ভাটারার মাদানী অ্যাভিনিউয়ের নূর জুয়েলার্সে দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনার রহস্য উদঘাটন করে ৮ জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা-লালবাগ বিভাগ।
গ্রেফতারকৃতরা হলো মোঃ শরীফ ওরফে জামাই শরীফ, মোঃ আমির হোসেন ওরফে মোটা আমির, মোঃ ইয়াছিন আরাফাত মোল্লা ওরফে কানা মোটা ইয়াছিন, মোঃ ফারুক, মোঃ নুরে আলম সুমন ওরফে ডিবি সুমন, মোঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন ওরফে আব্দুল্লাহ, মোকাররম হোসেন ওরফে রুবেল ওরফে মনির হোসেন ওরফে মনু ও মোঃ পারভেজ। এ সময় তাদের হেফাজত হতে ২ ভরি চোরাই স্বর্ণ, স্বর্ণ বিক্রির নগদ ১২ লক্ষ টাকা ও তালা কাটার কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন যন্ত্রপাতি উদ্ধার করা হয়।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মশিউর রহমান বিপিএম(বার), পিপিএম-সেবা।
উপ-পুলিশ কমিশনার বলেন, গত ১৪ এপ্রিল ভাটারার মাদানী অ্যাভিনিউয়ের নূর জুয়েলার্সের কলাপসিবল গেইট ও সাটারের তালা কেটে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার চুরি হয়। এ ঘটনায় ভাটারা থানায় মামলা রুজু হয়। থানা পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা-লালবাগ বিভাগের লালবাগ জোনাল টিম মামলাটির ছায়া তদন্ত শুরু করে। মামলাটি তদন্তকালে সিটিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ, তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের শনাক্ত করা হয়। গতকাল বুধবার কুমিল্লা, ব্রাক্ষণবাড়ীয়া, নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে সংঘবদ্ধ চোর চক্রের সর্দারসহ ৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃতরা ইতোপূর্বে ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও সিলেট বিভাগের বিভিন্ন জেলা ও থানার মানি একচেঞ্জ, জুয়েলারি দোকান, টায়ার টিউবের আড়ৎ, লাইট হাউজে বিশেষ কায়দায় তালা কেটে ও শাটার ভেঙে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার চুরি করেছে।
চুরির কৌশল সম্পর্কে তিনি বলেন, যে সকল এলাকায় সিসিটিভি ক্যামেরা নাই এ চক্রটি সেই সকল এলাকা টার্গেট করে। কোন প্রতিষ্ঠানে চুরি করার আগে সে এলাকা রেকি করে। প্রতিষ্ঠানের মালিক ও কর্মচারীরা কখন, কোথায়, কতক্ষণ অবস্থান করে তা পর্যবেক্ষণ করে। চুরির সময় তারা ছাতা বা চাদরের আড়ালে তালা কাটার যন্ত্র দিয়ে মুহূর্তেই কলাপসিবল গেট ও সাটারের তালা কেটে চুরি করে। চুরির পর পূর্ব থেকেই নির্দিষ্ট কিছু দোকানে তারা চোরাই স্বর্ণালংকার কম দামে বিক্রি করে ফেলে।
তিনি বলেন, যে সকল ব্যবসায়ী চোরাই স্বর্ণালংকার ক্রয় করেন প্রমাণের ভিত্তিতে তাদের বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
পুলিশের তদন্তে দেখা গেছে যে সকল জুয়েলারি দোকান, মানি এক্সচেঞ্জ অথবা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে সিসিটিভি ক্যামেরা নাই সেগুলোকে সাধারণ চোর ও সংঘবদ্ধ চোরেরা টার্গেট করে থাকে। জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তার স্বার্থে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা আবাসিক এলাকায় ভালো মানের সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করার অনুরোধ জানান ডিবির এ কর্মকর্তা।