বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, রাষ্ট্র, প্রশাসন ও বিচার ব্যবস্থার ওপর থেকে মানুষের আস্থা চলে গেছে। তিনি বলেন, এবারের সংসদ জনগণের নির্বাচিত নয়, জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে না। এর প্রতিবাদ করতে এবং দলকে সুসংগঠিত করতে অবৈধ সংসদে অংশগ্রহণ করিনি আমি।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে ঠাকুরগাঁওয়ের সদর উপজেলায় মির্জা রুহুল আমিন মিলনায়তনে উপজেলা বিএনপির কর্মিসভায় এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, দ্রুত জনগণকে সম্পৃক্ত করে খালেদা জিয়ার মুক্তি ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে সরকারকে বাধ্য করা হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, বিচার ব্যবস্থার ওপর থেকে, প্রশাসনের ওপর থেকে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর ওপর থেকে মানুষের আস্থা চলে যাচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীই যখন সবচেয়ে বড় চুরিটা করছে। মানুষকে তারা জনগণের ভোটের অধিকার প্রয়োগ করতে দিচ্ছে না। তখন তো সেই রাষ্ট্রের ওপরে জনগণ আর আস্থা রাখতে পারে না।
‘আসলে জনগণের সঙ্গে রাষ্ট্রের একটা চুক্তি, এই চুক্তিটাকে বলে সোশ্যাল কন্ট্রাক্ট। এইটা খুব বড় জিনিস। এর ভিত্তিতে আইন তৈরি হয়, সংবিধান তৈরি হয়। বাংলাদেশের সংবিধানে পরিষ্কার করে বলা আছে, এই দেশের মালিক হচ্ছে জনগণ।’ যোগ করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, বাংলাদেশের যে পার্লামেন্ট, এইটা জনগণের নির্বাচিত পার্লামেন্ট নয়। এটা স্বীকৃত, এই পার্লামেন্টে যে সরকার এসেছে সেই সরকার জনগণের স্বীকৃত সরকার নয়। সুতরাং যারা আজকে জোর করে ক্ষমতা দখল করে আছে এরা বৈধ নয়। নৈতিক কোনো অবস্থান তাদের নেই।
‘তাহলে আমরা সংসদে গেলাম কেন’ এমন প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশে এখন গণতান্ত্রিক কোনো পরিবেশ নেই। আজকে রাস্তায় দাঁড়িয়ে আমি ইচ্ছে করলেই একটা মিছিল বা একটা জনসভা করতে পারব না। জনগণ তার ইচ্ছে মতো লিখতে পারছে না, বলতে পারবে না। সেই কারণেই সামান্য যেটুকু কথা বলার সুযোগ আছে, তা কাজে লাগানোর জন্যই প্রতিনিধিদেরকে সংসদে পাঠানো হয়েছে।
‘প্রশ্ন উঠতে পারে, তাহলে আমি গেলাম না কেন। সেটা হচ্ছে দুটো কারণে, এক হচ্ছে দলকে সুসংগঠিত করার কারণে আর প্রতিবাদ হিসেবে। এটা দলের সিদ্ধান্ত, কৌশল।’
যিনি গণতন্ত্রের মাতা, যাকে আমরা গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় কাণ্ডারি মনে করি। যিনি সারাজীবন বাংলাদেশের গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছেন, কাজ করেছেন, তিনি আজ কারাগারে। তাঁকে এবং আমাদের হাজার হাজার নেতাকর্মী যারা বন্দি রয়েছেন তাদের মুক্ত করা, গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য বড় প্রয়োজন। একদিকে আন্দোলন, একদিকে সংগঠন, একদিকে নির্বাচন। এর মধ্য দিয়েই আমাদের এগোতে হবে। বলছিলেন মির্জা ফখরুল।
সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আনোয়ার হোসেন লালের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমুর রহমান, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হামিদ, পৌর বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট আব্দুল হালিম প্রমুখ।