মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি : মুন্সীগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলার সিদ্ধেশ্বরী বাজারে সরকারি খাল দখল করে বহুতল ভবন নির্মাণ করছে বলে খবর পাওয়া গেছে। স্থানীয় সুত্রে জানাযায়, টঙ্গিবাড়ী বাজার থেকে হাসাইল বাজার পর্যন্ত সিদ্ধেশ্বরী খালটির দৈর্ঘ প্রায় ৮ কিলোমিটার। খালটি এক সময়ে টঙ্গিবাড়ী উপজেলা শহরের সাথে চরাঞ্চলের জনসাধারনের যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম ছিল। দূর দূরান্ত থেকে ছোট বড় ট্রলার ও নৌকা দিয়ে সাধারন মানুষ এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাতায়াত করিত। খালটিতে পলি মাটি পড়ায় নাব্যতা হারায়। এতে শুকনো মৌসুমে খালটি অনেকটা শুকিয়ে গেছে। এই সুযোগটা কাজে লাগিয়ে স্থানীয় ভূমিদস্যুরা খালটির বিভিন্ন স্থানে দখলের প্রতিযোগিতায় নেমেছে। তবে বর্ষার সময় খালটিতে নৌ চলাচল স্বাভাবিক থাকে বলে জানাগেছে। বর্তমানে ধীপুর মৌজার সিদ্ধেশ্বরী খালটির সিদ্ধেশ্বরী বাজার ঘেষে একাধিক অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠেছে। খালটির প্রায় ১২ ফুট জায়গা দখল করে বহুতল ভবন নির্মান করছে একটি প্রভাবশালী মহল। স্থানীয়দের অভিযোগ পাঁচগাঁও ইউনিয়নের মান্ডা গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য জনাব আলী শেখ সিদ্ধেশ্বরী বাজারে লিজের নামে জায়গা নিয়ে পাঁকা দালান তৈরী করছেন। তাছাড়া লীজের জায়গার বাহিরে গিয়ে খালটির উপর ১২ ফিট বেশী ঢুকে পড়েছে। এমনিতেই অনুমতি বিহীন সরকারী জায়গায় ভবন নির্মান করছেন পাশাপাশি সরকারী খালের জায়গাও দখলে নিয়েছে। এমটাই অভিযোগ স্থানীয় বাজারটির একাধিক দোকান মালিক ও সাধারনের।
সিদ্ধিশ্বরী বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো: মনির হোসেন জানান, সম্পূর্ন বেইইনভাবে কাউকে না জানিয়ে হঠাৎ করে সরকারী জায়গায় ও সরকারী খালের অংশ দখল করে ভবনটি নির্মাণ করছেন সাবেক ইউপি সদস্য। সরকারী জায়গা দখল করাকে আমরা কখনও সমর্থন করিনা।এবং ভবন নির্মাণের বিষয়ে বাজার কমিটির কাউকে অবগত করেনি সাবেক ইউপি সদস্য জনাব আলী শেখ।
সরেজমিনে সিদ্ধেশ্বরী বাজারে গিয়ে দেখা যায়, বাজারের প্রধান সড়কের পাশে ভবনটির নির্মান কাজ চলছে । আর পিছনের অংশে রয়েছে সরকারী সিদ্ধেশ্বরী খাল। ভবনটির কারনে খালটির প্রায় ১২ ফিট অংশ দখল হয়ে গেছে। শ্রমিকরা ভবনটির পিলারে আস্তর করছেন। ভবনটির জন্য ৯টি আর সিসি পিলার তৈরী হয়েছে। সামনের অংশে ২য় তলার কানিস তৈরী হচ্ছে। ভবনটিতে উন্নতমানের রড ব্যবহার করা হচ্ছে। সাংবাদিক দেখে ছুটে আসেন ইউপি সদস্যের ছেলে রিপন। ভবন নির্মাণের কারন জানতে চাইলে তিনি ভবন নির্মাণের কোন অনুমোদন বা বৈধ কাগজ দেখাতে পারেনি । খাল দখলের কথা স্বীকার করে রিপন বলেন, একটু বেশী জায়গা নেয়া হয়েছে । তবে সরকার চাইলে পরবর্তীতে ভেঙ্গে দেওয়া হবে। পাঁকা দালান নির্মাণের বিষয়ে তিনি বলেন, টিনসেট ভবন তেরী করা হবে কোন ছাদ দিবনা।
টঙ্গিবাড়ী উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি আবেদা আফসারী বলেন, ভবন নির্মাণের জন্য কোন অনুমোদন কাউকে দেওয়া হয়নি। কারা ভবন নির্মাণ করছে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: শহিদুল হক পাটোয়ারী বলেন, নায়েব অফিস থেকে লোক পাঠানো হয়েছে। তারা খালটি মেপে দেখবে । খালের জায়গায় ভবন পড়ে থাকলে সেটা ভেঙ্গে ফেলা হবে।