লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় ১৫ জুনের সংঘর্ষে বড় সফলতার পর ভবিষ্যতে যে কোনো সীমান্ত বিরোধে চীনের বিরুদ্ধে এককভাবে দাঁড়ানোর আত্মবিশ্বাস খুঁজে পেয়েছে ভারত। বেইজিংকে মোকাবেলায় যুক্তরাষ্ট্রের চতুর্পক্ষীয় জোট গঠনের প্রস্তাব সত্ত্বেও ভবিষ্যতে ভারত এককভাবে চীনকে মোকাবেলা করতে পারবে বলে ইউরোপ ভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইউরোপিয়ান ফাউন্ডেশন ফর সাউথ এশিয়ান স্টাডিজ (ইএফএসএএস) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
পূর্ব লাদাখে সংঘর্ষের পর থেকে ভারত ও চীনের মধ্যে বেশ কয়েকটি আলোচনা হয়েছে। যদিও বিতর্কিত কিছু সেক্টরে উভয় দেশের সেনাবাহিনী পিছিয়ে আসতে শুরু করায় উত্তেজনা কিছুটা কমেছে। তবুও চীনা সেনারা এখনো দেপসাং সমভূমি অঞ্চল, গোগরা এবং প্যাংগং সো বরাবর ফিঙ্গার্স অঞ্চলে উপস্থিত রয়েছে।
প্যাংগং সো লেক এলাকায় চীনা সেনারা ফিঙ্গার ৪ থেকে ফিঙ্গার ৫-এ এগিয়ে এসেছে এবং এখনো সীমান্তে চীনা সেনাদের উপস্থিতি অব্যাহত রয়েছে। ভারত জোর দিয়ে বলছে যে চীনকে অবশ্যই ফিঙ্গার ৫ থেকে তাদের পূর্বের অবস্থান ফিঙ্গার 8 এ ফিরে যেতে হবে। চীনা আলোচকদের দাবির মুখে ভারত তার সেনাবাহিনীকে ফরোয়ার্ড অঞ্চল থেকে ফিরিয়ে নিয়েছে। তবে চীনা অনুপ্রবেশ সম্পূর্ণ প্রত্যাহার না হলে ভারত অচলাবস্থা নিরসনে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
ইউরোপীয়ান থিংক ট্যাঙ্কের রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০১৭ সালের ডোকলামের মতোই, চীনা রাজনৈতিক অপরাধের মুখে ভারতীয় রাজনৈতিক ও সামরিক নেতৃত্বের দৃঢ়তা ও সংকল্প চীনকে অবাক করে দিয়েছে।
ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে ইএফএসএস বলেছে, ‘সামরিক ও কূটনৈতিক পর্যায়ে ব্যস্ততা ও সংলাপ অব্যাহত থাকলেও উভয় দেশের কাছে গ্রহণযোগ্য সমাধান এখনো খুঁজে পাওয়া যায়নি। ফলে এই অচলাবস্থা ও বর্তমান অবস্থান দীর্ঘায়িত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আসন্ন শীতে প্রতিকূল পরিবেশেও চীনা লাল ফৌজকে মোকাবেলা করে এলএসিতে কৌশলগত অবস্থানগুলোর নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে ভারতীয় সেনাবাহিনী এরই মধ্যে ব্যাপক প্রস্তুতি শুরু করেছে। রীতিমতো যুদ্ধের বার্তা দিয়ে চীনকে হুঁশিয়ারি দিয়ে ভারতীয় সেনাবাহিনী বলেছে, শীতের লাদাখেও পুরোদমে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত ভারতীয় সেনা।
ভারত শান্তি প্রিয় দেশ এবং প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে আগ্রহী। কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্য়মে সমস্যা সমাধান চায় ভারত। তবে সীমান্ত বিবাদ মেটাতে চীনের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চললেও সামরিক স্তরে জবাব দিতে সবরকম প্রস্তুতিও নিয়ে রেখেছে দেশটি।