ঢাকা : জঙ্গিদের আচরণের সঙ্গে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের আচরণের ব্যাপক মিল রয়েছে বলে দাবি করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
শুক্রবার (২৪ জুন) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ সব কথা বলেন রিজভী।
তিনি বলেন, ‘টাঙ্গাইল-৩ আসনের সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানা জেলা আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত পলাতক আসামি। টাঙ্গাইলের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মো. আমিনুল ইসলাম তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন এবং গত ১৭ মে আদালত তার মালামাল বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দিয়ে এ বিষয়ে জাতীয় সংসদের স্পিকারকে চিঠি দিয়ে অবহিত করেন। ভোটারবিহীন অবৈধ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর ভাষা অনুযায়ী সব তথ্যই তার জানা আছে।’
তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘এতকিছুর পরে কিভাবে পলাতক আসামি গত ২০ জুন পুলিশের সামনে দিয়ে সংসদে ঢুকে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে বীরদর্পে বেরিয়ে যায়? এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা বলেছেন, সংসদে খুনিরা ঢুকে পড়লে সংসদের নিরাপত্তা কোথায়? এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কি কোনো জবাব আছে?
‘একদিকে বিএনপি নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের গ্রেপ্তার করে জেলে ঢুকাচ্ছে, অপরদিকে সরকারি দলের নেতা হওয়ার সুবাদে পলাতক আসামী হয়েও তিনি সর্বত্র বিচরণ করছেন। এটা শুধুমাত্র দেশে ভোটারবিহীন অবৈধ ও অগণতান্ত্রিক সরকার আছে বলেই সম্ভব হচ্ছে।’
রিজভী বলেন, ‘এই সরকার ও শাসক দলের নেতাকর্মীদের আচরণের সঙ্গে জঙ্গিদের আচরণের ব্যাপক মিল আছে। জঙ্গিরা যেমন আকস্মিকভাবে কারও ওপর আক্রমণ করে, তেমনি এই সরকারও আকস্মিকভাবে বিরোধী পক্ষের ওপর আক্রমণ করে। সরকার দলীয় নেতাকর্মী ও সমর্থকরা যা বিশ্বাস করেন সেটার বিপরীতে কেউ কিছু বিশ্বাস করলেই তার ওপর আক্রমণ করা হয়, তাকে কুপিয়ে মারা হয়। এটি সরকারি দলের বিশেষ বৈশিষ্ট্য।’
তিনি আরও বলেন, ‘জঙ্গিদের মতাদর্শের বাইরে কেউ থাকলে তারা তাকে কুপিয়ে হত্যা করছে। যেভাবে তারা সমকামী, শিয়া মুসলমান, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান যাজক-পুরোহিতকে কুপিয়ে হত্যা করছে। এদের (জঙ্গি) আচরণ, তাণ্ডব ও সহিংসতার সঙ্গে আওয়ামী লীগের সহিংসতার হুবহু মিল রয়েছে।’
এ প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, “পলাতক আসামিরা যদি আওয়ামী লীগের এমপি হন, তাহলে তারা তো সংসদে যান এবং বেরিয়ে আসেন। এটা প্রধানমন্ত্রী জানেন না, তা নয়। আসলে প্রধানমন্ত্রীর যে মানসিক গঠন সেটা জঙ্গিদের গঠনের মতো। তিনি সব সময় ‘ওকে ধরো, তাকে মারো’ এই মানসিকতা পোষণ করেন। তিনি কখনোই শান্তি, স্বস্তি ও সৌহার্দ্যের কথা বলেন না।”
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক এমরান সালেহ প্রিন্স, রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক মেহবুব মাসুম শান্ত প্রমুখ।