শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:০০ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
কবে হবে জাতীয় নির্বাচন, জানালেন প্রধান উপদেষ্টা কুমিল্লায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে বাসের ধাক্কা, নিহত ৩ মোরেলগঞ্জে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে প্রশাসনের আয়োজনে ফুটবল টুর্নামেন্ট খেলার উদ্বোধন জাতীয়তাবাদী রেলওয়ে শ্রমিক ও কর্মচারী দলের ৪৪ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন তারেক রহমান দেশে ফিরবেন কখন, যা বললেন মির্জা ফখরুল গুম-খুনে আর জড়াবে না র‍্যাব : মহাপরিচালক শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যক্রম সমর্থন করে না ভারতের মোদি সরকার সোনারগাঁয়ে দুটি চুনা কারখানার অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিছিন্ন পাঁচবিবিতে জনবল সংকট ইউনিয়ন স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রে ক্যারিবিয়ান জয়ের পর তাসকিন-তাইজুল যা বললেন

কুড়িগ্রামের চরাঞ্চলের পলিমাটিতে এখন যেন সোনা চাষাবাদ করছেন কৃষক

বাংলার প্রতিদিন ডেস্ক ::
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১৪ মার্চ, ২০১৯
  • ৩৬৪ বার পড়া হয়েছে

সাইফুর রহমান শামীম,কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি :
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার ঐতিহ্যবাহী খরস্রোতা ধরলা নদীর
বুকে অসংখ্য চর জেগে উঠেছে। এসব চরাঞ্চলের পলিমাটিতে এখন
যেন সোনা চাষাবাদ করছেন কৃষক। আর এভাবে ধীরে ধীরে মানচিত্র
থেকে হারিয়ে যাচ্ছে এ নদীটি।
ধরলা নদীতে ১০-১২ বছর আগেও পানির প্রবাহতা ও প্রাণের স্পন্দন
ছিল লক্ষণীয়। এই নদীর প্রবল স্রোতের কারণে ভয়ে আতঁকে উঠতো
ধরলা পাড়ের বাসিন্দারা।
সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, এ ধরলা নদীতে এখন ছোট-বড়
প্রায় দুই শতাধিক চরের সৃষ্টি হয়ে নদীটি এখন মানচিত্র থেকে
হারিয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। পানির গভীরতা কমে যাওয়ায় মানুষ
পাঁয়ে হেঁটে ধরলার বুক দিয়ে পাড়াপার হচ্ছেন। সেই সুযোগে
ধরলা পাড়ের শতশত কৃষক নদীর বুকে জেগে উঠা চরের পলিমাটিতে
চলতি মৌসুমের ইরি-বোরোর চাষাবাদ করেছেন।
ধরলা পাড়ের কৃষক বাবুল মিয়া, রফিকুল, আজিজুল, আব্দুর রহমান,
জয়নালসহ অনেকেই জানান, এক সময় এই ধরলা নদীই আমাদের ঘর-
বাড়ি ও আবাদি জমিসহ সব কিছুই গিলে নিয়েছে। সেই ধরলা
এখন শুকিয়ে যাচ্ছে। তাই গত চার থেকে পাঁচ বছর ধরে ধরলার বুকে
ইরি-রোবো চাষবাদ করছি। জমিতে পানি দেওয়ার অসুবিধা হলেও
ধরলার বুকে ইরি-বোরো চাষাবাদ ভালোই হচ্ছে। আশা করছি, এ
বছরও ফলন ভালো হবে।
ধরলার চারিদিকে ইরি-বোরোর সবুজ ফসলেই ভরে গেছে ধরলার বুক।
এ যেন এক সবুজের সমারোহ। সমারোহে বিমোহিত হয়ে
অনেকেই ছুটে আসছেন শেখ হাসিনা ধরলা সেতুর পাড়ে।
ধরলা সংলগ্ন বারোমাসিয়া, নীলকমল সহ আশে পাশের সকল নদীর
বুকেও শতশত বিঘা জমিতে কৃষকরা কয়েক বছর ধরে ইরি-বোরো
চাষবাদ করে আসছেন। বছরে মাত্র একবার ধরলার বুকে চাষাবাদ করে
সাময়িকভাবে তাদের মাঝে স্বস্তি ফিরে আসলেও নদীতে নাব্যতা
সংকট দেখা দিয়েছে। এতে ইঞ্জিন চালিত নৌকা বা ডিঙ্গি
নৌকা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহকারী পরিবারগুলো কঠিন
দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। এছাড়াও তীরবর্তী পরিবারগুলো এক সময়
ধরলায় মাছ শিকার করে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করতো। তারাও এখন

দীর্ঘদিনের পেশা হারিয়ে কেউবা দিনমজুর, কেউবা বাড়িঘর
ছাড়া, আবার কেউ বেকার জীবন-যাপন করছেন।
বিশেষ করে অসংখ্য চরাঞ্চল সৃষ্টি করে এক সময়কার খরস্রোতা
ধরলাটি মরা খালে পরিণত হয়েছে। এতে সেখানকার মানুষ জন ও জীব
বৈচিত্রের জীবন- যাপন দুর্বিসহ হয়ে পড়েছে।
অন্যদিকে ধরলার বুকে অসংখ্য চর জেগে ওঠায় নদীর গভীরতা কমে
গেছে। ফলে বর্ষা মৌসুমে সামান্য বৃষ্টিতেই ফুলবাড়ী
উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। অপর দিকে শুস্ককো
মৌসুমে ধরলার পানি শুকিয়ে যাওয়ায় বিনষ্ট হচ্ছে প্রাকৃতিক
বৈচিত্র। ফলে অপূরণীয় ক্ষতি হচ্ছে পরিবেশের। এতে স্বচ্ছ ও সুপেয়
পানির অভাবে এ এলাকার মানুষের পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত
হওয়ার আশংকা দিনদিন ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেই সাথে
প্রাকৃতিক দুর্যোগও লেগেই রয়েছে। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায়
ধরলা সংলগ্ন বারো মাসিয়া, নীল কমলসহ আশেপাশের সকল নদী গুলো
পুনঃখনন ও ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে ব্রহ্মপুত্র নদের সঙ্গে সংযোগ
স্থাপন করা গেলে নদীটি আবার তার রূপ ফিরে পাবে বলে মনে করছেন
সংশ্লিষ্টরা। সেই সাথে ধরলা পাড়ের হাজারো মানুষের মাঝে
প্রাণচঞ্চলতা ফিরে আসবে বলে মনে করছেন এ অঞ্চলের মানুষ।
ফুলবাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহবুবুর রশিদ জানান, এ
উপজেলায় ইরি-রোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ১১ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমি।
কিন্তু চাষাবাদ হয়েছে ১১ হাজার ৪৫০ হেক্টর। এছাড়াও নদী
অববাহিকার কৃষকরা ১ শত ৭০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ করেছেন।
তবে এটি আমাদের কৃষি অফিসের আবাদি জমির হিসাবের
অর্ন্তভুক্ত নয়।##

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © banglarprotidin.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazarbanglaro4451