মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধিঃ মুন্সীগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলার হাসাইল, দিঘিরপাড়, হাসাইল বানারী ইউনিয়নেরপ্রায় ৮ টি গ্রাম পদ্মার ভাঙ্গনের আশংকায় মুখে পড়েছে। মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে এসব নদী তীরবর্তী গ্রামগুলো। আর এ জন্য অবৈধভাবে নদীতে ড্রেজিং করাকে দায়ী করছেন ভুক্তভোগী পরিবারগুলো। স্থানীয়রা জানান, কামারখারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদ্মা নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে দীর্ঘ দিন ধরে রাতের আঁধারে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করে আসছে। গত বর্ষার সময় বড়াইল গ্রামের বড়াইল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি নদীতে চলে গেছে। যা কয়েকমাস আগে স্কুলথেকে নদী অনেকটা দূরে ছিল। সরেজমিনে বড়াইল গ্রামেগিয়ে দেখা যায়, বড়াইল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি নদীতে তলিয়ে গেছে। সেখানে স্থানীয়রা বাঁশের বেড়া দিয়ে নির্ধারন করে রেখেছে। ঠিক পাশেই রয়েছে বড়াইলজামে সমজিদ। যা নদী থেকে ১২ ফিট দূরে যা যেকোন সময় নদীগর্ভে চলে যেতে পারে বলে আশংকা করছেন স্থানীয়রা। তাছাড়া একই এলাকার বাঘবাড়ী, বড়াইল, জৈনসার, বীরতারা,সরিষাবন, দিঘিরপাড়সহ প্রায় ৮টি গ্রাম ঝুঁকিপূর্ন অবস্থায় রয়েছে। এবারের বর্ষার মৌসুম আসার আগে যদি কোন কার্যকরী ব্যবস্থা না নেয়া হয় তাহলে এসব গ্রামগুলো নদীগর্ভে চলে যাবে বলে আশংকা স্থানীয় বাসিন্ধাদের। গ্রামগুলোকে বাঁচাতে স্থানীয়রা বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন। স্থানীয়রা এখন রাক্ষুসে পদ্মার ভাঙ্গনের চেয়ে ভয়ংকর দানব হিসাবে ভয় পাচ্ছে ড্রেজিংয়ের নামে মাটি কেটে বিক্রি ও অবৈধ বালু উত্তোলন কারীদের। বালু ভর্তি বাল্কহেডগুলো গ্রামের পাশ দিয়ে চলাচল করছে। প্রতিদিনই ডেউয়ের কারনে গ্রামগুলোর মাটি একটু একটু করে ভেঙ্গে নদীতে পড়ছে। এলাকাটিতে চেয়ারম্যান রক্ষক হয়ে বক্ষককের ভুমিকায় কাজ করছেন। এমনটাই অভিযোগ স্থানীয় গ্রামবাসীদের। শত বছর বয়সী বড়াইল গ্রামেরবৃদ্ধা আছিমা বেগম জানান, আমরা পদ্মার ভাঙ্গনকে ভয়করিনা। মহিউদ্দিন চেয়ারম্যান নামক মাটি খোর চেয়ারম্যানকে রাক্ষুসে পদ্মার চেয়ে বেশী ভয় পাই। এলাকায় তার ভয়ে কেউ কোন প্রতিবাদ করতে সাহস পাচ্ছেনা। আমাদের গ্রামের পাশে একটি বেঁড়িবাঁধ দেওয়া হোক ।বীরতারা গ্রামের আজমল মিয়া জানান, রাতের আঁধারে ফসলী জমিতে ড্রেজিং করেছে চেয়ারম্যানের লোকজন। তাদের কারনে অনেক ফসলী নদীগর্ভে চলে গেছে। পৈত্রিক সম্পত্তি হারিয়েছি এখন বাব দাদার ভিটে মাটি হারানোর চিন্তার আছি। গ্রামগুলোকে বাঁচাতে সরকার একটি বেঁড়ীবাঁধ নির্মাণ করলে আমরা আমাদের পৈত্রিক সম্পত্তিগুলো রক্ষা হবে।ড্রেজিং করার কথা স্কীকার করে চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন হালদার বলেন, আমি শরিয়তপুর সীমান্তে বালু উত্তোলন করি। গ্রামগুলো রক্ষার্থে অচিরেই বেঁরী বাঁধ দেওয়া হবে।টঙ্গিবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: শহিদুল হক পাটোয়ারী জানান, মাসিক উন্নয়ন মিটিংয়ে এসব গ্রামগুলো নদী ভাঙ্গন থেকে রক্ষার্থে বেঁরীবাঁধ নির্মাণের বিষয়টি উপস্থাপন করা হবে। তাছাড়া অবৈধ ড্রেজিং বন্ধেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।জেলা প্রশাসক রাজস্ব মোহাম্মদ ফজলে আজীম বলেন, পদ্মারপাড়ে অবৈধ ড্রেজিং বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এবং সার্বিক বিষয়গুলো তদন্ত করা হচ্ছে।