নতুন ভ্যাট আইন চালুর ছয় মাস পার হয়ে গেছে। কিন্তু ভ্যাট আইন বাস্তবায়নে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এখনো পুরোপুরি প্রস্তুত হতে পারেনি। নতুন আইনটি অনলাইনভিত্তিক হলেও এর মূল কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হয়নি। পুরোনো পদ্ধতিতেই কাগুজে ভ্যাট রিটার্ন দিতে হচ্ছে। অনলাইনে ভ্যাটের টাকাও পরিশোধ করা যায় না।
তিন দিনে অনলাইনে ভ্যাট নিবন্ধন পাওয়ার কথা থাকলেও অনেক ক্ষেত্রে তা হচ্ছে না। আমদানি পর্যায়ে ৫ শতাংশ আগাম কর ফেরত পাওয়ার কোনো কৌশল ঠিক হয়নি। আইন চালুর পর মাঠপর্যায়েও ভ্যাট আদায়ে নানা সমস্যা হচ্ছে। এর ফলে নতুন আইনের সুফল পুরোপুরি পাওয়া যাচ্ছে না।
ভ্যাট আইনের এসব জটিলতার কারণে রাজস্ব আদায়ে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। জুলাই-অক্টোবর সময়ে ভ্যাট আদায়ে ঘাটতি ৮ হাজার ২৫৮ কোটি টাকা। এ খাতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ২৪ হাজার ৭৫১ কোটি টাকা। চার মাসে প্রবৃদ্ধি ১ শতাংশের কিছুটা বেশি। চলতি অর্থবছরে ১ লাখ ১৭ হাজার ৬৭২ কোটি টাকা ভ্যাট আদায়ের লক্ষ্য আছে।
২০১২ সালের ভ্যাট আইনটি প্রস্তুতির জন্য পাঁচ বছর সময় নেয় এনবিআর। ২০১৭ সালের জুলাই মাসে চালুর কথা ছিল। কিন্তু ব্যবসায়ীদের আপত্তিতে দুই বছর পিছিয়ে দিয়ে দাবি অনুযায়ী একাধিক ভ্যাট হার বহাল রেখে গত জুলাই মাসে আইনটি চালু করা হয়। কিন্তু সাত বছর সময় পেলেও ভ্যাট আইন বাস্তবায়নের পুরো প্রস্তুতি নিতে পারেনি এনবিআর।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর নতুন আইন বাস্তবায়নে এনবিআরের কোনো প্রস্তুতি ছিল না। কাঠামোগত দুর্বলতা এড়িয়ে নতুন আইনের সুফল পেতে যে ধরনের প্রশাসনিক সংস্কার দরকার ছিল, তা এনবিআর করতে পারেনি। মাঠপর্যায় থেকে নানা ধরনের বাধা এসেছে। এত দিন ধরে মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা পুরোনো আইনে যেসব অনৈতিক সুবিধা পেতেন, তাঁরাই সংস্কারে বাধা দিচ্ছেন। তিনি মনে করেন, নতুন আইন বাস্তবায়নের ১৫ দিন আগে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে পরিবর্তন করা হয়। এতে আসলে পুরোনো আইনের রেপ্লিকাই বাস্তবায়িত হয়েছে।