রাষ্ট্রদ্রোহসহ ১০ মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আগামী ৯ জানুয়ারি আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার মহানগর দায়রা জজ কামরুল হোসেন মোল্লা এ আদেশ দেন।
আজই এই ১০ মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল। কিন্তু খালেদা জিয়া আদালতে হাজির না হওয়ায় তাঁর আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া সময়ের আবেদন করেন। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক আবেদন মঞ্জুর করে ৯ জানুয়ারি খালেদা জিয়াকে আদালতে হাজিরের নির্দেশ দেন।
খালেদা জিয়ার আইনজীবী সৈয়দ জয়নুল আবেদিন মেজবাহ এনটিভি অনলাইনকে জানান, আগামী ৯ জানুয়ারি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় খালেদা জিয়াকে আদালতে হাজির হতে হবে। না হলে তাঁর জামিন বাতিল করা হবে।
খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলাগুলোর মধ্যে রয়েছে মিরপুরের দারুসসালাম থানায় নাশকতার আট মামলা, রাষ্ট্রদ্রোহের একটি ও যাত্রাবাড়ী থানার বিস্ফোরক আইনের মামলা।
রাষ্ট্রদ্রোহের মামলার নথি থেকে জানা যায়, চলতি বছরের ২৫ জানুয়ারি ঢাকা মহানগর হাকিম রাশেদ তালুকদারের আদালতে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক ড. মোমতাজ উদ্দিন আহমদ মেহেদী বাদী হয়ে এ মামলা করেন। ওই মামলায় গত ৫ এপ্রিল খালেদা জিয়া আদালতে হাজির হয়ে জামিন নেন।
আরজিতে বলা হয়, ২০১৫ সালের ২১ ডিসেম্বর বাংলাদেশ ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেন, ‘আজকে বলা হয় এত লক্ষ শহীদ হয়েছে, এটা নিয়েও অনেক বিতর্ক আছে।’
ওই দিন খালেদা জিয়া আরো বলেন, ‘তিনি (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান) বাংলাদেশের স্বাধীনতা চাননি। তিনি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে চেয়েছিলেন। জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা না দিলে মুক্তিযুদ্ধ হতো না।’
এদিকে যাত্রাবাড়ী থানার মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০১৫ সালের ২৩ জানুয়ারি রাতে যাত্রাবাড়ীর কাঠেরপুল এলাকায় গ্লোরি পরিবহনের যাত্রীবাহী একটি বাসে পেট্রলবোমা হামলা হয়। এতে বাসের ২৯ যাত্রী দগ্ধ হন। পরে তাঁদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে ১ ফেব্রুয়ারি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান নূর আলম (৬০) নামের এক যাত্রী।
এ ঘটনায় ২০১৫ সালের ২৪ জানুয়ারি খালেদা জিয়াকে হুকুমের আসামি করে যাত্রাবাড়ী থানায় মামলা করেন থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কে এম নুরুজ্জামান।
মামলার উল্লেখ্যযোগ্য আসামিরা হলেন—বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, স্থায়ী কমিটির সদস্য এম কে আনোয়ার, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, সাবেক যুগ্ম মহাসচিব আমানউল্লাহ আমান, বরকত উল্লাহ বুলু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার মাহবুব হোসেন, শওকত মাহমুদ, বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান সোহেল, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস।
অন্যদিকে, ২০১৫ সালে দারুসসালাম থানা এলাকায় নাশকতার অভিযোগে আটটি মামলা দায়ের করা হয়। এই আট মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আসামি করা হয়।
চলতি বছরে এসব মামলায় ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। অভিযোগপত্রের পর খালেদা জিয়া এসব মামলায় হাজির হয়ে জামিন নেন।