স্পোর্টস ডেস্ক: টানা তিন বলে তিন উইকেট নেওয়ার কাজটা মোটেও সহজ নয়। টেস্ট ক্রিকেটের ১৪০ বছরের ইতিহাসে এই কীর্তি দেখা গেছে মাত্র ৪১ বার। ক্রিকেটবিশ্বকে প্রথমবারের মতো এই হ্যাটট্রিকের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন ফ্রেড স্পোফোর্থ। ১৩৮ বছর আগের এই দিনেই (২ জানুয়ারি) ক্রিকেটের প্রথম হ্যাটট্রিকটি করেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার এই ডানহাতি পেসার।
স্পোফোর্থকে বিবেচনা করা হতো সে সময়ের সেরা বোলার হিসেবে। ইংরেজদের চক্ষুশূল ছিলেন তিনি। কারণ, তাঁর দুর্দান্ত বোলিংয়ের কাছে বারবার নাকাল হতে হতো ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানদের। ১৮৭৯ সালে মেলবোর্নে তো ক্রিকেটের জনকদের রীতিমতো কাঁদিয়েই ছেড়েছিলেন স্পোফোর্থ। সে বছরের শুরুতেই মেলবোর্নে ক্রিকেটবিশ্ব প্রথমবারের মতো দেখেছিল হ্যাটট্রিকের কীর্তি।
টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংস গুটিয়ে গিয়েছিল মাত্র ১১৩ রানে। টানা তিন বলে তিন উইকেট নিয়ে ইংল্যান্ডের মিডলঅর্ডার ধসিয়ে দিয়েছিলেন স্পোফোর্থ। তাঁর শিকার হয়েছিলেন ভারনন রয়েল, ফ্রান্সিস ম্যাককিনন ও টম এমেট। রয়েল ও ম্যাককিনন আর কখনোই খেলতে পারেননি টেস্ট ক্রিকেট। প্রথম হ্যাটট্রিকের ইতিহাস হয়েই শেষ হয়ে গেছে তাঁদের টেস্ট ক্যারিয়ার।
মেলবোর্নের সেই টেস্টে প্রথম ইনিংসে স্পোফোর্থ নিয়েছিলেন মোট ছয়টি উইকেট। দ্বিতীয় ইনিংসে তিনি হয়ে উঠেছিলেন আরো বিধ্বংসী; এবার ঝুলিতে পুড়েছিলেন সাতটি উইকেট। সে সময় টেস্টে কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা ছিল না। ‘টাইমলেস টেস্ট’-এর সেই যুগেও এই ম্যাচ শেষ হয়েছিল মাত্র তিন দিনে। অস্ট্রেলিয়া পেয়েছিল ১০ উইকেটের সহজ জয়।
১৮৭৭ থেকে ১৮৮৭ সাল পর্যন্ত ১০ বছরের টেস্ট ক্যারিয়ারে স্পোফোর্থ খেলেছিলেন মোট ১৮টি ম্যাচ। নিয়েছিলেন ৯৪টি উইকেট। আর প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তাঁর উইকেট সংখ্যাটা পৌঁছে গিয়েছিল প্রায় হাজারের কাছাকাছি। ১৫৫টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলে স্পোফোর্থ শিকার করেছিলেন ৮৫৩ উইকেট।
১৯২৬ সালে ৭২ বছর বয়সে মারা যান অস্ট্রেলিয়ার এই ক্রিকেটার। তবে তাঁর নামটা ক্রিকেটবিশ্বে আজীবন স্মরণীয় হয়ে থাকবে এই একটা কারণেই। স্পোফোর্থই যে হ্যাটট্রিক নামক বস্তুটার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন ক্রিকেট অঙ্গনকে।