম্ভব নয়, তার গাওয়া এবং রচিত সকল গানের মধ্যে বেঁচে থাকবেন আমাদের কাছে অনন্তকাল। একজন মেয়ে ভক্ত রুবানা মালিহা বলেন, তিনি শুধু শিল্পী নন তিনি ছিলেন বাংলাদেশের একটি অন্যতম সম্পদ, এই সম্পদ বিয়োগে বাংলাদেশের একটি অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেল।
গুনী এই শিল্পী মৃত্যুকালে তার স্ত্রী, দুই সন্তানসহ রেখে গেছেন অনেক আত্বীয়স্বজন ও বড় একটি ভক্তকূল। গত ১৮ই অক্টোবর বৃহস্পতিবার সকাল ৯.৫৫ মিনিটে মাত্র ৫৬ বছর বয়সে ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে মারা যান। তার আকস্মিক মৃত্যুতে সারা দেশে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। গুনী এই শিল্পী ছিলেন একাধারে গায়ক, গিটারিস্ট, গীতিকার, সুরকার, প্লেব্যাক শিল্পী। এলআরবি ব্যান্ড দলের লিড গিটারিস্ট তিনি। তিনি ১৯৬২ সালের ১৬ আগস্ট চট্টগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।