বরিশাল ও খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোট গ্রহণ চলছে। আজ সোমবার (১২ জুন) সকাল ৮টা থেকে এ ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে, যা বিরতিহীনভাবে চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। কেন্দ্রীয়ভাবে সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে দুই সিটির ভোটের পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছেন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সদস্যরা।
সোমবার সকাল থেকেই রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের বেজমেন্টে স্থাপিত সিসিটিভি মনিটরিং কন্ট্রোল রুম থেকে সরাসরি ভোট গ্রহণ পর্যবেক্ষণ করছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল, নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব খান, রাশেদা সুলতানা ও মো. আলমগীর।
ইসির সহকারী জনসংযোগ পরিচালক আশাদুল হক সকালে সংবাদমাধ্যমকে বলেন, সব জায়গায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট চলছে, কোথাও কোনো ধরনের গোলযোগ বা অপ্রীতিকর ঘটনা কমিশনের নজরে পড়েনি।
নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব খান বলেন, ভোটে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ অনিয়মে জড়ালে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দুই সিটির প্রতিটি ভোটকক্ষে একটি করে এবং প্রতিটি কেন্দ্রের প্রবেশপথে দুটি করে সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। এর মধ্যে বরিশালে ১ হাজার ১৪৬টি এবং খুলনায় ২ হাজার ৩১০টি ক্যামেরায় ভোট পর্যবেক্ষণ করছে নির্বাচন কমিশন।
পাশাপাশি ইসির আইডিইএ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল হাসনাত মোহাম্মদ সায়েমের নেতৃত্বে আইনশৃঙ্খলা সমন্বয় ও মনিটরিং সেল কাজ করছে। এর মধ্যে জননিরাপত্তা বিভাগ, পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স, বিজিবি, র্যাব ও আর্মড পুলিশের প্রতিনিধিরা রয়েছেন। তারাও একই ভবন থেকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে কমিশনকে অবহিত করছেন।
এর আগে কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশন রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন, কুমিল্লা সিটি করপোরেশন, ঝিনাইদহ পৌরসভা, গাইবান্ধা-৫ উপনির্বাচন, গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন সিসিটিভির মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করে।
বরিশাল সিটি করপোরেশন
বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৩০টি ওয়ার্ডে ১২৬টি কেন্দ্রের ৮৯৪টি বুথে ভোট গ্রহণ চলবে। প্রস্তুত করা হয়েছে ১ হাজার ৫০০ ইভিএম। এসব ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ১০৬টি ঝুঁকিপূর্ণ বলে জানিয়েছেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. সাইফুল ইসলাম।
বরিশাল সিটির ভোটার ২ লাখ ৭৪ হাজার ৯৯৫ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ১ লাখ ৩৮ হাজার ৭১ জন এবং পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৩৬ হাজার ৯২৪ জন।
মেয়র পদপ্রার্থী
বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৭ জন। তারা হলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আবুল খায়ের আবদুল্লাহ, জাতীয় পার্টির ইকবাল হোসেন তাপস, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম, জাকের পার্টির মিজানুর রহমান বাচ্চু ছাড়াও স্বতন্ত্র প্রার্থী আছেন ঘড়ি প্রতীকের মো. কামরুল আহসান রুপন, হাতি প্রতীকের আসাদুজ্জামান ও হরিণ প্রতীকের আলী হোসেন।
এ ছাড়া সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১১৮ জন, সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৪২ জনসহ মোট ১৬৭ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
খুলনা সিটি করপোরেশন
খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ২৮৯ ভোটকেন্দ্রে ১ হাজার ৭৩২টি ভোটকক্ষে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে ১৬১টি কেন্দ্রকে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ (ঝুঁকিপূর্ণ) ও ১২৮টি কেন্দ্রকে ‘সাধারণ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ (কেএমপি)। তালিকা অনুযায়ী প্রায় ৫৬ শতাংশ কেন্দ্রই ‘ঝুঁকিপূর্ণ’।
এ সিটি করপোরেশনের ভোটার ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৫২৯ জন। তাদের মধ্যে নারী ভোটার ২ লাখ ৬৬ হাজার ৬৯৬ জন।
মেয়র পদপ্রার্থী
খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৫ জন। তারা হলেন তালুকদার আবদুল খালেক (আওয়ামী লীগ, নৌকা প্রতীক), মো. আ. আউয়াল (ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, হাতপাখা), মো. শফিকুল ইসলাম মধু (জাতীয় পাটি, লাঙ্গল), এস এম শফিকুর রহমান (স্বতন্ত্র, টেবিল ঘড়ি) এবং এস এম সাব্বির হোসেন (জাকের পার্টি, গোলাপ ফুল)।
এ ছাড়া সাধারণ ৩১টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে ১৩৬ জন ও সংরক্ষিত ১০টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে ৩৯ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।