পাইকগাছায় আমনের বাম্পার ফলন হলেও আবাদ হয়েছে লক্ষমাত্রার চেয়ে কম।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের চলতি মৌসুমে ১৬ হাজার ৯৩০ হেক্টর জমিতে আমন
আবাদের লক্ষমাত্রার স্থলে আবাদ হয় ১৬ হাজার ৪৫০ হেক্টর জমিতে। লক্ষমাত্রা অনুযায়ী ৪৮০
হেক্টর জমিতে চাষ হয়নি আমন। অতিবর্ষণে বিজতলা নষ্ট ও পানি নিষ্কাসন জনিত
সমস্যার কারণে আমন চাষের লক্ষমাত্রা অর্জিত না হওয়ার অন্যতম কারণ হিসাবে
উল্লেখ করেছেন সংশ্লিষ্ট কৃষি বিভাগ। এদিকে মৌসুমের শেষের দিকে শুরু হয়েছে
আমন ধান কর্তন। ইতোমধ্যে, ৫ হাজার হেক্টর জমির ধান কর্তন করা হয়েছে বলে
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানাগেছে।
সূত্রমতে, উপজেলায় মোট কৃষি জমি রয়েছে প্রায় ৩০ হাজার হেক্টর। মোট
কৃষি জমির মধ্যে চলতি আমন মৌসুমে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ১৬ হাজার
৯৩০ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করে। যার মধ্যে উফশি উচ্চ
ফলনশীল ১৫ হাজার ৪৮০ হেক্টর এবং স্থানীয় জাতের ১ হাজার ৪৫০ হেক্টর। লক্ষমাত্রা
অনুযায়ী উফশি উচ্চ ফলনশীল আবাদ হয়েছে ১৫ হাজার ২৫০ হেক্টর ও স্থানীয় ১ হাজার
২০০ হেক্টর। আবাদকৃত ধানের মধ্যে রয়েছে, বিনা- ৭, ব্রী ধান- ২৮, ৩০, ৩৩, ৩৯,
৪৯, ৫৭ ও ৬২, বিআর- ১০, ১১ ও ২৩। এদিকে মৌসুমের শুরুতেই অতিবর্ষণে বীজতলা
নষ্ট ও সময়মত চিংড়ি ঘেরের পানি নিষ্কাসন না হওয়ায় চলতি মৌসুমে লক্ষমাত্রার
চেয়ে ৪৮০ হেক্টর জমিতে কম হয় আমন আবাদ। তবে কৃষকদের মধ্যে আশা
জাগিয়েছে চলতি মৌসুমে আমনের বাম্পার ফলন। বর্তমানে উপজেলা জুড়ে
রয়েছে আমন ফসলের ছড়াছড়ি, কোথাও রয়েছে সবুজের ক্ষেত, কোথাও আবার
সোনালী ফসল। সবুজ আর সোনালীর মাঝে ফুটে উঠেছে কৃষকের হাসি। কিছু
কিছু স্থানে চলছে ধান কাটার ধুম। বান্দিকাটি গ্রামের কৃষক মিজানুর রহমান
জানান, চলতি মৌসুমে ১৫ বিঘা জমিতে ব্রীধান- ৩০ ও বিআর- ২৩ ধানের চাষ
করেছি। কৃষি বিভাগের সার্বিক মনিটরিং এর কারণে এ বছর আমনের ভাল ফলন
হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট এ কৃষক জানান। তবে সম্পন্ন ফসল ঘরে তুলতে এখনো বেশ
কিছুদিন সময় লাগবে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্ট কৃষি বিভাগ। উপজেলা কৃষি
অফিসার কৃষিবিদ এএইচএম জাহাঙ্গীর আলম জানান, মৌসুমের শুরুতেই
অতিবর্ষণে বীজতলা নষ্ট ও পানি নিষ্কাসন সমস্যাজনিত কারণে চলতি আমন
মৌসুমে লক্ষমাত্রার চেয়ে সামান্য কিছু আবাদ কম হলেও বিগত যে কোন বছরের
চেয়ে এ বছর আমনের ফলন ভাল হয়েছে। ধান রোপনের পর প্রতিকূল আবহাওয়া বিরাজ
এবং কৃষি বিভাগের সার্বিক মনিটরিং করার কারণে এ বছর আমনের বাম্পার ফলন
হয়েছে। ইতোমধ্যে, বিআর- ১০, ১১ ও ব্রীধান- ৩০ সহ প্রায় ৫ হাজার হেক্টর জমির
ধান কর্তন করা হয়েছে। যার হেক্টর প্রতি উৎপাদন হয়েছে ৫.২ মেট্রিকটন। অবশিষ্ট
ধান কর্তন সম্পন্ন করতে আরো বেশ কিছুদিন সময় লাগবে বলে কৃষি বিভাগের
এ কর্মকর্তা জানান।