উজানে ভারি বর্ষণের কারণে সিরাজগঞ্জে গত কয়েক দিন ধরেই দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনা নদীর পানি। গত ২৪ ঘণ্টায় সিরাজগঞ্জ হার্ড পয়েন্টে ৫০ সেন্টিমিটার ও কাজিপুর পয়েন্টে ৪২ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে।
মঙ্গলবার (২০ জুন) সকালে যমুনা নদীর পানি সিরাজগঞ্জ হার্ড পয়েন্টে যমুনা নদীর পানির সমতল ১১ দশমিক ৮৫ মিটার রেকর্ড করা হয়। গত ২৪ ঘণ্টায় ৫০ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ১০৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে (বিপৎসীমা : ১২ দশমিক ৯০ মিটার)। অপরদিকে কাজিপুর পয়েন্টে যমুনা নদীর পানির সমতল রেকর্ড করা হয়েছে ১৩ দশমিক ১৭ মিটার। ২৪ ঘণ্টায় ৪২ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ১ দশমিক ৬৩ মিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে (বিপৎসীমা : ১৪ দশমিক ৮০ মিটার)।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহবুবুর রহমান কালবেলাকে জানান, উজানে ও দেশের অভ্যন্তরে ভারী বৃষ্টির কারণে গত পাঁচদিন ধরেই দ্রুত বাড়ছে যমুনা নদীর পানি। আগামী ৭২ ঘণ্টায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে। বিপৎসীমার কাছাকাছি যাবার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানান তিনি।
এদিকে সোমবার (১৯ জুন) ইন্ডিয়ার মেট্রোলজিক্যাল ডিপার্টমেন্টের একটি পোস্ট শেয়ার করে আবহাওয়া ও জলবায়ু গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ জানান, ব্রহ্মপুত্র ও তিস্তার উপকূলবর্তী জেলাগুলোয় বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। আগামী ২০ থেকে ৩০ জুনের মধ্যে বন্যা দেখা যেতে পারে। আর ১৫ জুন থেকে রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগের জেলাগুলোয় নিয়মিত ভারি বৃষ্টির হতে পারে।
অন্যদিকে ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ২২ জুন পর্যন্ত ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় ৭টি রাজ্যের সবটিতে ভারি থেকে প্রবল ভারি বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। এই বৃষ্টির পুরোটাই রংপুরের ধরলা, তিস্তা, দুধকুমার নদী ও ব্রহ্মপুত্র নদের মাধ্যমে বাংলাদেশে প্রবেশ করবে।
এর আগে রোববার (১৮ জুন) থেকে তিস্তা নদীর উজানে ভারতের গজল ডোবা বাঁধের সব দরজা খুলে দেওয়া হয়। ফলে নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার তিস্তা ব্যারেজে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহ শুরু হয়েছে।
১৯ জুন পানি উন্নয়ন বোর্ড নীলফামারীর ডালিয়া ডিভিশনের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র কালবেলাকে জানায়, উজানের ঢল ও ভারি বৃষ্টিপাতের ফলে রোববার রাত থেকে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। সোমবার সকাল ৬টায় তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টে নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে ৫ সেন্টিমিটার ওপরে ওঠে। এরপর সকাল ৯টায় পানি কমে বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার, দুপুর ১২টায় ১৭ সেন্টিমিটার এবং বিকেল ৩টায় ২৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।