অনলাইন ডেক্সঃ
২০১৭ সালের জানুয়ারিতে গুলশান ১-এর ডিএনসিসি মার্কেটে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর অগ্নিনির্বাপণের ব্যাপারে বেশকিছু সুপারিশ করা হয়েছিল, কিন্তু সেসব সুপারিশের একটিও মানা হয়নি বলে অভিযোগ করেছে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স।
আজ শনিবার ভোরে ফের ওই মার্কেটে আগুন লাগার পর প্রায় তিন ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে ফায়ার সার্ভিসের ২০টি ইউনিট। আগুনে মার্কেটের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হলেও কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
সকালে ঘটনাস্থলে থাকা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) মেজর এ কে এম শাকিল নেওয়াজ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এর আগে ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে একই মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের পর মার্কেট কমিটির কাছে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে যেসব সুপারিশ করা হয়েছিল তা বাস্তবায়ন করা হয়নি।’
ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক বলেন, ‘এই মার্কেটের ব্যাপারে আমাদের অনেক নির্দেশনা আছে। এ মার্কেট কমিটিকে তিন থেকে চারবার সাবধানতা নোটিশ দেওয়া হয়েছে। তারপরও তারা শুধরায়নি।’
‘সমিতির সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করেছি। তারপর এই মার্কেটের ব্যাপারে আমাদের অবজেকশন আছে। এটা নিয়ে রিট চলছে’, যোগ করেন ফায়ার সার্ভিসের এই পরিচালক।
বনানীর এফ আর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের রেশ কাটতে না কাটতেই আজ ভোর সাড়ে ৫টার দিকে মার্কেটের কাঁচাবাজার অংশে ওই আগুনের সূত্রপাত হয়। অগ্নিকাণ্ডের কারণ এখনো জানা যায়নি। এর আগে ২০১৭ সালের ৩ জানুয়ারি এই মার্কেটটি অগ্নিকাণ্ডে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।
ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের সদর দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সকালে এনটিভি অনলাইনকে বলেন, খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে ফায়ার সার্ভিস। বর্তমানে ফায়ার সার্ভিসের ২০টি ইউনিট কাজ করছে। সেনা ও নৌ বাহিনীও পরবর্তী সময়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে যোগ দেয়।
‘বর্তমানে আগুন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছে। এটি আর ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা নেই। সকাল ৮টা ২৫ মিনিটের দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে’, যোগ করেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা।
ডিএনসিসি কাঁচা বাজার অংশে মূলত বিভিন্ন মুদি ও খাদ্য সামগ্রীর দোকান রয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। আগুনের ফলে প্রচুর মালামালের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানান তাঁরা।
এদিকে অগ্নিকাণ্ডের খবরে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গেছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম।
২০১৭ সালে অগ্নিকাণ্ডের পর আবারও একই মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটল। এর পেছনে মার্কেট কমিটির কোনো রকম গাফিলতি আছে কি না সে প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মেয়র বলেন, ‘আমরা এখন চেষ্টা করছি যাতে আগুন না ছড়িয়ে যায়। আগুন কন্ট্রোলে আনার চেষ্টা করছি। তারপর আমরা এর পরিপ্রেক্ষিতে কী ধরনের ব্যবস্থা নেব, আবার কেন হলো, এটার পার্মানেন্ট কোনো সল্যুশন করতে পারি কি না- সব বিষয় নিয়ে স্টেপ বাই স্টেপ আমি জানাব আপনাদের।’
এর আগে অগ্নিকাণ্ডের পর এ ধরনের দুর্যোগ এড়াতে ফায়ার সার্ভিস ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে বেশ কিছু সুপারিশ করা হয় মার্কেট কমিটির কাছে। সেগুলো বাস্তবায়ন হয়েছে কি না- সে প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মেয়র বলেন, ‘সে সুপারিশগুলো আমি দেখব। সবার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করেই আমরা ডিসিশন নেব। মার্কেটের সবার সঙ্গে আমরা কালেকটিভ ওয়েতে কিছু করতে চাই।’
এ ব্যাপারে যথাযথ তদন্ত করা হবে বলেও আশ্বস্ত করেন মেয়র আতিকুল ইসলাম।