চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার ছাত্রাজিতপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শামসুল হুদাকে নিজ কার্যালয়ে থেকে দুর্বৃত্তরা তুলে নিয়েছে। দুই ঘণ্টা পর তাঁকে ছেড়েও দেওয়া হয়। এ ঘটনায় স্থানীয় বিক্ষুব্ধ জনতা সড়ক অবরোধ করে।
আজ রোববার দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-সোনামসজিদ স্থলবন্দর মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে বিক্ষুব্ধরা। প্রায় দুই ঘণ্টা পর বিকেলে ইউপি চেয়ারম্যান উদ্ধার হলে অবরোধ প্রত্যাহার করা হয়।
ছাড়া পেয়ে ইউপি চেয়ারম্যান শামসুল হুদা অভিযোগ করে বলেন, দুপুর ১টার দিকে ছত্রাজিতপুর ইউনিয়ন পরিষদ ভবন থেকে ৮-১০ জনের একদল দুর্বৃত্ত তাঁকে প্রকাশ্যে জিম্মি করে মাইক্রোবাসে করে তুলে নিয়ে যায়।
‘আমার ছেলে সোহেল রানা জেলা পরিষদ নির্বাচনে কাউন্সিলর পদপ্রার্থী, তাঁর প্রার্থিতা প্রত্যাহার করানোর জন্যই আমাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। মাইক্রোবাসে করে তারা আমাকে নিয়ে যাওয়ার সময় প্রার্থিতা প্রতাহার করার জন্য নানাভাবে হুমকি দেয়। পরে ঘটনাটি জানাজানি হলে এবং এলাকার মানুষ বিক্ষোভ শুরু করলে তারা আমাকে ছেড়ে দেয়। সদর উপজেলার পলসা মাঠ থেকে আমাকে উদ্ধার করে ভাগ্নে টুটুল’, যোগ করেন ইউপি চেয়ারম্যান।
শামসুল হুদা আরো জানান, এ ব্যাপারে শিবগঞ্জ থানায় মামলা করেছেন। তবে মামলায় কাদের আসামি করা হয়েছে তা জানাতে চাননি তিনি।
শামসুল হুদার ছেলে ও জেলা পরিষদ নির্বাচনের কাউন্সিলর পদপ্রার্থী সোহেল রানা ঘটনার পর পরই অভিযোগ করেছিলেন, তাঁর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করতে চাপ সৃষ্টির জন্যই বাবা শামসুল হুদাকে অপহরণ করা হয়।
বিকেলে চাঁপাইনবাবগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) টি এম মোজাহিদুল ইসলাম জানান, শামসুল হুদাকে উদ্ধার করা হয়েছে। এরপর স্থানীয়রা অবরোধ তুলে নিয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
শিবগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সারোয়ার হোসেন জানান, ইউপি চেয়ারম্যান শামসুল হুদা নয়জনকে আসামি করে একটি মামলা করেছেন। তবে তদন্তের স্বার্থে মামলার আসামিদের নাম প্রকাশ করতে রাজি হননি তিনি।
স্থানীয়রা জানায়, ইউপি চেয়ারম্যানের ছেলে সোহেল রানা জেলা পরিষদ নির্বাচনে ১০ নম্বর ওয়ার্ড থেকে কাউন্সিলর পদপ্রার্থী। তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতি সঙ্গে যুক্ত। সোহেল স্থানীয় সংসদ সদস্য গোলাম রব্বানীর অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
একই ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদপ্রার্থী হয়েছেন মোস্তাকিউল ইসলাম। তিনি সদর আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওদুদের আপন ভায়রা ভাই।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ইউপি চেয়ারম্যান শামসুল হুদাকে তুলে নেওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় জনগণ রাস্তায় নেমে আসে এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জ- সোনামসজিদ মহাসড়কের অবরোধ সৃষ্টি করে। অবরোধের কারণে মহাসড়কের দুই পাশে সোনামসজিদ স্থলবন্দরের পণ্যবাহী ট্রাকসহ শত শত যানবাহন আটকা পড়ে।