শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবীদ ড. মুহাম্মদ ইউনুসের বিরুদ্ধে করা ৫ মামলার কার্যক্রমের ওপর হাইকোর্টের দেওয়া স্থগিতাদেশ বহাল রখেছেন আপিল বিভাগ। আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলীর নেতৃত্বে আপিল বিভাগের বেঞ্চ সোমবার এ আদেশ দেন। গ্রামীণ ট্রাস্টভুক্ত প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ কমিউনিকেশন্স থেকে চাকরিচ্যুত শ্রমিকদের করা মামলায় হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ বাতিল চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আবেদন করেছিল। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবী ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাসগুপ্ত। ড. ইউনুসের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মোস্তাফিজুর রহমান খান।
ড. মুহাম্মদ ইউনুস প্রতিষ্ঠিত গ্রামীন কমিউনিকেশন্সের কর্মচারিদের ট্রেড ইউনিয়ন করা নিয়ে বিরোধের জের ধরে কয়েকজন কর্মচারিকে চাকরিচ্যুত করা হয়। এ ঘটনায় ড. মুহাম্মদ ইউনুসের বিরুদ্ধে গতবছর ৩ জুলাই শ্রম আদালতে পাঁচটি মামলা করেন গ্রামীণ কমিউনিকেশন্স শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম, গ্রামীণ কমিউনিকেশন্সের জুনিয়র এমআইএস অফিসার (কম্পিউটার অপারেটর) ও সংগঠনের প্রচার সম্পাদক আব্দুস সালাম, এমরানুল হক, হোসাইন আহমদ ও আব্দুল গফুর।
মামলায় ড. ইউনুস ছাড়াও প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজনীন সুলতানা ও উপ-মহাব্যবস্থাপক খন্দকার আবু আবেদীনকেও আসামি করা হয়। এর মধ্যে তিনটি মামলায় তৃতীয় শ্রম আদালত গতবছর ৮ অক্টোবর তিন আসামিকে হাজিরের নির্দেশ দেয়। পরদিন নাজনীন সুলতানা ও আবু আবেদীন আদালতে হাজির হয়ে জামিন নেন। আর ড. ইউনুস হাজির না হওয়ায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
অপর দুটি মামলায় তাকে ৫ নভেম্বর হাজির হতে বলা হয়। এরপর ড. ইউনুসের ভাই মুহাম্মদ ইব্রাহীম হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। হাইকোর্ট ২৮ অক্টোবর এক আদেশে ড. ইউনুসকে দেশে ফিরে ৭ নভেম্বরের মধ্যে আত্মসমর্পণ করতে বলেন।
এছাড়া এ সময়ের মধ্যে তাকে হয়রানি না করতে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাকে নির্দেশ দেওয়া হয়। এরপর ড. ইউনুস দেশে ফিরে ৩ নভেম্বর সংশ্লিষ্ট শ্রম আদালতে আত্মসমর্পন করে পাঁচ মামলায়ই জামিন নেন। পরবর্তীতে মামলা বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন তিনি। হাইকোর্ট গত ৪ মার্চ মামলা বাতিল প্রশ্নে রুল জারি করেন ও মামলার কার্যক্রমের ওপর স্থগিতাদেশ দেন। হাইকোর্টের এ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ।