ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়ায় পুলিশের লাঠিপেটায় কলেজের এক শিক্ষকসহ দুজন নিহত হওয়ার পর থেকে প্রায় ৩৬ ঘণ্টা ধরে ১৪৪ ধারার কবলে রয়েছেন এলাকাবাসী। ফুলবাড়ীয়া পৌর সদর এলাকায় সব ধরনের সভা, সমাবেশ, মিটিং ও মিছিল বন্ধ রয়েছে।
বন্ধ রয়েছে ফুলবাড়ীয়া কলেজের ক্লাস-পরীক্ষা। তবে শহরের অন্য সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে।
এদিকে উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে ফুলবাড়ীয়া উপজেলা পরিষদে আজ অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া আইনশৃঙ্খলা কমিটির বৈঠক স্থগিত করা হয়েছে। কমিটির সদস্য ফুলবাড়ীয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি নুরুল ইসলাম খান জানান, ১৪৪ ধারা বলবৎ থাকার কারণে সভা স্থগিত করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লীরা তরফদারকে টেলিফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।
গত রোববার ফুলবাড়ীয়া কলেজ সরকারীকরণের দাবিতে আন্দোলনকারীদের লাঠিপেটা করে পুলিশ। এতে কলেজের সহকারী অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ ও মাছ বিক্রেতা সফর আলী নিহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে গতকাল সোমবার সকাল থেকে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়।
ফুলবাড়ীয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রিফাত খান রাজিব জানিয়েছেন, অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি মোকাবিলায় পুলিশি টহল অব্যাহত আছে। রোববার সংঘর্ষের পর থেকে আজ মঙ্গলবার পর্যন্ত পুলিশ আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে। আন্দোলনকারীদের হামলা ও ভাঙচুরের ভিডিও ফুটেজ থেকে এদের শনাক্ত করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার হওয়া তিনজনের নাম প্রকাশ করেছে পুলিশ। এঁরা হলেন কাজী গোলাম ফারুক (১৮), জুয়েল মিয়া (২০) ও নাজমুল (১৮)। তবে তাঁদের এর বেশি পরিচয় নিশ্চিত করেনি পুলিশ।
এদিকে ফুলবাড়ীয়া কলেজ সরকারীকরণ আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক অধ্যাপক আবুল হাশেম অভিযোগ করেছেন, রোববারের ঘটনায় ফুলবাড়িয়া থানার ওসি রিফাত খান রাজিবের নেতৃত্বে কলেজ ক্যাম্পাসের ভেতর শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা হয়েছে। নিহত শিক্ষক সেদিন পরীক্ষার ডিউটি করছিলেন। অথচ পুলিশ বলেছে, তিনি হাসপাতালে ছিলেন, যা সত্য নয়। এ ঘটনার জন্য দায়ী পুলিশ সদস্যদের বরখাস্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান অধ্যাপক আবুল হাশেম।
এই শিক্ষক আরো বলেন, তাঁরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। ১৪৪ ধারার কারণে ফুলবাড়ীয়া যেতে পারছেন না। অন্যদিকে রাতে ছাত্রদের বাড়ি বাড়ি তল্লাশি করা হচ্ছে। ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে। তাঁদের নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন বাধাগ্রস্ত করতে স্থানীয় সংসদ সদস্য পুলিশ ব্যবহার করেছেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
এ বিষয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মোসলেম উদ্দিন আহমেদকে ফোন করা হলে তাঁর মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া গেছে।