গণফোরামে পাল্টাপাল্টি বহিষ্কারের মধ্যেই কেন্দ্রীয় কমিটির বিলুপ্তি ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। পরবর্তী কাউন্সিল না হওয়া পর্যন্ত ড. কামাল হোসেন সভাপতি ও রেজা কিবরিয়া সাধারণ সম্পাদক হিসেবে কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির দায়িত্ব পালন করবেন।
আজ বুধবার গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। গত ফেব্রুয়ারি মাসে গণফোরামে অভ্যন্তরীণ দলীয় কোন্দল দেখা দেয়। পাল্টাপাল্টি বহিষ্কার চলে। সম্প্রতি আবার একই ঘটনা ঘটে। গত সোমবার গণফোরামের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোশতাক আহমেদ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক হেলাল উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক লতিফুল বারী হামিম, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক খান সিদ্দিকুর রহমান এবং প্রবাসীকল্যাণ সম্পাদক আব্দুল হাছিব চৌধুরীকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। পরদিন গতকাল মঙ্গলবার এই বহিষ্কৃত চারজন দলটির সাধারণ সম্পাদক রেজা কিবরিয়া, সহসভাপতি মহসীন রশীদ, সহসভাপতি শফিকউল্লাহ ও যুগ্ম সাধারণ মোস্তাক আহমেদকে দল থেকে বহিষ্কার করেন।
কোনো বহিষ্কারের বিজ্ঞপ্তিতেই অবশ্য দলটির শীর্ষ নেতা কামাল হোসেনের কোনো স্বাক্ষর ছিল না। আজ বুধবার কামাল হোসেনের স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত বছরের ২৯ এপ্রিল গণফোরামের কাউন্সিলের পরে তিন থেকে চারজন কেন্দ্রীয় নেতা নিজেদের পছন্দ মতো কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করে সভাপতির অনুমোদন গ্রহণ করেন। কিন্তু ওই কমিটির নেতৃত্বে দলে গতি সৃষ্টির পরিবর্তে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়। কয়েকজন দায়িত্বশীল নেতা দায়িত্বহীনতার পরিচয় দেন। গণমাধ্যমে বিভিন্ন অনাকাঙ্ক্ষিত সংবাদ প্রকাশিত হয়, যা মেনে নেওয়া যায় না এবং চলতে দেওয়া যায় না।
এ পরিস্থিতিতে বিশেষ কাউন্সিল ২০১৯ কর্তৃক প্রদত্ত ক্ষমতাবলে কামাল হোসেন ২০১৯ সালের ৫ মে ঘোষিত কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেন। এ ছাড়া পরবর্তী জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত কামাল হোসেনকে সভাপতি ও রেজা কিবরিয়াকে সাধারণ সম্পাদক করে কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। তাঁরা দলের রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক দায়িত্ব পালন করবেন।
কামাল হোসেন জানান, চলতি মাসেই আহ্বায়ক কমিটির অন্য সদস্যদের নাম ঘোষণা করা হবে। কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটি গঠনতান্ত্রিক সব ক্ষমতা প্রয়োগ করার অধিকার রাখবেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জেলা, থানা/উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কমিটিগুলো আগের মতোই বহাল থাকবে।
বিজ্ঞপ্তির বিষয়ে গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক রেজা কিবরিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ মাসেই আমরা পূর্ণাঙ্গ আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করব। এখন সব জেলার কমিটিগুলো করে তাঁদের এনে পরবর্তী সময়ে দলের কাউন্সিল করা হবে। এটা আসলে একটা নিয়মে আনতে হবে যে জেলার নেতারা কী চান দেশের জন্য। দলের মধ্যে আসল গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বাদ দিয়ে একটি মহল তাদের মতো কমিটি বানিয়েছিল। এটা ভাঙতে হবে।’