হেলাল শেখ – ঢাকা ঃ
ঢাকার সাভার উপজেলার আশুলিয়া, জামগড়া ও দক্ষিণ গাজীরচটের আয়নাল মার্কেট
এলাকায় এবং সাভার ক্যান্টনম্যেন্টের ফায়ার রেঞ্জের পাশে চায়না নাগরিক দ্বারা পরিচালিত
ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে মাদক ও জুয়া দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে।
জানা গেছে, কিছুদিন আগে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-১ অভিযান চালায়। র্যাব
সদস্যদের অভিযানের শুরুতেই সে বাসার ভিতরে ঢুকতে বাধা দেয় চায়নাদের সাথে থাকা
কিছু বাঙালী বক্তিরা। ওই দিন প্রায় ১ ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে গেটের তালা ও জানালার
গ্লাস ভেঙ্গে ভিতরে ঢুকে র্যাব সদস্যরা, এ সময় সাংবাদিকরা ভিতরে ঢুকতে চাইলে
ভিতরে ঢুকতে দেয়া হয়নি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক র্যাব সদস্য জানান, ভিতরে
তল্লাশি করে গেমসের নামে জুয়া খেলার বোর্ড, নেশা দ্রব্যের তিন থেকে চার কার্টুন
খালি বোতল, দুইজন চায়নিজ পুরুষ সহ ৪ জন বাঙালী নারী ও এক জন পুরুষকে পাওয়া
যায়।
জানা যায়, সেখান থেকে চায়না নাগরিকদের পাসপোর্ট ও গেমসের নামে জুয়া খেলার
বোর্ডের কোন বৈধ কাগজ দেখাতে পারেনি কেউ। প্রায় ২ ঘন্টা ধরে তল্লাশি করে র্যাব
সদস্যরা, তবে কাউকে আটক করা হয়নি। রহস্যজনক ভাবে দীর্ঘ অভিযানে কাউকে আটক
না করার কারণ জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অস্বিকৃতি জানিয়ে এক র্যাব সদস্য বলেন,
আমাদের ইনফরমেশন মতে যে মাদক দ্রব্য পাওয়ার কথা, তা পাওয়া যায়নি, পেয়েছি ওই
মাদকের কার্টুন ভর্তি খালি বোতল। তরল মাদক না পাওয়ায় কাউকে আটক করা সম্ভব
হয়নি।
স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন যাবত এই চক্রটি পুলিশ প্রশাসনের নাম ভাঙ্গিয়ে চাইনিজ
গেমসের ব্যবসার নামে জুয়া ও মাদক ব্যাবসা চালিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন এলাকায়। কিছু
ছিনতাইকারী, চোর, ডাকাত ও চাঁদাবাজদের সাথে মিলে এই অবৈধ কর্মকান্ড
চালাচ্ছে, এর কারণে এলাকার কেউ এদের বিরুদ্ধে কিছু বলার সাহস পায় না। জানা যায়,
চায়নারা বিদেশী নাগরিক হওয়ায় নিয়ম তান্ত্রিকভাবে এলকাহল ব্যবহারের অনুমতি
রয়েছে, আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে মাদক ব্যবসায়ীরা তাদের সাথে মাদকের রমরমা
ব্যাবসা করছে, আর চাইনিজ গেমসের নামে বিভিন্ন স্পটে গোপনে ও প্রকাশ্যে
চালিয়ে যাচ্ছে লাখ লাখ টাকার জুয়া খেলা। যার কারনে নিজের অজান্তেই চায়না খেলা
খেলতে এসে ধংসের বেড়াজালে আটকে যাচ্ছে শত শত শিশু, কিশোর, যুবক,ও শিল্প এলাকার
শ্রমিকরা। এছারাও সন্ধ্যা থেকে গভীর রাতে দামি গাড়ী এবং অটো রিকসায় করে
অপরিচিত নারী পুরুষ সেখানে আসা যাওয়া করে বলে এলাকাবাসী জানান। এদের কারনে
বিভিন্ন এলাকার কিশোর ও যুবকদের নৈতিক অবক্ষয় হচ্ছে, অনেকের ভবিষ্যৎ অন্ধকারে
ডুবে যাচ্ছে।
সাভার ক্যান্টনমেন্ট এরিয়া হওয়ায় এখানকার বসবাসরত মানুষগুলো বেশিরভাগ রানিং
সেনা সদস্য ও অবসর প্রাপ্ত সেনা সদস্যদের পরিবার, এবং শিল্প কারখানার শ্রমিক
কর্মকর্তা তাই এইসব পরিবারগুলোই ভুক্তভুগী। এলাকাবাসীর দাবি ক্যান্টনমেন্ট ও পুলিশ
প্রশাসন যেন এই জুয়া ও নেশার চক্রটির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করেন। উক্ত
ব্যাপারে পুলিশের উপর মহলকে জানানো হলে- বলা হয়, সঠিক তথ্য বিস্তারিত এস এম এস
করে পাঠিয়ে দিলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। জানা গেছে, এই জুয়ার আসর থেকে আশুলিয়া
থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে জামগড়া এলাকা থেকে ৬ জনসহ বেশ কয়েকজন জুয়ারু ও
মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করেছেন। বর্তমানে আশুলিয়া থানার ২০০ গজ নিকটে ৩টি
স্পটে লটারীর নামে জুয়া চলছে। স্থানীয়রা বলছেন, পুলিশের নাকের ডগায় কি ভাবে জুয়া
চালায় তারা?