রাজধানীতে ২৩ শর্তে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের তিন সহযোগী সংগঠন ও বিএনপিকে সমাবেশ করার অনুমতি দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) বিকেল ৪টায় ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সমাবেশের অনুমতি দেন ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক।
খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, সমাবেশ করার জন্য বিএনপিকে কাকরাইলের নাইটিঙ্গেল মোড় থেকে রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতাল পর্যন্ত সভা-সমাবেশ ও মাইকের ব্যবহার সীমাবদ্ধ রাখতে হবে। একই সঙ্গে আওয়ামী লীগের সমাবেশ ও মাইকিং মহানগর নাট্যমঞ্চ থেকে শুরু করে মুক্তাঙ্গন পর্যন্ত সীমাবদ্ধ রাখতে হবে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (অ্যাডমিন) এ কে এম হাফিজ আক্তার, অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) ড. খ মহিদ উদ্দিন, অতিরিক্ত কমিশনার (সিটিটিসি) মো. আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) হারুন অর রশীদসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
সমাবেশের জন্য দেশের প্রধান দুটি দলকে ২৩টি শর্ত দিয়েছে ডিএমপি। শর্ত সমূহ হলো-
১. বিএনপি নাইটঅ্যাঙ্গেল মোড় থেকে পুলিশ হাসপাতাল মোড় পর্যন্ত তারা সমাবেশ করবে এবং এর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতে হবে।
২. আওয়ামী লীগের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে তারা মহানগর নাট্যমঞ্চ থেকে পশ্চিমে মুক্তাঙ্গন পর্যন্ত এই এলাকাগুলোতে তাদের সমাবেশ এবং মাইকিং সীমাবদ্ধ রাখতে হবে।
৩. কোনো লাঠিসোটা কোনোভাবেই সমাবেশে আনতে পারবে না।
৪. কোনো ব্যাগ বহন করতে পারবে না।
৫. রাষ্ট্রদ্রোহী কোনো বক্তব্য তারা দিতে পারবে না।
৬. নির্ধারণ করে দেয়া সীমানার বাইরে মাইক ব্যবহার করতে পারবেন না।
৭. জনদুর্ভোগ এড়াতে যতদূর সম্ভব নিজেদের ভলান্টিয়ার রাখবেন এবং আইনশৃঙ্খলা ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে প্রত্যেক দলই তাদের স্বেচ্ছাসেবক বা শৃঙ্খলা বাহিনীর লোক রাখবে যারা পুলিশকে সার্বিক সহযোগিতা করবে।
৮. কোনো দলই আইনশৃঙ্খলা অবনতি হওয়ার মতো কোনো কাজ করবেন না।
৯. শব্দ দূষন প্রতিরোধে সীমিত আকারে মাইক/শব্দযন্ত্র ব্যবহার করতে হবে, কোনক্রমেই অনুমোদিত স্থানের (দক্ষিণ-পূর্বে মহানগর নাট্যমঞ্চ, দক্ষিণে সার্জেন্ট আহাদ পুলিশ বক্স, দক্ষিণ-পশ্চিমে ফুলবাড়িয়া ক্রসিং ও উত্তর-পশ্চিমে মুক্তাঙ্গন পর্যন্ত) বাইরে মাইক/পদযন্ত্র ব্যবহার করা যাবে না।
১০. অনুমোদিত স্থানের (দক্ষিণ-পূর্বে মহানগর নাট্যমঞ্চ, দক্ষিণে সারেন্টি আহাদ পুলিশ বক্স, দক্ষিণ-পশ্চিমে ফুলবাড়িয়া ক্রসিং ও উত্তর-পশ্চিমে মুক্তাঙ্গন পর্যন্ত) বাইরে প্রজেক্টর স্থাপন করা যাবে না।
১১. আযান, নামাজ ও অন্যান্য ধর্মীয় সংবেদনশীল সময় মাইক/শব্দযন্ত্র ব্যবহার করা যাবে না।
১২. ধর্মীয় অনুভূতির উপর আঘাত আসতে পারে এমন কোন বিষয়ে ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শণ বক্তব্য প্রদান বা প্রচার করা যাবে না।
১৩. সমাবেশের কার্যক্রম ব্যতিত মঞ্চকে অন্য কোন কাজে ব্যবহার করা যাবে না।
১৪. সমাবেশ শুরুর ০২ (দুই) ঘন্টা পূর্বে লোকজন সমবেত হওয়ার জন্য আসতে পারবে।
১৫. অনুমোদিত সময়ের মধ্যে (২টা থেকে ৫টা) সমাবেশের সার্বিক কার্যক্রম শেষ করতে হবে।
১৬. কোনো অবস্থাতেই মূল সড়কে যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা যাবে না।
১৭. আইন-শৃঙ্খলা পরিপন্থি ও জননিরাপত্তা বিঘ্নিত হয় এমন কার্যকলাপ করা যাবে না।
১৮. রাষ্ট্র বিরোধী কোন কার্যকলাপ ও বক্তব্য প্রদান করা যাবে না।
১৯. উস্কানীমূলক কোন বক্তব্য প্রদান বা প্রচারপত্র বিলি করা যাবে না।
২০. কোনো ধরণের লাঠি-সোটা/ব্যানার, ফেস্টুন বহনের আড়ালে লাঠি, রড ব্যবহার করা যাবে না।
২১. আইন-শৃংখলার অবনতি ও কোন বিরুপ পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে আয়োজনকারী কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবেন ।
২২. উল্লেখিত শর্তাবলী যথাযথভাবে পালন না করলে তাৎক্ষণিকভাবে এই অনুমতির আদেশ বাতিল বলে গণ্য হবে।
২৩. জনস্বার্থে কর্তৃপক্ষ কোন কারণ দর্শানো ব্যতিরেকে এই অনুমতি আদেশ বাতিল করার ক্ষমতা সংরক্ষণ করেন