ঢাকা: ভয়াবহ দুঃশাসনের যাতাকলে দেশের মানুষ আজ দিশেহারা বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া।
জাতিসংঘ ঘোষিত আন্তর্জাতিক নির্যাতন বিরোধী দিবস উপলক্ষে এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘‘দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর ঔপনিবেশিক শৃঙ্খল থেকে জাতিসমূহ স্বাধীনতা অর্জন করলেও আজও বিশ্বব্যাপী চলছে জাতি, বর্ণ, ভাষা ধর্ম ও সম্প্রদায়গত সংঘাত আর হানাহানি।
আর এই সংঘাত ও বিরোধের কারণেই সাধারণ মানুষেরা দেশে দেশে নিষ্ঠুর স্বৈরশাসনের যাঁতাকলে পিষ্ট হয়ে নিহত ও পঙ্গুত্ব বরণ করছে। মিথ্যা মামলায় বছরের পর বছর কারাযন্ত্রণা ভোগ করছে তারা। সারাবিশ্ব আজ যান্ত্রিক সভ্যতায় এগিয়ে গেলেও মানবিকতার বিকাশ বেশীদুর এগুতে পারেনি। বাংলাদেশে গণতন্ত্র এখন বন্দী। ভয়াবহ দূঃশাসনের যাতাকলে দেশের মানুষ দিশেহারা।
বর্তমান সরকার ক্ষমতাসীন হওয়ার পরে বিএনপিসহ বিরোধী দলের অসংখ্য নেতা-কর্মী গুম, খুন, অপহরণ ও গুপ্তহত্যার শিকার হয়েছে। বন্দুক যুদ্ধের নামে মানুষ হত্যাকে গা-সওয়া করানো হচ্ছে। সাংবাদিক হত্যা এবং অসংখ্য সাংবাদিককে নিষ্ঠুরভাবে নির্যাতন নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এছাড়াও মত প্রকাশের স্বাধীনতা স্তব্ধ করে দেয়ার জন্য একের পর এক সংবাদপত্র, টেলিভিশন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে, যাতে বিরোধীদের কণ্ঠ শোনা না যায়।
বাংলাদেশে সরকারের অগণতান্ত্রিক ও অসহিঞ্চু আচরণের প্রতিবাদ করতে গেলেই লেলিয়ে দেয়া হয় তাদের নিজস্ব পেটোয়া বাহিনী। এই সরকারের পোষ্য সন্ত্রাসীদের হাতে দেশের বিভিন্ন স্থানে নারী ও শিশু ভয়াবহভাবে নির্যাতিত হচ্ছে। সরকারের নিষ্ঠুর দমননীতির ছোবলে গণতন্ত্রকে করা হয়েছে দেশছাড়া। উত্থান হয়েছে এক দানবীয় উগ্র জঙ্গী শক্তির। যারা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান, ব্লগার, শিয়া সম্প্রদায়, পীর, বাউল-সাধক, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের ওপর মরণঘাতী হামলা করছে।
বিএনপি নেত্রী বলেন, প্রতিদিন কোন না কোন জনপদ রক্তে সিক্ত হচ্ছে। এই উগ্র গোষ্ঠীর কার্যকলাপ নিয়ে সরকারের ভূমিকা এখন রহস্যঘেরা। জঙ্গীদের দমনের নামে বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মী, সমর্থক এবং সাধারণ মানুষের ওপর নামিয়ে আনা হয়েছে দু:সহ নিপীড়ণের খড়গ। দেশে মানুষের ন্যায় বিচার পাওয়ার সকল পথ বন্ধ হয়ে গেছে। এদেশে এখন বিচারের বাণী নিরবে নিভৃতে কাঁদছে।