অনলাইন ডেক্সঃ
রোববার উত্তরপ্রদেশ (১৩), পাঞ্জাব (১৩), পশ্চিমবঙ্গ (৯), বিহার (৮), মধ্যপ্রদেশ (৮), হিমাচল প্রদেশ (৪), ঝাড়খন্ড (৩) ও চণ্ডীগড়ে (১) ভোটের মধ্য দিয়ে সমগ্র ভারতের ভোট গ্রহণ শেষ হবে। তবে তামিলনাড়ু রাজ্যের ভেলোর লোকসভা কেন্দ্রে অর্থ দিয়ে ভোটারদের প্রভাবিত করার অভিযোগ ওঠায় রাষ্ট্রপতির হস্তক্ষেপে সেখানে ভোট বাতিল হয়ে যায়।
শেষ দফায় মোট ভোটারের সংখ্যা ১০ কোটির কিছু বেশি। ভাগ্য নির্ধারণ হবে মোট ৯১৮ প্রার্থীর। এ দফায় অন্যতম নজরকাড়া লোকসভা কেন্দ্র হলো উত্তরপ্রদেশের ‘বারাণসী’। এখানে বিজেপি প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তাঁর বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছেন কংগ্রেসের প্রার্থী অজয় রাই, সমাজবাদী পার্টি ও বহুজন সমাজ পার্টির জোট প্রার্থী হয়েছেন শালিনী যাদব।
এ ছাড়া শেষ দফার ভোটে হেভিওয়েট প্রার্থীদের মধ্যে আছেন বিজেপি প্রার্থী কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ, কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী রাজকুমার সিং, লোকসভার সাবেক স্পিকার কংগ্রেসের মীরা কুমার, কংগ্রেসের প্রার্থী শত্রুঘ্ন সিনহা, বিজেপি প্রার্থী ও কেন্দ্রীয় যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী মনোজ সিনহা। তাঁদের বাইরেও সবার নজর রয়েছে বিজেপির ভোজপুরি অভিনেতা রবি কিষাণ, আপনা দলের প্রার্থী এবং কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী অনুপ্রিয়া সিং প্যাটেল, রাষ্ট্রীয় জনতা দলের (আরজেডি) প্রার্থী মিশা ভারতী (লালু প্রসাদের কন্যা), সাবেক কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী রাষ্ট্রীয় লোক সমতা পার্টির (আরএলএসপি) উপেন্দ্র কুশওয়া, ঝাড়খন্ডের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও ঝাড়খন্ড মুক্তি মোর্চা (জেএমএম) প্রধান শিবু সোরেন, কংগ্রেস প্রার্থী ও সাবেক মন্ত্রী মনীশ তিওয়ারি, কেন্দ্রীয় ন্যায়বিচার ও ক্ষমতায়ন প্রতিমন্ত্রী বিজেপির বিজয় সমপলা, বিজেপি প্রার্থী অভিনেতা সানি দেওল, কেন্দ্রের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ মন্ত্রী বিজেপির হরসিমরাত কউর বাদল, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী (গৃহায়ণ প্রতিমন্ত্রী) বিজেপির হরদীপ পুরি এবং বিজেপির অভিনেত্রী প্রার্থী কিরণ খের।
পশ্চিমবঙ্গে যে নয়টি আসনে এ ধাপে ভোট নেওয়া হবে সেগুলো হলো—কলকাতা দক্ষিণ ও কলকাতা উত্তর, যাদবপুর, দমদম, বারাসাত, বসিরহাট, জয়নগর, মথুরাপুর ও ডায়মন্ড হারবার। এ রাজ্যে মোট ভোটার প্রায় দেড় কোটির কাছাকাছি। নয় কেন্দ্রে মোট প্রার্থী রয়েছেন ১১১ জন। ডায়মন্ড হারবার কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাতিজা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। দমদম কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী সাবেক কেন্দ্রীয় নগরায়ণ প্রতিমন্ত্রী সৌগত রায়, তাঁর বিরুদ্ধে বিজেপির প্রার্থী সাবেক বিধায়ক সমীক ভট্টাচার্য। ১৯৯৮ ও ১৯৯৯ সালে এই কেন্দ্রে বিজেপি জয় পেলেও ২০০৪ সাল থেকে এটি তৃণমূলের দখলে।
নজর থাকবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একসময়ের কেন্দ্র কলকাতা দক্ষিণের দিকেও। এখানে বিজেপির প্রার্থী চন্দ্র কুমার বসু (স্বাধীনতা সংগ্রামী নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর নাতনি), তৃণমূলের প্রার্থী মালা রায়। যাদবপুর কেন্দ্রে তৃণমূলের নবাগত প্রার্থী অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তী, বিজেপি প্রার্থী তৃণমূল থেকে আসা বর্তমান সাংসদ অনুপম হাজরা, সিপিআইএমের প্রার্থী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য। বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী বসিরহাট কেন্দ্রে তৃণমূলের আরেক অভিনেত্রী প্রার্থী নুসরাত জাহান, তাঁর বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছেন বিজেপির প্রার্থী দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু। গতবার এই ৯টি কেন্দ্রেই জয়ী হয়েছিলেন তৃণমূলের প্রার্থীরা। কিন্তু এবার একাধিক কেন্দ্রে তৃণমূলকে তাদের প্রধান প্রতিপক্ষ বিজেপির শক্ত লড়াইয়ের মুখোমুখি হতে পারে।
গত ১০ মার্চ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে প্রায় ৬০ দিনের বেশি সময় ধরে বিজেপি, কংগ্রেস, তৃণমূল, বসপা, সপা, টিডিপিসহ সব দলই নির্বাচনী প্রচারে ঝড় তুলেছে। তবে এ ক্ষেত্রে সবার আগে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। নির্বাচনের দিন ঘোষণার পর থেকে শেষ ৫১ দিনে দেশজুড়ে মোট ১৪২টি জনসভা ও চারটি রোড শো করেছেন তিনি।
বিজেপির দাবি, এবারেও তারা সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় আসছে। সে ক্ষেত্রে তাদের আসনসংখ্যা গতবারের থেকেও বেশি হবে। যদিও বিরোধীরা সেই দাবি মানতে নারাজ। কংগ্রেস ও তৃণমূলের দাবি, বিরোধী জোটই ক্ষমতায় আসতে চলেছে। আর তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, বিজেপি এবার একশর বেশি আসন পাবে না। তবে শেষ হাসিটা কে হাসবেন, তা জানা যাবে ২৩ মে।