হেলাল শেখ-ঢাকা ঃ
ঢাকার আশুলিয়ার বিভিন্ন এলাকায় দালাল কর্তৃক বিদেশি জাল ভিসা দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার
অভিযোগ উঠেছে। আপন বাবা মা কর্তৃক মাত্র ১৭ দিনের শিশু বাঁচ্চাকে বিক্রির অভিযোগে এলাকায়
তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে জানা গেছে, ঢাকার সাভার উপজেলার আশুলিায়ার জিরাবো এলাকায় ভাড়া বাড়িতে
থেকে সিরাজগঞ্জ জেলার এনায়েতপুর থানার এনায়েতপুর গ্রামের মৃত মোজাম্মেল হকের ছেলে আমিনুল
ইসলাম (৩৮), আদম বব্যসায়ী, দালাল কর্তৃক বিদেশি জাল ভিসা দেখিয়ে ফরিদপুর জেলার মধুখালী থানার
টাকদিয়া গ্রামের কালু শেখের পুত্র বাচ্চু শেখের ( পাসপোর্ট ০৩২৯৬৮০) এর সঙ্গে জাল ভিসা লাগিয়ে সেই
জাল কাগজপত্র দেখিয়ে মোট তিন লাখ ৬০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় প্রতারক মানব পাচারকারী আমিনুল।
এ বিষয়ে ৩০০ টাকার ৯৮৩২৩৫৪, ৯৮৩২৩৪৬, ৯৮৩২৩৪৭/ নাম্বারের ষ্ট্যাম্পে “ অঙ্গিকার নামায়” চুক্তিপত্র হয়
গত বছরের ২৮ জানুয়ারি। এক বছর সময় গত হলেও এখন পর্যন্ত বাচ্চু শেখ তার পাওনা টাকা পায়নি। বিভিন্ন
সুত্রে জানা গেছে, প্রতারক দালাল, মানব পাচারকারী আমিনুলের সাথে আরও ৫ থেকে ৭ জন ব্যক্তি জড়িত
রয়েছে। এই আদম ব্যবসায়ী দালালরা দেশের বিভিন্ন এলাকার নারী ও শিশু পাচার চক্রের সাথে জড়িত আছে বলে
স্থানীয়রা জানান।
জানা গেছে, ঢাকার আশুলিয়া থানার জামগড়া সরকারি প্রাঃ বিদ্যালয়ের পাশে আমিন টাওয়ার নামের একটি
বাড়ির ৪ তলার ৬ নং ফ্লাটের ভাড়াটে বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ থানার মানিককাঠি গ্রামের আব্দুল ছাত্তারের
ছেলে নাছির উদ্দিন খোকন (২৬) এর কাছে হঠাৎ করে ১৭ দিনের একটি শিশু ছেলে সন্তান দেখে এলাকাবাসীর
মধ্যে শিশু পাচারকারী হিসেবে মনে করে আশুলিয়া থানা পুলিশকে খবর দেয়। এ সময় নাছিরের কাছে প্রশ্ন
করলে সে বলে, আমি ২০ হাজার টাকা বিনিময়ে শিশু বাচ্চাটির বাবা মায়ের কাছ থেকে কিনে নিয়েছি। পরে
স্থানীয়রা বলেন, শিশু বাঁচ্চার মা বাবাকে হাজির করতে হবে নাছিরকে।
জানা যায়, এর পর নাটোর জেলার বড়াই গ্রামের আব্দুর সামাদ এর ছেলে শাহীন (২০), তার স্ত্রী ফিরোজা বেগম
(১৯) জামগড়া আমিন টাওয়ার বিল্ডিং এর বাসায় হাজির হয়, তাদের একমাত্র বাঁচ্চা ১৭ দিনের শিশু ছেলেকে
তারা মাত্র ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে বিক্রি করেছে বলে স্বীকার করে। এ বিষয়ে স্থানীয় মাতব্বরগণ,
সাংবাদিক ও আশুলিয়া থানা পুলিশ আবার শিশুটিকে তার বাবা মায়ের কাছে দিয়ে দেন। কিন্তু সোমবার
দিবাগত রাত আনুমানিক ১১টার দিকে জানা যায়, নাছির তার ভাড়া বাসাটির ৬ নং ফ্লাট ছেড়ে দিয়ে
পালাচ্ছে। অন্যদিকে বাঁচ্চার বাবা মা ও নাছির এর এই বাঁচ্চার ঘটনাটি রহস্যজনক বলে মনে করছেন
এলাকাবাসী। স্থানীয়রা অনেকেই বলছেন, এসব প্রতারক, দালাল, মানব পাচারকারীরা বিভিন্ন মানুষকে চাকরি
দেয়ার কথা বলে অর্থ লেনদেন করে। আবার বিদেশে পাঠানোর কথা বলে সুন্দরী নারী ও শিশু এবং পুরুষ মানুষকে
অপহরণ করে কৌশলে মোটা অংকের টাকা আদায় করে থাকে। অনেক সময় শিশু বাঁচ্চাদের ক্রয় বিক্রয় করে। এই
চক্রের হোতারা প্রভাবশালী ব্যক্তিদের ছত্র ছায়ায় এসব অপরাধমূলক কর্মকান্ড করে। উক্ত ব্যাপারে প্রয়োজনীয়
আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরী বলে মনে করছেন সচেতন মহল।