শনিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৪, ০৭:৫৭ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
নিষিদ্ধ হওয়া ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা গ্রেপ্তার রাজধানীতে নিষিদ্ধঘোষিত হিজবুত তাহরীরের ২ সদস্য গ্রেপ্তার বগুড়ায় আইন কর্মকর্তা নিয়োগ বিএনপি-জামায়াতপন্থি ১০৭ জন অতি বৃষ্টির কারণে লালমনিহাট জেলায় বন্যা নিম্ন অঞ্চল প্লাবিত বগুড়ায় ট্রাক পরিবহনের সভাপতি-সম্পাদকের বিরুদ্ধে ১০ কোটি টাকার আত্মসাৎ ও মামলা টিএমএসএস সদস্যদের (RAISE) প্রকল্পের উন্নয়ন বিষয়ক প্রশিক্ষণ দীর্ঘ ১৩ বছর পর আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে চাকুরী ফেরত পেলেন প্রধান শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক আশুলিয়ায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত ও নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় দোয়া ও মিলাদ মাহফিল পরিত্যক্ত চুল পুনরায় ব্যবহারের মাধ্যমে ভাগ্য বোনার চেষ্টা আদিতমারীর নারীদের। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চিফ প্রসিকিউটর হলেন অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম

পানি নিরাপত্তায় বিশ্বনেতাদের ঐক্যের ডাক প্রধানমন্ত্রীর

বাংলার প্রতিদিন ডেস্ক ::
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ২৯ নভেম্বর, ২০১৬
  • ১৪৮ বার পড়া হয়েছে

অনলাইন সংবাদদাতা,

পানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে একসঙ্গে কাজ করার জন্য বিশ্বনেতাদের প্রতি আহ্বান জানালেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রোববার হাঙ্গেরির রাজধানী বুদাপেস্টে বিশ্ব পানি শীর্ষ সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে এ আহ্বান জানান তিনি।

পানি থেকে জীবন উৎসারিত, পানিতেই টিকে থাকে জীবন-এ আপ্তবাক্য স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, পৃথিবীতে মর্যাদার ও সুন্দর জীবন-যাপন নিশ্চিত করতে পানির নিরাপত্তা অপরিহার্য। সেই লক্ষ্য অর্জনে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের যা যা করা দরকার তার সবই করবো।

বুদাপেস্টের মিলিয়েনারিজ পার্কে এ সম্মেলনে এক ডজনেরও বেশি রাষ্ট্র কিংবা সরকারপ্রধান অংশ নিয়েছেন। যোগ দিয়েছেন বিশ্বের বাঘা বাঘা পানি বিশেষজ্ঞ ও বিশ্লেষকরা।

তাদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের সামাজিক উন্নয়ন, অর্থনৈতিক অগ্রগতি ও টেকসই পরিবেশের জন্য পানি অপরিহার্য। তাই এর নিরাপত্তা জরুরি।

হাঙ্গেরি প্রেসিডেন্ট জ্যানোস আদেরকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, এ সম্মেলন আমাদের সবার জন্য মহামূল্যবান।

বাংলাদেশ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সংস্কৃতির বড় অংশজুড়ে রয়েছে পানি। আমাদের জীবন ও জীবিকার জন্যও এটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। আর আমরা যেখানে বসে কথা বলছি, পানির বৈশ্বিক ডিসকোর্স তৈরিতে এ দেশটির রয়েছে বড় অবদান। ২০১৩ সালে বুদাপেস্ট পানি সম্মেলনেরই অবদান হিসেবে আমরা ২০৩০ সালের বিশ্বের জন্য পানি সম্পর্কিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষমাত্রা পেয়েছি।

গেলো সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘে হাই লেভেল প্যানেল অব ওয়াটার গৃহীত হবার কথা স্মরণ করে তিনি  বলেন, এ অধিবেশনে আমরা সব রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানসহ অন্য নেতারা পানি সম্পর্কিত ইস্যুতে অগ্রাধিকার দিয়েছি।

বক্তৃতায় পানি নিয়ে ৭টি পয়েন্ট অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরেন শেখ হাসিনা। সেগুলো হলো-

১. এজেন্ডা ২০৩০ এ টেকসই উন্নয়ন ও পানির মধ‌্যে যে আন্তঃসম্পর্কের কথা বলা হয়েছে, সে অনুযায়ী জাতীয়, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক পর্যায়ে যে কোনো উন্নয়ন প্রচেষ্টার আলোচনায় পানির বিষয়ও থাকতে হবে।

২ বিশ্বের লাখ লাখ মানুষের সুপেয় পানি ও ন‌্যূনতম পয়ঃনিষ্কাশন চাহিদা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, কারণ পানির যে সরবরাহ রয়েছে তার পর্যাপ্ত ও নিরাপদ নয়। এক্ষেত্রে সমাজের পিছিয়ে পড়া অংশ, বিশেষ করে দরিদ্র, নারী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে।

