প্লাবন গুপ্ত শুভ, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
নিয়মনীতিকে উপেক্ষা করে দিনাজপুরের নবাবগঞ্জে গোপালগঞ্জ ইউনিয়নের হরিপুর এলাকার
সংরক্ষিত বন, ফসলি জমি ও বসতি ঘেঁষে অবৈধভাবে নির্মাণ করা হচ্ছে ইটভাটা।
বন বিভাগরে বাধার পরও নির্মাণ কাজ বন্ধ করেননি ইটভাটা মালিকরা। বন বিভাগের
কর্মকর্তারা বলছেন ইটভাটার নির্মাণ কাজ বন্ধের জন্য প্রশাসনকে জানিয়েও কোন কাজ
হচ্ছে না।
ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০১৩ এর ৮ধারায় বলা আছে, কৃষি জমি,
আবাসিক এলাকা, সরকারি বা ব্যক্তিগত বন, অভয়ারণ্য, বাগান বা জলাভূমিতে ইটভাটা স্থাপন
করা যাবে না। ৮ (২) ধারায় বলা আছে, নিষিদ্ধ এলাকার সীমানার মধ্যে ইটভাটা স্থাপনের জন্য
পরিবেশ অধিদপ্তর বা অন্য কোন কর্তৃপক্ষ অনুমতি বা ছাড়পত্র বা লাইসেন্স প্রদান করতে পারবে
না।
দিনাজপুর বন বিভাগের চরকাই রেঞ্জের হরিপুর বিটের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিট কর্মকর্তা
নিশিকান্ত মালাকার বলেন, বন বিভাগের দুই কিলোমিটারের মধ্যে কোন ইটভাটা নির্মাণ
করা যাবে না। কিন্তু হরিপুর বিট কার্যালয়ের মাত্রা ৫০০গজের মধ্যে হরিপুর মৌজার ২১৭ ও ২১৮
নং দাগে গোলাপগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য রফিুকল ইসলাম, ইসলামপুর উচ্চ
বিদ্যালয়ের অফিস সহকারি সামছুল ইসলাম, হরিপুর গ্রামের ওয়াজেদ আলী ও মোস্তাফিজার
রহমান ইটভাটা নির্মাণ করছেন। ইটভাটা নির্মাণকারিরা প্রভাবশালী হওয়ায় বন বিভাগের
পক্ষ থেকে বাধা দিয়েও বন্ধ করা যাচ্ছে না। বিষয়টি গত ১৮অক্টোবর উপজেলা নির্বাহী
কর্মকর্তাসহ বন বিভাগের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, বন বিভাগের হরিপুর বিট কার্যালয়ের উত্তর পার্শ্বে ফসলি জমির
মধ্যে ইটভাটার নির্মাণ কাজ চলছে। ইতোমধ্যে ৫০হাত উচু চিপনী তৈরির কাজও শেষ হয়ে
এসেছে। ট্রাক্টও দিয়ে আনা হচ্ছে ইট তৈরির মাটি আর বালু। ইটভাটার চতুর্দিকেই রয়েছে
বসতি। আর ফসলি জমি।
ইটভাটা সংলগ্ন বাড়ির সামনে মুদিও দোকানী সাইদুর রহমান বলেন, ইটভাটা
নির্মাণ আমাদের এখানে থাকা মুশকিল হয়ে যাবে। অনবরত ধুলা আর ছাই আমাদের মরণ
ডেকে আনবে। চেয়ারম্যানকে বন্ধ করার জন্য বলার পরও কেন বা বন্ধ করা হলো না। কাজ ওরা জোরো
সোরেই চালায় যাচ্ছে।
সামছুল ইসলাম যৌথভাবে ইটভাটা নির্মাণের কথা স্বীকার করে বলেন, পরিবেশ ছাড়পত্র
ও লাইসেন্স সংক্রান্ত কোন কিছু জানতে হলে পাটনার রফিকুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ
করতে বলেন।
ইউপি চেয়ারম্যান রাশেদুল কবির বলেন, ইটভাটা নির্মাণের বিষয়ে বন বিভাগ কিংবা
স্থানীয়রা কেউই কোন কিছু তাকে জানায়নি।
পরিবেশ অধিপ্তরের রংপুর কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক আখতারুজ্জামান বলেন, পরিবেশ
ছাড়পত্র ভাড়া কেউই ইটভাটা নির্মাণ করতে পারবেন না। পরিবেশ আইন অমান্য করে কাউকে
ছাড়পত্র দেয়া হবে না। আইন অমান্য করে কেউ ইটভাটা নির্মাণ করলে প্রচলিত পরিবেশ আইনে
তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. বজলুর রশীদ বলেন, প্রশিক্ষণে থাকায় বিষয়টির
ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া যায়নি। তবে তদন্ত সাপেক্ষে ঐ ইটভাটা উচ্ছেদ করা হবে।