ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে চলতি রোপা আমনে ৬ হাজার কৃষকের ৫৫০ হেক্টর আবাদি জমি পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। তাদের স্বপ্ন এখন দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে, চলতি রোপা আমন মৌসুমে উপজেলায় ২৪ হাজার ৫৩৫ হেক্টর জমিতে রোপা আমনের আবাদ করা হয়। কিন্তু টানা কয়েকদিনের অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে ২৮ সেপ্টেম্বর সোমবার পর্যন্ত ৫৫০ হেক্টর আবাদি জমি পানির নিচে তলিয়ে গেছে। শুধু তাই নয় ৭৪০ হেক্টর জমি আংশিক নিমজ্জিত হয়েছে।
হালুয়াঘাট উপজেলার সবচেয়ে বেশি ধান আবাদ হয় নড়াইল ইউনিয়নের থলবেষ্টিত এলাকা কাওয়ালীজান, বটগাছিয়াকান্দা, গোপীনগর, মৌলভীবাজার, বড়ইতলী ও বাতাকাঁটা। এসব এলাকায় আবাদি ফসলি জমিতে এখন ৭ থেকে ৮ ফুট পানি। এ ছাড়াও উপজেলার ধুরাইল, জুগলী, নড়াইল, গাজিরভিটা, বিলডোরা ও শাকুয়াই ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের আবাদি জমি পানির নিচে তলিয়ে আছে।
উপজেলার বাউশি গ্রামের কৃষক রুস্তম আলী বলেন. আড়াই একর জমি আবাদ করেছিলাম। এই ধান দিয়ে আমার পরিবারের সারা বছরের খাবারের চাহিদা পূরণ হয়। কিন্তু আমার জমিতে এখন বুকসমান পানি বলে হু হু করে কেঁদে ওঠেন।
উপজেলার বাঘমার গ্রামের কৃষক আমজত আলী বলেন, আমার ২ একর জমিতে এখন বুকসমান পানি। জমি আবাদে অনেক টাকা নষ্ট করেছি। আবদি জমির ফসল আর বাঁচানো যাবে না। আবার যে নতুন করে পানি কমলে ধান আবাদ করবো তারও উপায় নেই। কারন পানি কমতে কমপক্ষে ২০ দিনের ওপর লেগে যাবে। ফলে আর নতুন ফসল করা সম্ভব নয়।
কাওয়ালীজান এর কৃষক ইউসুফ আলী বলেন, চার একর জমি করেছিলাম সব শেষ। থলে এখন ৭ থেকে ৮ ফুট পানি। কিভাবে সামনের দিনগুলো চলবো বুঝতে পারছি না। আমার স্বপ্নগুলো শেষ হয়ে গেল।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মাসুদুর রহমান বলেন, আমাদের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাগণ সার্বক্ষণিক কৃষকদের ক্ষয়-ক্ষতির তালিকা তৈরি করছেন। ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের জন্য আমরা মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেব এবং বন্যাপরবর্তী করণীয় সম্পর্কে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম বলেন, অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে ক্ষয়-ক্ষতির বিষয়ে আমরা অবগত রয়েছি। এর মধ্যে আমরা প্রতিটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের ক্ষয়-ক্ষতির বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছি। সঠিক তালিকা আসার পরই আমরা এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।