বৃহস্পতিবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:২০ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
কবে হবে জাতীয় নির্বাচন, জানালেন প্রধান উপদেষ্টা কুমিল্লায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে বাসের ধাক্কা, নিহত ৩ মোরেলগঞ্জে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে প্রশাসনের আয়োজনে ফুটবল টুর্নামেন্ট খেলার উদ্বোধন জাতীয়তাবাদী রেলওয়ে শ্রমিক ও কর্মচারী দলের ৪৪ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন তারেক রহমান দেশে ফিরবেন কখন, যা বললেন মির্জা ফখরুল গুম-খুনে আর জড়াবে না র‍্যাব : মহাপরিচালক শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যক্রম সমর্থন করে না ভারতের মোদি সরকার সোনারগাঁয়ে দুটি চুনা কারখানার অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিছিন্ন পাঁচবিবিতে জনবল সংকট ইউনিয়ন স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রে ক্যারিবিয়ান জয়ের পর তাসকিন-তাইজুল যা বললেন

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় আল্লাহ আমাকে রক্ষা করেছেন মানুষের সেবা করার জন্য : প্রধানমন্ত্রী

অনলাইন ডেক্স
  • আপডেট সময় সোমবার, ২১ আগস্ট, ২০২৩
  • ৭২ বার পড়া হয়েছে
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জিয়া পরিবারকে খুনী পরিবার আখ্যায়িত করে বলেছেন, এদেশে খুনীদের রাজত্ব আর চলবে না। শেখ হাসিনা আজ সোমবার ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ১৯তম বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনাসভায় সভাপতির ভাষণে ৭৫ এর ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে পরিবারের অধিকাংশ সদস্যসহ হত্যা এবং ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সন্ত্রাস বিরোধী শান্তি সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালিয়ে মানুষ হত্যায় জড়িত থাকায় জিয়া পরিবারকে খুনী পরিবার হিসেবে আখ্যায়িত করেন। পাশাপাশি গ্রেনেড হামলা মামলার রায় দ্রুত কার্যকরেরও দাবি জানান তিনি।

তিনি বলেন, জিয়া পরিবার মানে হচ্ছে খুনি পরিবার।

এই বাংলাদেশে খুনীদের রাজত্ব আর চলবে না।রাজধানীর ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সমানে যেখানে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশে বর্বরোচিত গ্রেনেড হামলা চালিয়ে তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা এবং বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার প্রচেষ্টা চালানো হয় সেখানেই সে দিনের স্মরণে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।

সে দিনের হামলায় শেখ হাসিনা প্রাণে বেঁচে গেলেও তাঁর শ্রবনেন্দ্রীয় মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। নেতাকর্মীদের মানব ঢাল প্রাণে বাঁচায় তাঁকে।

কিন্তু নারী নেত্রী আইভি রহমানসহ আওয়ামী লীগের ২২ নেতাকর্মী নিহত এবং প্রায় এক হাজার জন আহত হন। যার মধ্যে ৫ শতাধিক গুরুতর আহত হন।প্রধানমন্ত্রী বলেন, এদেশে মানবাধিকার লংঘন বারবার হয়েছে, যার মূল হোতাই হচ্ছে জিয়াউর রহমান। আর খালেদা জিয়া তারেক রহমানসহ তাদের দোসর জামায়াতে ইসলামী এবং ৭১ এর যুদ্ধাপরাধীরা এখনও তারা সে কাজই করে যাচ্ছে।

অন্যদিকে আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর থেকে মানবাধিকার সংরক্ষণ করেছে। মানুষ ন্যায়বিচার পায়, কেউ অপরাধ করলে তার বিচার হচ্ছে। 

তিনি বলেন, এই বাংলাদেশে খুনীদের রাজত্ব আর চলবে না। আর জিয়া পরিবার মানে হচ্ছে খুনি পরিবার। যারা এখনও শরীরে গ্রেনেডের স্প্রিন্টার বয়ে নিয়ে বেদনাময় জীবন যাপন করছেন তাদের তিনি বাংলাদেশের মানুষের কাছে গিয়ে জিয়া পরিবারের এই অপকর্ম তুলে ধরতে বলেন,  কিভাবে এরা তাদের জীবনকে ধ্বংস করেছে।

কিভাবে দেশে লুটপাট করেছে, কিভাবে দেশের স্বাধীনতার চেতনাকে ধ্বংস করেছে। কিভাবে এদেশের মানুষের মুখের অন্ন কেড়ে নিয়ে তাদের ক্ষুধার্ত রেখে আর্থ-সামাজিক উন্নতি হতে দেয়নি। অথচ নিজেরা অর্থ সম্পদের মালিক হয়েছে।প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই অন্যায় অবিচার আল্লাহ তাআলাও সহ্য করবেন না। তারা চেষ্টা করেছে হত্যা করতে কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ বার বার ভোট দিয়ে আমাদের নির্বাচিত করেছে। ঐ ছোট্ট রাসেলকে পর্যন্ত হত্যা করেছিল তারা এবং তাদের চেষ্টা ছিল বঙ্গবন্ধুর রক্তের কেউ যেন আর ক্ষমতায় আসতে না পারে। কিন্তু আল্লাহর মার দুনিয়ার বার-এটাই সত্যি কথা। আল্লাহ আমাকে বার বার রক্ষা করে সুযোগ দিয়েছেন এদেশের মানুষের সেবা করার। তাই ঐ তৃণমূল পর্যায়ের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনেও আওয়ামী লীগ সরকার কাজ করে যাচ্ছে।

সরকার প্রধান বলেন, জিয়াউর রহমান ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স জারির মাধ্যমে জাতির পিতাকে পরিবারের অধিকাংশ সদস্যসহ হত্যার পরও নিহতের স্বজনদের বিচার চাওয়ার কোনো অধিকার ছিল না, কোনো মামলা পর্যন্ত করা যায়নি। ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে বিচারের পথ রুদ্ধ করে দিয়েছিল। সে দিনের ভুক্তভোগী আজকের প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন তোলেন, তাহলে তাদের মানবাধিকার কোথায় ছিল?

তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা দেখি মাঝে মাঝে বাংলাদেশে মানবাধিকারের কথা বলে, তাদের কাছে আমার প্রশ্ন, কাদের শেখানো বুলি তারা বলেন? জাতির পিতা হত্যাকাণ্ডের বিচার পেতে তাদের দীর্ঘ ৩৩টি বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ২১ আগস্ট প্রকাশ্য দিবালোকে গ্রেনেড হামলা করে আইভি রহমানসহ আমাদের যেসব নেতাকর্মীকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে তার বিচার ও বিচারের রায় হয়েছে। এই রায় দ্রুত কার্যকর করা উচিত।

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় অভিযুক্তদের কিছু কারাগারে থাকলেও মূল হোতা তারেক রহমানের প্রতি ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে বলেন, এর মূল হোতাতো বাইরে (বিদেশে পলাতক)। সে তো মুচলেখা দিয়ে বাইরে চলে গেছে (তত্বাবধায়ক সরকারের সময় আর রাজনীতি করবেনা মর্মে)।

তিনি তারেক রহমানের সততার প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে বলেন, তার সাহস থাকলে আসে না কেন বাংলাদেশে। আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ করে দিয়েছি তার সুযোগ নিয়ে (ইউটিউব/সোশাল মিডিয়ায়) লম্বা লম্বা কথা বলে। আর কত হাজার হাজার কোটি টাকা চুরি করে নিয়ে গেছে সেই টাকা খরচ করে। সাহস থাকে তো বাংলাদেশে আসুক, বাংলাদেশের মানুষ ঐ খুনীকে ছাড়বে না, ওদের ছাড়বে না।

তিনি এ সময় ৭৫ এ জাতির পিতাকে হত্যা এবং এরপর জয় বাংলা শ্লোগান এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে মুছে ফেলার ব্যর্থ প্রচেষ্টার প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ওরা কিছু লোক দেখে লম্ফঝম্ফ করে কিন্তু বাংলাদেশের মানুষকে চেনে নাই।

ঘরে ঘরে বিদ্যুতের সেবা পৌঁছে দেওয়া, কর্মসংস্থান, গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত ব্রডব্যান্ড ও ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দেওয়াসহ দেশের সার্বিক অবকাঠামো উন্নয়নের খণ্ড চিত্র তুলে ধরে বলেন, সরকার জনগণের কল্যাণেই কাজ করে যাচ্ছে। কারণ আওয়ামী লীগ মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনেই কাজ করে এবং জাতির পিতা এদেশ স্বাধীন করে গেছেন।

তিনি বলেন, শুধু এটুকুই চাই এদেশের মানুষ সজাগ থাকবে। ঐ খুনীদের হাতে যেন এদেশের মানুষকে আর নিগৃহীত হতে না হয়। আর অগ্নিসন্ত্রাস ও জুলুমবাজি করে যেন এদেশের মানুষকে হত্যা করতে না পারে, এদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে সেটাই আজকের দিনে আমাদের প্রতিজ্ঞা। আল্লাহ যখন বাঁচিয়েই রেখেছেন, বার বার মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করেছেন তাই যতক্ষণ বেঁচে আছি এদেশের মানুষের সেবা করে তাদেরকে উন্নত জীবন দিয়ে যাব।

শেখ হাসিনা বলেন, এই বাংলাদেশ আজকে ঘুরে দাঁড়িয়েছে, বিশ্বে মর্যাদা পেয়েছে। এই মর্যাদা নিয়েই বাংলাদেশ এগিযে যাবে এবং সেভাবেই বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। ঐ খুনী, দুস্কৃতিকারী, চোর, অস্ত্র চোরাকারবারী, মানিলন্ডারিং, ঘুষখোর আর বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে। তাদের প্রতি ঘৃণা বাংলাদেশের জনগণের। আমি চাই দেশের প্রত্যেকটা মানুষ তাদের ঘৃণা জানাক, সেটাই আমি আজ বলব।

সভায় আরো বক্তৃতা করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ সভা সঞ্চালনা করেন।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী ২১ আগষ্ট শহীদদের স্মরণে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রিয় কার্যালয়ের সামনে নির্মিত শহীদ বেদিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। তিনি আওয়ামী লীগ সভাপতি হিসেবে দলের সিনিয়র নেতৃবৃন্দকে সঙ্গে নিয়ে পরে দলের পক্ষ থেকেও আরেকবার সেখানে শ্রদ্ধাঞ্জলী অর্পণ করেন। এরপরই সেদিনে নিহতের স্বজন এবং আহতদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন প্রধানমন্ত্রী।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © banglarprotidin.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazarbanglaro4451