সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলায় দুই শিশুপুত্র হত্যার ঘটনায় তাদের বাবা সাতির আলীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ বুধবার সকালে সিলেট জেলা পুলিশের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে গ্রেপ্তারের কথা নিশ্চিত করেন পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মনিরুজ্জামান।
হত্যাকাণ্ডের তদন্তে উঠে আসা বিভিন্ন তথ্য সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) সুজ্ঞান চাকমা।
গত সোমবার সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলার চিন্তামনি গ্রামের একটি ডোবা থেকে দুই শিশুর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। শিশুদের নাম রুজেল আহমদ (১১) ও মামুন আহমদ (৭)। ঘটনার পর থেকে তাদের বাবা সাতির আলী পলাতক ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আজ সকালে ওসমানীনগর উপজেলার চিন্তামনি গ্রামের শেষপ্রান্তে একটি পরিত্যক্ত কালীবাড়ি থেকে সাতির আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে সাতির আলী জানিয়েছেন, ঘটনার দিন দুই শিশুপুত্র নিয়ে তিনি মাছ ধরতে গিয়েছিলেন। ঘণ্টাখানেক পর তিনি বড় ছেলে রুজেলকে কিছু মাছ দিয়ে বাড়িতে পাঠান। বড় ছেলে চলে গেলে তিনি ছোট ছেলে মামুনকে লাঠির আঘাতে হত্যা করেন। পরে বড় ছেলে ফিরে এলে তাকেও মাথায় আঘাত করে হত্যা করেন।
পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, প্রথম দিকে বলা হচ্ছিল, গ্রেপ্তার সাতির আলী মানসিক ভারসাম্যহীন। তবে তদন্তে দেখা গেছে, তিনি পরিকল্পিতভাবেই দুই শিশুপুত্রকে হত্যা করেছেন। পরে লাশ ডোবায় ফেলে দেওয়া এবং পালিয়ে যাওয়ার ঘটনাও মানসিক অসুস্থতার প্রমাণ করে না। তারপরও বিষয়টির জন্য বিশেষজ্ঞের মতামত নেওয়া হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরো জানানো হয়, পারিবারিক কলহ থেকে শিশুপুত্র হত্যার ঘটনা ঘটেছে। সাতির আলী কয়েক দিন ধরেই তাঁর স্ত্রী নুরবিন বেগমকে সন্দেহ করতেন। তিনি ঘরে নিজে রান্না করে খাওয়া-দাওয়া করতেন। এ নিয়ে স্ত্রী নুরবিন বেগম আতঙ্কিত ছিলেন। তিনি ঘরের ধারালো জিনিসপত্রও সরিয়ে রাখতেন।
পুলিশকে নুরবিন বেগম জানিয়েছেন, এ রকম ঘটনা ঘটতে পারে ভেবে তিনি সব সময় সতর্ক থাকতেন। তাঁর আশঙ্কা ছিল, স্বামী তাঁকে আঘাত করতে পারেন। কিন্তু দুই শিশুপুত্রকে হত্যা করবেন, এমনটা তাঁর ধারণায় ছিল না।