ঢাকায় প্রতিনিয়ত বসবাসকারীর সংখ্যা বাড়লেও বাড়ছে না গণ মানুষের পরিবহনের সংখ্যা। তাই ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও অনেকেই বাসে উঠতে না পেরে সঠিক সময়ে পৌঁছাতে পারেননা গন্তব্যে। এদিকে, বিআরটিসি বাসের শতভাগ সুবিধা পাননা নগরবাসী। নগর পরিকল্পনাবিদরা বলছেন, গণ পরিবহন সংকটের সমাধানে বেসরকারি পরিবহন মালিকদের পাশাপাশি কাজ করতে হবে বিআরটিসিকেও।
সাপ্তাহিক কর্ম দিবস রোববার সকাল ১০টার চিত্র। স্থান সচিবালয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা। সাঁরি সাঁরি দাঁড়িয়ে রয়েছে বিআরটিসি বাস। আর এ চিত্রটি একই সময়ে একটি প্রধান সড়কের। গণপরিবহনে ওঠার এ যেন নিরন্তন এক প্রচেষ্টা। পর্যাপ্ত পরিবহন না থাকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঝুলে যাওয়া যেন প্রতিদিনের নিয়ম।
যাত্রীরা বলেন, দশ বিশ বছর আগে নামা বাস গুলো এখনো আছে। এছাড়া বাস ফেল করলে কোন ভাবে উঠা সম্ভব হয়না। অনেকে বলেন সি এন জিতে আসতে হলে অনেক টাকা লাগে, সেটা সবার পক্ষে সম্ভব না।
সরকারি পরিবহনের হিসেব দেখতে এবার যাওয়া যাক রাজধানীর বিআরটিসির মিরপুর ডিপোতে। খাতার হিসেব বলছে এই ডিপোর চলাচলের উপযোগী ৭৫ টি বাসের মধ্যে মাত্র ১৬ টি বাস প্রতিদিন চলাচল করছে নগর মানুষের সেবার কাজে। আর বাকি বাসগুলো দিনে একবার ব্যবহৃত হয় শুধুমাত্র স্টাফ বাস হিসেবে।
তবে, কর্তৃপক্ষ বলছে যেসব বাস চলাচলের উপযোগী সেগুলো খুব শিগগিরি ছেড়ে দেয়া হবে গণ মানুষের জন্য। বি আর টি সি র চেয়ারম্যান বলেন, তারা সার্ভে করার চিন্তা করেছেন, গণ পরিবহণের ক্ষেত্রে এই বাস গুলোকে কিভাবে কাজে লাগানো যায়। এছাড়া স্টাফ বাসগুলো ফেলে না রেখে যেগুলো রাস্তায় চলাচলের উপযোগী সেগুলো রাস্তায় নামানোর কথা জানালেন তিনি।
নগরবিদরা বলছেন, দেশের সাধারণ মানুষের যাতায়াতের সুবিধার জন্য যে বাস ক্রয় করা হয়েছে তা যেন তাদের কাজে ব্যাবহার হয় তা নিশ্চিত করতে পারলে অনেকটাই লাঘব হবে এই সমস্যার। নগর বিশেষজ্ঞ মোবাশ্বের হোসেন বলেন, জনগণের ট্রান্সপোর্ট আগে জনগণের সুবিধা দেখবে পরে আয় এর কথা আসবে। তিনি আরো বলেন, লস না দিয়ে যেনো প্রতিষ্ঠান গুলো চলে এ ব্যপারে পরামর্শ থাকবে তার।
এক হিসেব বলছে রাজধানীতে প্রায় ৪ হাজার যাত্রীর জন্য রয়েছে একটি মাত্র গণ-পরিবহন। বেসরকারি এক হিসেব বলছে ঢাকা শহরের প্রায় এক কোটি মানুষ প্রতিদিন কোন না কোন কাজে রাস্তায় বের হন। যাদের মধ্যে মাত্র ৪-৫শতাংশ মানুষ ব্যাবহার করেন ব্যাক্তিগত গাড়ি। আর তাদের দখলে থাকে নগরীর ৮০ শতাংশ রাস্তা। আর বাকি ৯৫ শতাংশ মানুষ ব্যাবহার করেন গণপরিবহন যাদের দখলে থাকে কিনা মাত্র ২০ শতাংশ রাস্তা। তাই নগর বিশেষজ্ঞরা বলছেন ঢাকার পরিবহন ব্যাবস্থাকে নতুন করে ঢেলে সাজালেই দুর্ভোগ কমে আসবে। আর এ জন্য বেসরকারী পরিবহন ব্যাবস্থার পাশাপাশি দায়িত্ব নিতে হবে বিআরটিসিকেও।