৩. যেসব দেশ জলবায়ু পারিবর্তনের কারণে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে আছে, তাদের সবচেয়ে বেশি সমস‌্যায় পড়তে হচ্ছে পানির কারণে। কাজেই পানি সংক্রান্ত দুর্যোগ মোকাবিলায় সক্ষমতা গড়ে তোলা জরুরি। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অভিযোজন প্রক্রিয়াকেও অগ্রাধিকার দিতে হবে।

৪. পানি নিয়ে আজকের এই সঙ্কট এর অপ্রতুলতার জন্য নয়, সুষম বণ্টনের অভাবে তৈরি হয়েছে। এর একটি স্থায়ী ও টেকসই সমাধান হতে পারে আন্তঃসীমান্ত নদীর পানি ব্যবস্থাপনা।

৫. কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তার জন‌্য পানি জরুরি। আমাদের অবশ্যই কম পানি লাগে এমন ফসল এবং পানি সাশ্রয়ী প্রযুক্তির উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে হবে।

৬. যেসব উদ‌্যোগ একটি দেশকে পথ দেখাচ্ছে, তা অন‌্যদের সঙ্গে অবশ‌্যই বিনিময় করতে হবে, যাতে পানি সম্পদের যথার্থ ব্যবহার নিশ্চিত করতে জ্ঞান, ক্ষমতা, দক্ষতা ও কৌশলের উন্নয়ন ঘটানো যায়।

৭. পানি সংক্রান্ত লক্ষ্য পূরণে অর্থায়নের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পানি বিষয়ে গবেষণা, উদ্ভাবন ও প্রযুক্তি হস্তান্তরের জন্য একটি আন্তর্জাতিক হতবিল গড়ে তুলতে হবে এবং এর সুফল সবচে সুবিধাবঞ্চিত মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে।

নিরাপদ পানি সরবরাহে সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি) বাংলাদেশ এরই মধ্যে অর্জন করেছে, স্যানিটেশন খাতেও ব্যাপক অগ্রগতি নিশ্চিত করা গেছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বিশ্ব ফোরামকে জানান, দেশের ৬৫ শতাংশ জনগোষ্ঠী উন্নত স্যানিটেশন সুবিধার আওতায় রয়েছে। ২০২১ সালের মধ্যে দেশের সবার জন্য নিরাপদ খাবার পানি নিশ্চিত করা আর ৯০ শতাংশ মানুষকে উন্নত স্যানিটেশনের আওতায় আনার সরকারি অঙ্গীকারের কথাও এসময় তুলে ধরেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সবচেয়ে হুমকির মুখে থাকা দেশ হিসেবে সরকার এরই মধ্যে তা মোকাবেলায় ধারাবাহিক উদ্যোগ নিয়েছে, যার মধ্য পূর্ব-সতর্কতা ব্যবস্থা, সাইক্লোন সেন্টার, উপকূলীয় এলাকাজুড়ে সবুজ বেষ্টনী তৈরি বিশ্বের নজর কেড়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্ষায় পানির ঢল, আর শুকনো মৌসুমে পানির অভাব, এ এক বিশেষায়িত চ্যালেঞ্জ বাংলাদেশ মোকাবেলা করে আসছে। আর অপর নাজুক দিকটি হচ্ছে, দেশের উপরিতলের ৯২ শতাংশ পানিই আসে সীমান্তের ওপার থেকে। আর সে কারণে, আন্তঃসীমান্ত পানি বণ্টন একটি জটিল সঙ্কট হয়ে রয়েছে। গেলো দু’ দশক আগে বাংলাদেশ সাফল্যের সঙ্গে গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তি করতে সক্ষম হয়েছে। আর বাংলাদেশ-ভুটান-ভারত ও নেপালের মধ্যে উপ-আঞ্চলিক পানি-সহযোগিতার বিষয়টিও সঠিকভাবেই এগোচ্ছে।

পানি আন্তঃদেশীয় অসমতাকে আরও ঘনীভূত করতে পারে এ আশঙ্কার কথা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, এ সময়ে পানিসম্পদের সুরক্ষা, সাশ্রয়, সংরক্ষণ ও ব্যবহার সুনিশ্চিত করতে সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে।

তিনি বলেন, এতে যে কেবল পানির অসম ব্যবহারই দূর হবে তাই না, এর মধ্য দিয়েই পানির গতিপথ ধরে গড়ে ওঠা প্রতিটি সমাজ-সভ্যতায় আসবে শান্তি, স্থিতিশীলতা আর নিরাপত্তা।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © banglarprotidin.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazarbanglaro4451