এম.এ আয়াত উল্যা, স্টাফ রিপোর্টার, নোয়াখালী :
নোয়াখালীর স্বর্ণদ্বীপ (জাহাইজ্জার চর) এলাকায় ম্যানুভার অনুশীলন মহড়া পরিদর্শন
অনুষ্ঠান শেষে প্রীতিভোজ অনুষ্ঠানে সেনা সদস্যদের উদ্দেশ্যে আজ শনিবার
দুপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমাদের মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে
গড়ে ওঠা এ সেনাবাহিনী যেকোনো অশুভ শক্তিকে দৃঢ়ভাবে প্রতিহত করতে
আগের চেয়ে অনেক বেশি প্রস্তুত। আমরা যুদ্ধ চাই না, আক্রান্ত হলে
মোকাবেলার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। সেনাবাহিনীর প্রতিটি সদস্য যেন
দক্ষতার পরিচয় দিতে পারে। তিনি আরোও বলেন,বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আজ
একটি দক্ষ,সুশৃঙ্খলও সুসংঘটিত বাহিনী হিসেবে সমগ্র বিশ্বে
প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।আজ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৩৩ পদাতিক ডিভিশনের
সার্বিক তত্ত্বাবধানে গড়ে ওঠা স্বর্ণদ্বীপ-এ ১১পদাতিক ডিভিশনের
রণকৌশল অনুশীলনের মহড়া দেখে আমি আভিভূত।একই সাথে স্বর্ণদ্বীপ
প্রশিক্ষণ এলাকার সুপরিকল্পিত ব্যবহার দেখে আনন্দিত। আমি নিশ্চিত যে, এ
প্রশিক্ষণ এলাকা সেনাবাহিনীর দক্ষতা বৃদ্ধিতে তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা
রাখবে। আজকের এ মহড়া সেনাবাহিনীর দক্ষতা ও পেশাদারিত্বেরই প্রতিফলন।
তিনি আরোও বলেন, আজকের মহড়ায় সেনাবাহিনীর আধুনিকায়নের অংশ
হিসেবে নতুন সংযোজিত ট্যাংক, এপিসি, সেল্ধসঢ়;ফ প্রোপেল্ধসঢ়;ড,
আর্টিলারী গান, রাডার ভেহিকেল ট্যাংক বিধ্বংসী মিসাইল এর ব্যবহার,
মেইনটেন্যান্স ও অন্যান্য সকল কোর এর পেশাদারিত্ব ও সেনাবাহিনীর
সার্বিক সক্ষমতায় আমি পূর্ণ আশ্বস্ত। সাজোয়া, গোলন্দাজ ও পদাতিক
বাহিনীর নতুন প্রবর্তিত যুদ্ধসরঞ্জাম এর প্রদর্শনী নি:সন্দেহে আমাদের
দেশ রক্ষায় নিয়োজিত সেনাবাহিনীর প্রতি আমাদের আস্থাকে আরো
সুদৃঢ় করেছে। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে গড়ে ওঠা এবাহিনী যে কোন
অশুভ শক্তিকে সুদৃঢ় ভাবে প্রতিহত করতে পূর্বের চেয়ে অনেক বেশী প্রস্তুত।
সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর সমন্বিত অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত এ মহড়া
সেনাবাহিনীর প্রতি আমার আস্থা আরো সুদৃঢ় করেছে। বাংলাদেশ স্বশস্ত্র
বাহিনী দেশের সম্পদ, দেশের মানুষের ভরসা ও বিশ্বাসের প্রতীক। তাই
পেশাদারিত্বের গুণগত মান ও উন্নয়ন অর্জনের জন্য সেনাবাহিনীর সকল
সদস্যকে পেশাগত ভাবে দক্ষ, সামাজিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধে উদ্বুদ্ধ হয়ে
মঙ্গলময় জীবনের অধিকারী হতে হবে। পবিত্র সংবিধান এবং দেশমাতৃকার
সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য সেনাবাহিনীকে ঐক্যবদ্ধ থেকে আভ্যন্তরীণ কিংবা
বাহ্যিক যে কোন হুমকি মোকাবেলায় সদা প্রস্তুত থাকতে হবে। ঊর্ধ্বতন
নেতৃত্বের প্রতি আস্থা, পারস্পরিক বিশ্বাস, সহমর্মিতা, ভ্রাতৃত্ববোধ,
কর্তব্য পরায়ণতা, দায়িত্ববোধ এবং সর্বোপরি শৃঙ্খলা বজায় রেখে কর্তব্য
সম্পাদনে একনিষ্ঠ ভাবে কাজ করতে হবে। এসময় উক্ত অনুষ্ঠানে আরোও
উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ’র সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন
ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের,প্রাণি সম্পদ মন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম
মাহমুদ, সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী, সংসদ সদস্য মামুনুর রশিদ
কিরণ, সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মোর্শেদ আলম, সংসদ সদস্য এইচ.এম.
ইব্রাহীম, সংসদ সদস্য আয়েশা ফেরদৌস, সেনাবাহিনী প্রধান লে.
জেনারেল আবু বেলাল মোঃ শফিউল হক, বিমান ও নৌবাহিনীর প্রধানগণ,
জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আ ন ম খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিমসহ
প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য,নোয়াখালীর দক্ষিনে মেঘনা নদী থেকে
প্রায় ২০ বছর আগে জেগে উঠে এই চর। নোয়াখালী জেলা প্রশাসনের
তথ্যানুযায়ী প্রায় লক্ষাধিক একর জায়গায় জেগে উঠা এই চরে বেশীরভাগ
জায়গা হচ্ছে হাতিয়া উপজেলার। এই ছাড়া এই চরে জেলার সুবর্নচর ও
চট্রগ্রাম জেলার সন্দ্বীপের কিছু অংশ রয়েছে। মূলত তিনটি উপজেলার
ভুমি নিয়ে এই চরের উৎপত্তি। সমুদ্র পৃষ্ঠ হতে ৩ মিটার উচ্চতায় অবস্থতি
৩৬০ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের এই চরটি ২০১৩ সালে বাংলাদেশ
সেনাবাহিনীকে হস্তান্তর করার পর এটি স্বর্ণদ্বীপ হিসেবে নামকরণ করা
হয়।স্বর্ণদ্বীপের উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনী একটি ত্রিমুখী
পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।প্রশিক্ষনের জন্য অবকাঠামোগত উন্নয়ন, বনায়ন ও
স্থানীয় জনগনের আর্থসামাজিক উন্নয়ন।