বাচ্চুর উদ্দেশ্যপূর্ণ ইঙ্গিতে আগে থেকেই আতঙ্কিত ছিল সুরভি আক্তার নাহিদা। সে তার অনৈতিক প্রস্তাবে রাজি না হলে তা মেনে নেয় বাচ্চু। পরে গৃহকর্মীর কাজ পাইয়ে দিতে তাকে ফ্ল্যাটে নিয়ে আসে বাচ্চু। সুরভি ওই ফ্ল্যাটে গৃহকর্মীর কাজ নিলেও রাতে সেখানে থাকতে আপত্তি তোলে। কারণ কাজের লোক বাচ্চুও ওই ফ্ল্যাটেই থাকে। এ অবস্থায় বাচ্চুর অনুপস্থিতিতে সে বাসা থেকে চলে যেতে চাইলে বাধা দেন গৃহকর্ত্রী আফরোজা বেগম ও গৃহকর্মী দিতি। এ সময় তাঁদেরকে গলা কেটে হত্যা করে পালিয়ে যায় সুরভি। রাজধানীর ধানমণ্ডিতে জোড়া খুনের দায় স্বীকার করে এসব কথা বলেছে নতুন গৃহকর্মী সুরভি আক্তার নাহিদা।
মামলার তদারক কর্মকর্তা ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার আব্দুল্লাহ হেল কাফি বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সুরভি দাবি করেছে, সে একাই আফরোজা বেগম ও দিতিকে হত্যা করেছে। তাকে আরো জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
সুরভি জানায়, তার গ্রামের বাড়ি ভোলায়। ঢাকায় এসে গার্মেন্টে কাজ করত সে। একসময় গার্মেন্টের কাজ ছেড়ে দিয়ে বাসাবাড়িতে কাজ খুঁজতে থাকে। এরই মধ্যে বাচ্চুর সঙ্গে তার পরিচয় হয়। কিন্তু তাকে বাসাবাড়িতে কাজ পাইয়ে দেওয়ার বিনিময়ে বাচ্চু তার সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কের প্রস্তাব দেয়। এতে সে রাজি না হলে বাচ্চুও তা মেনে নেয়। এরপর গত শুক্রবার কাজ পাওয়ার উদ্দেশ্যে বাচ্চুর সঙ্গে সে ধানমণ্ডি ২৮ নম্বর রোডের ২১ নম্বর হোল্ডিংয়ে লবেলিয়া ভবনের ফ্ল্যাটে গিয়ে আফরোজা বেগমের সঙ্গে দেখা করে।
ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে সুরভি আরো জানায়, আফরোজা বেগম কথাবার্তা বলে সুরভিকে কাজে যোগ দিতে বলেন। এরপর তাকে নিয়ে আজরোজা বেগম চারতলায় তাঁর নিজ ফ্ল্যাটে যান। বাচ্চুও তাদের সঙ্গে ছিল। একপর্যায়ে বাচ্চু বাসা থেকে বের হয়ে যায়। কাজ শেষে সুরভি নিজের বাসায় ফিরতে চাইলে আফরোজা বেগম তাকে রাতে বাসায় থাকতে বলেন। সুরভিও রাজি হয়। এরই একপর্যায়ে সুরভি জানতে পারে যে এই ফ্ল্যাটের ড্রয়িং রুমের পাশে রাতে বাচ্চু ঘুমায়। এতে আতঙ্কিত হয়ে সে রাতে ফ্ল্যাটে থাকতে রাজি না হয়ে বের হয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় আফরোজা বেগম নিজ কক্ষে খাটে শুয়ে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। আর পুরনো কাজের মেয়ে দিতি ঘর ঝাড়ু দিচ্ছিল। বেরিয়ে যেতে বাধা দিলে সুরভি রান্নাঘর থেকে ফল কাটার ছুরি নিয়ে পেছন থেকে দিতির গলায় আঘাত করে। পর পর আরো দুবার আঘাত করে সে দিতির মৃত্যু নিশ্চিত করে।
কা/ক