লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ মোহম্মদীয়া দাখিল মাদ্রাসা হিফ্জখানা ও এতিমখানা কমপ্লেক্সের নাজেরা শাখার ছাত্র কামরুল হোসেন শুভ (১৩) নামে এক ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। তবে মাদ্রাসা ছাত্র কামরুল হাসান শুভর পরিবারের দাবী তাকে শিক্ষক পিটিয়ে হত্যা করেছে।
আজ রবিবার সকালে রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পর কর্ত্যব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
কামরুল হাসান শুভ রামগঞ্জ উপজেলার সাউধেরখীল ভূইয়া গাজী ব্যাপারী বাড়ির দুবাই প্রবাসী কামাল হোসেন ও গৃহিনী রেখা বেগমের একমাত্র ছেলে।
পুলিশ লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য জেলা হসপিটাল মর্গে প্রেরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন বলে জানান, রামগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ এমদাদুল হক।
কামরুল হাসান শুভর মা রেখা বেগম জানান, আজ রবিবার সকাল সাড়ে ৮টায় মাদ্রাসা থেকে মোস্তফা কামাল নামের একজন শিক্ষক আমাকে মোবাইল কল দিয়ে জানান, আমি কামরুলের হুজুর বলছি-আপনার ছেলে অসুস্থ্য। তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। আপনি দ্রুত আসেন। মোবাইলে খবর পেয়ে হুজুরকে বলি আপনারা যত দ্রুত সম্ভব আমার ছেলেকে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন আমি আসতেছি। আমি হসপিটালে এসে দেখি আমার ছেলে আর নেই। আমি দেখতে পাই তার হাতে বিভিন্ন রকমের দাগ রয়েছে। আমার ছেলেকে মাদ্রাসায় মারধর করা হয়েছে। না হলে আমার ছেলে মারা যেতো না।
শিক্ষার্থী কামরুল হাসান শুভর চাচা জামাল হোসেন জানান, আমার একমাত্র ভাতিজা কামরুল হাসান শুভকে মাদ্রাসা শিক্ষকরা পিটিয়েছে। এমন কি ঘটনা ঘটলো যে আমার ভাতিজাকে হসপিটালে নেয়ার পথে সে মারা গেলো। আমি খবর পেয়ে মাদ্রাসায় গিয়ে গেইটে তালা দিয়েছি।
কথা বলেন, মাদ্রাসার সভাপতি হাফেজ মাওলানা জুনায়েদুল হকের বড় ছেলে নাজমুল হক আকন্দ । তিনি জানান আমাকে আজ সকালে মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক হাফেজ সাফায়েত হোসেন ফোন দিয়ে মাদ্রাসার নাজেরা বিভাগের শিক্ষার্থী কামরুল হাসান অসুস্থ্য হয়ে হসপিটালে মারা গেছেন বলে জানান। ফজরের নামাজের সময়ও ছেলেটি সুস্থ্য ছিলো। কিন্তু ভোরে নাকেমুখে ফেনা বের হলে শিক্ষকরা তাকে দ্রুত হসপিটালে নিয়ে যায়। এ ঘটনার কিছুক্ষণ পর কিছু অভিভাবক মাদ্রাসার দরজা জানালা ভাঙ্গার চেষ্টা করেন। আমি এসে তাদেরকে মূল ঘটনা উদঘাটনে সহযোগিতা ও কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে থাকলে সুষ্ঠু বিচারের আশ^াস দিলে অভিভাবকগণ চলে যান।
রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার গুনময় পোদ্দার জানান, ছেলেটিকে হসপিটালে নিয়ে আসার আগেই মৃত্যু হয়েছে। আমরা কোন কিছু ধারনা করতে পারিনি। পুলিশকে জানানো হয়েছে, পুলিশ ময়নাতদন্তের ব্যবস্থা করলে বলতে পারবে মূল ঘটনা কি।
রামগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ এমদাদুল হক জানান, সরকারি হসপিটালের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার গুনময় পোদ্দার আমাকে কল দিয়ে মাদ্রাসার ছাত্রের মৃত্যুর বিষয়টি জানান। পুলিশ পাঠিয়ে লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য জেলা হসপিটাল মর্গে প্রেরণের ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।