সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ নিরুৎসাহ করতে এবার ডাকঘর সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগে সুদের হার কমিয়ে প্রায় অর্ধেকে করেছে সরকার। তিন বছর মেয়াদি সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করে এখন ৬ শতাংশ সুদ পাওয়া যাবে এত দিন যা ছিল ১১ দশমিক ২৮ শতাংশ।
গতকাল বৃহস্পতিবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ এ-সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। অর্থাৎ, এখন থেকে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করে গ্রাহকের মুনাফা অর্ধেকে নেমে এল। গতকাল থেকে নতুন এই সুদহার কার্যকর করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ওই প্রজ্ঞাপনে। ডাকঘর সঞ্চয়পত্র ছাড়া অন্য সঞ্চয়পত্রে সুদহার কমায়নি সরকার।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী এখন থেকে এক বছর মেয়াদে সুদহার নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ শতাংশ, আগে যা ছিল ১০ দশমিক ২০ শতাংশ। দুই বছর মেয়াদের সঞ্চয়পত্রে সুদহার নির্ধারণ করা হয়েছে সাড়ে ৫ শতাংশ। আগে যা ছিল ১০ দশমিক ৭০ শতাংশ। এবং তিন বছর মেয়াদের সঞ্চয়পত্রে সুদের হার নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ শতাংশ।
আমানতকারী চাইলে প্রতি ৬ মাস অন্তর মুনাফা উত্তোলন করতে পারবেন। তবে সে ক্ষেত্রে ১ম বছরে ৪, ২য় বছরে সাড়ে ৪ এবং ৩য় বছরে ৫ শতাংশ হারে মুনাফা পাবেন। আগে যা ছিল যথাক্রমে ১ম বছরে ৯, ২য় বছরে সাড়ে ৯ এবং ৩য় বছরে ১০ শতাংশ।
জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ডাকঘর সঞ্চয়পত্রে নিট বিনিয়োগ ছিল প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে তিন বছর মেয়াদি সঞ্চয়পত্রে ৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ করেছেন গ্রাহক।
সঞ্চয়পত্র বিনিয়োগ নিরুৎসাহ করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। এ বছর গত বছরের চেয়ে সঞ্চয়পত্রের সুদের ওপর উৎসে আয়কর কর্তনের হার ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করা হয়েছে। অবশ্য ব্যাংকগুলোর স্থায়ী আমানতের ক্ষেত্রেও সুদের ওপর উৎসে করের হার ১০ শতাংশ এবং যাঁদের টিআইএন নেই, এ হার তাঁদের ক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ।
৫ লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্রের সুদের ওপর উৎসে কর ৫ শতাংশের পরিবর্তে ১০ শতাংশ করা হয়েছে। এক লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্র কিনতে কর শনাক্তকরণ নম্বর বা টিআইএন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। তবে উৎসে কর বাড়ালেও এখনো ডাকঘর সঞ্চয়পত্র ছাড়া অন্যান্য সঞ্চয়পত্রে সুদহার কমায়নি সরকার।
এসব শর্তে সরকারের সঞ্চয়পত্রের বিক্রির পরিমাণ কমেছে। ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে এক-তৃতীয়াংশের কিছু কম। সঞ্চয়পত্র নিট বিক্রি হয়েছে ৩২০ কোটি ৬২ লাখ টাকার। আগের বছর একই মাসে বিক্রি হয় ৩ হাজার ৮৩৩ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র।