খুলনা প্রতিনিধি,
সৌদি আরব থেকে এসেই নিজের স্ত্রীকে নৃশংস কায়দায় হত্যার নেপথ্যে যে ঘটনা ! দীর্ঘ তিনবছর পর কর্মক্ষেত্র সৌদি আরব থেকে গত সপ্তাহেই দেশে ফিরে এসেছিলেন নুরুন্নবী (২৪) নামের ঐ যুবক। বিয়ের পরই গ্রামের বাড়িতে স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা টুকটুকি (১৭) কে কাজের জন্য চলে যেতে হয় সৌদি আরবে। সেই যুবক এতদিন পর এসে নতুন বউকে কেন এমন নৃশংস কায়দায় হত্যা করলো সে প্রশ্ন আর কৌতুহল এলাকার সবার মনে।
স্ত্রীকে নৃশংস কায়দায় হত্যার নেপথ্যে
এর আগে শনিবার রাতে খুলনা মহানগরীতে আয়শা সিদ্দিকা টুকটুকি তার স্বামীর কাছে নির্মম হত্যার শিকার হন।
প্রাথমিক তদন্তের বরাত দিয়ে পুলিশ জানান শনিবার সন্ধ্যা পৌনে ৭টায় মহানগরীর পশ্চিম টুটপাড়া মওলার বাড়ি মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। খুনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে নিহতের স্বামী নুরুন্নবীকে (২৪)কে এলাকাবাসির সহায়তায় গ্রেফতার করে পুলিশ ।
খুলনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিক আহমেদ জানান,
সৌদি আরব প্রবাসী নুরুন্নবী ভূঁইয়া ছয়দিন আগে দেশে আসেন। তিনি পাঁচদিন ধরে টুটপাড়ায় শ্বশুরবাড়িতে অবস্থান করছিলেন। শনিবার সন্ধ্যায় ইফতারির সময় নুরুন্নবী তার স্ত্রীকে একতলা ভবনের ছাদে কবুতর দেখাতে গিয়ে কুপিয়ে ও ইট দিয়ে মাথা থেঁতলে হত্যা করেন। এ সময় নিহত আয়েশার বোন চিৎকার করলে এলাকাবাসী নুরুন্নবীকে আটক করে পুলিশে দেয়। লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেছে পুলিশ।
ওসি জানান, নুরুন্নবী স্ত্রীকে নৃশংস কায়দায় হত্যার নেপথ্যে র ঘটনা সম্পর্কে সে পুলিশকে জানিয়েছেন, তার স্ত্রীর সঙ্গে পরপুরুষের সম্পর্ক রয়েছে বলে তিনি সন্দেহ করেন। তাই ক্ষিপ্ত হয়ে এই ঘটনা ঘটিয়েছেন।
স্ত্রীকে নৃশংস কায়দায় হত্যার নেপথ্যে র ঘটনা অনুসন্ধানের বরাত দিয়ে খুলনা থানার ওসি শফিক আরও বলেন,
শনিবার ইফতারের পর টুকটুকি তার স্বামী নুরুন্নবীর সাথে ছাদে যায়। সেখানে নেয়ার পর বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করে। এতে ঘটনাস্থলেই টুকটুকি নিহত হয়। এ ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে যায় এবং স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় তার স্বামী নুরুন্নবীকে গ্রেফতার করা হয়। ইটের আঘাতে টুকটুকির মাথা থেতলে গেছে।
নিহত টুকটুকির বাবা মেহনাজ মুন্না জানান,
শনিবার ইফতারির সময় এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে। গত সপ্তাহে দেশে আসে এবং গোপালগঞ্জের বাড়িতে যায়। সেখান থেকে বৃহস্পতিবার সে খুলনায় আসে। এখানে আসার পর স্বামী-স্ত্রী দু’জন পাশেই থাকা টুকটুকির মামা আরিফের বাড়িতে বেড়াতে যায়। সেখানে দোতলা বাড়ির ছাদের ওপর তাকে হত্যা করা হয়।
টুকটুকির বোন জান্নাতুল মাওলা তমা জানায়,
মামা আরিফের বাড়িতে টুকটুকির বাড়িতে সেও গিয়েছিল। সেখানে তার বোন ও দুলাভাই দু’জনের মধ্যে বাক বিতন্ডা হয়েছিল। এক পর্যায়ে দুলাভাই নুরুন্নবী বাড়িতে যাওযার জন্য বললে তমা বাড়ি চলে যায়। এর কিছুক্ষণ পর নুরুন্নবী বাড়িতে এসে জানায় সে টুকটুকিকে মেরে ফেলেছে। এ সময় তার হাতে রক্তামাখা ছিল। এরপর ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে টুকটুকির লাশ দেখতে পায়। এ সময় লাশের মুখবাধা ছিল।