জাকির হোসেন, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি ঃ ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈলে শাপলা হত্যা মামলার আসামীরা গ্রেফতারের পরিবর্তে উল্টো মামলা তুলে নিতে বাদীকে প্রান নাশের হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে পুলিশ বলছে, আসামীরা পলাতক থাকায় গ্রেফতার করা সম্ভব হচ্ছে না।
ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ পৌর শহরের জগথা ষ্টেশন পাড়ার চা দোকানদার আব্দুল মজিদ ভুঁইয়ার অভিযোগ,
২০০৮ সালে তার কন্যা শাপলা আকতারের সাথে পাশ্ববর্তী রাণীশংকৈল উপজেলার গোগর ঝাড়বাড়ী গ্রামের আঃ রহিম ওরফে পালনু’র ছেলে হাসান আলীর বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন পর হাসান আলী ঢাকায় চলে যায় এবং তার পরিবারের দেখা শুনার দায়িত্ব দেন তারই ঘনিষ্ট বন্ধু প্রতিবেশী জনৈক বেলাল হোসেনকে। দেখ ভালের সুযোগে বেলাল হোসেনের লোলুপ দৃষ্টি পরে শাপলা’র উপর। চেষ্টা চালায় অবৈধ সম্পর্ক স্থাপনের। বহুবার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয় বেলাল। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ২০১৬ সালের ১৩ আগষ্ট শাপলাকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করে বেলাল সহ তার বাড়ির লোকজন। এরপর শাপলা আত্মহত্যা করেছে বলে অপপ্রচার চালায় তারা। লোক দেখানো ভাবে মৃত শাপলাকে রানীশংকৈল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় শাপলার পিতা মজিদ থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ হত্যা মামলা না নিয়ে অজ্ঞাত কারণে অপমৃত্যু মামলা রুজু করেন। পুলিশ হত্যা মামলা না নেওয়ায় পরে ২০১৬ সালের ২৪ নভেম্বর ঠাকুরগাঁও আদালতে বেলাল সহ ৮ জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন শাপলার পিতা আব্দুল মজিদ ভূঁইয়া। পরে শাপলাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে মর্মে ভিসেরা রিপোর্ট আসলে পুলিশ বেলালকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠায়। কিছুদিন পরেই জেল থেকে জামিনে মুক্তি পায় বেলাল। এরপর মামলা তুলে নিতে বাদীকে নানা ভাবে চাপ দেয় সে এবং মামলার অন্যান্য আসামীরা। এতে বাদী রাজি না হলে তাকে প্রানে মেরে ফেলার হুমকি দেয় আসামীরা। এরপর পুলিশ মামলার অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারের উদ্যোগ নিলে উপর মহল থেকে চাপ আসে স্থানীয় থানা পুলিশের উপর। এতে ভাটা পড়ে তদন্ত কার্যক্রম। পরে মামলাটি সিআইডি’র কাছে হস্তান্তর করা হয়। বাদীর অভিযোগ প্রায় ৬ সাম আগে সিআইডি’র লোকজন মামলার বাদীকে সাথে নিয়ে আসামীদের ধরতে গেলে আসামীরা পুলিশের উপস্থিতিতে মামলার বাদীকে ঘিড়ে ফেলে। চেষ্টা করে প্রাণে মেরে ফেলার। পরে পুলিশ বাদীকে উদ্ধার করে বাড়ির কাছা কাছি পর্যন্ত পৌছে দেন। কথা দেয় এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিবে। এরপর আর খবর নেই। কেটে যায় মাসের পর মাস। ব্যবস্থা নেওয়া তো দুরের কথা পুলিশের আশকারা পেয়ে আসামীর আরো বে-পরোয়া হয়ে উঠেছে। বাদীকে হুমকি দিচ্ছে মামলা তুলে নেওয়ার। প্রান ভয়ে এখন রাতে বাড়িতে থাকতে সাহস পাচ্ছে না বাদী সহ তার পরিবারের লোকজন। প্রান ভয়ে রাতে পালিয়ে যেখানে সেখানে রাত্রী যাপন করতে হচ্ছে বাদী ও তার পরিবারের লোকজকে। এ অবস্থায় পুলিশ বলছেন, “আসামীরা কোথায় আছে, তাদের আটক করে আমাদের খবর দেন। ধরে আনব”। যেখানে বাদীর জীবন বাঁচে না সেখানে পুলিশ বলছেন এমন কখা। এ অবস্থায় কি করবেন, ভেবে পাচ্ছেন না মজিদ ভুঁইয়া। মামলার এজাহার নামীয় আসামী বেলাল জামিনে থাকলেও অন্যরা এখনো রয়েছেন ধরা ছোয়ার বাইরে। তারা আদালত থেকে জামিনও নেননি। গ্রেফতারও হচ্ছে না। অথচ বাদীকে হুমকি অব্যহত রেখেছে। একটি সুত্র জানায়, মামলার আসামীদের সাথে উপর মহলের লোকজনের যোগাযোগ থাকায় তারা দাপটের সাথে চলছেন। পুলিশ পেরে উঠছে না তাদের সাথে। এ অবস্থায় প্রশাসনের উচ্চ মহলের হস্তক্ষেপ চান মামলার অসহায় বাদী আব্দুল মজিদ।
এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা সিআইডি’র এস.আই ওলিউর রহমান জনান, মামলাটি গভীর তদন্তের সার্থে একটু বিলম্ব হচ্ছে। তাছাড়া আসামীরা পলাতক থাকায় গ্রেফতার করা সম্ভব হচ্ছে না। বাদীকে আসামী আটক করে তাদের খবর দিতে বলার অভিযোগ সত্য নয়।