আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সংলাপ শব্দটি নিয়ে কোনো আলাপ-আলোচনা হয়নি। তবে শর্তহীন সংলাপ করতে চাইলে তাতে আওয়ামী লীগ রাজি হতে পারে।
রোববার (১৫ অক্টোবর) দুপুরে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, বিএনপি চায় প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ, সংসদ ভেঙে দেওয়া, নির্বাচন কমিশন বাতিল করা এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা করা। এই চার শর্তে তারা সংলাপ করতে চায়। কিন্তু বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ শর্ত নিয়ে সংলাপে বসবে না। শর্তহীন সংলাপ করতে চাইলে আওয়ামী লীগ বিবেচনা করবে।
এর আগে সংলাপের পথ বিএনপি বন্ধ করেছে—ওবায়দুল কাদেরের এমন মন্তব্যের জবাবে গত ১১ অক্টোবর এক সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এটা বাজে কথা, এটা কত বড় মিথ্যা কথা আপনারা ভালো করেই জানেন। আমরা বরাবরই বলে এসেছি, একটা বিষয়ে আলোচনা হতে পারে, অন্য কোনো বিষয়ে না। সেটা হচ্ছে, নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়ে আলোচনা ছাড়া আর কোনো বিষয়ে আলোচনা হতে পারে না। তবে সেটা অবশ্যই সরকারকে আগে ঘোষণা দিতে হবে যে, আমরা মেনে নেব, এবার আসো নিরপেক্ষ-নির্দলীয় সরকারের বিষয়ে কথা বলি, কীভাবে হতে পারে। বাট শি মাস্ট রিজাইন।’
এদিকে রোববার সকালে অংশগ্রহণমূলক ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য অর্থবহ সংলাপসহ পাঁচ পরামর্শ দিয়েছে মার্কিন প্রাক-নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দল।
চলতি মাসের ৮ থেকে ১২ অক্টোবর পর্যন্ত ঢাকা সফর করে যুক্তরাষ্ট্রের থিংক ট্যাংক ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট (আইআরআই) ও ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউটের (এনডিআই) একটি যৌথ প্রতিনিধিদল। দেশে ফিরেই প্রতিনিধিদল বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে পাঁচটি মতামত তুলে ধরেছে।
প্রথমেই নির্বাচন ইস্যুতে সংলাপের আহ্বান করা হয়েছে। পাশাপাশি রাজনীতির ক্ষেত্রে মধ্যপন্থা অবলম্বন করার আহ্বানও জানানো হয়েছে।
প্রতিনিধিদল তাদের দ্বিতীয় প্রস্তাবে নির্বাচনের সময় মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষা করতে অনুরোধ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে সব নাগরিকের ভিন্ন মতকেও সম্মান জানাতে বলা হয়েছে ।
মার্কিন নির্বাচনী মিশন তাদের তৃতীয় প্রস্তাবনা অহিংসার প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থেকে রাজনৈতিক সহিংসতার সঙ্গে জড়িত অপরাধীদের জবাবদিহির আওতায় আনতে আহ্বান জানিয়েছে।
সবশেষে, দেশের সব রাজনৈতিক দলকে অর্থবহ ও সমান রাজনৈতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের সুযোগ দিতে বলা হয়েছে, যেন তা স্বাধীন নির্বাচন পরিচালনার প্রক্রিয়াকে শক্তিশালী করে।
এ ছাড়া দেশের নাগরিক যেন অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে পরামর্শ দেওয়া হয় প্রতিনিধিদলের প্রস্তাবনায়।