শিক্ষক লাঞ্চিত করার ঘটনার বিচারের দাবীতে আজ শনিবার সকাল ১১টায় নীলফামারীর ডিমলা খগাখড়িবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে ও প্রধান সড়কে ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন করেছে শিক্ষার্থীরা।গত বৃহস্পতিবার শিক্ষক লাঞ্চিত ঘটনায় পরিচালনা পরিষদের অভিভাবক সদস্য খগাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি কামরুল হাসান ওরফে লিঠু (৪৫) কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত লিঠু উক্ত গ্রামের মৃত ফজলার রহমানের ছেলে।শুক্রবার দুপুরে গ্রেফতারকৃত লিঠুকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।ডিমলা থানা সুত্র মতে এ ঘটনায় লাঞ্চিতের শিকার একই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সহকারী শিক্ষক কৈলাশ চন্দ্র রায় বাদী হয়ে মামলা দায়ের করে।পুলিশ সুত্রে জানা যায়, গ্রেফতারকৃত কামরুল হাসান লিঠু ডিমলা উপজেলার খগাখড়িবাড়ী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের একজন অভিভাবক সদস্য।এলাকাবাসীর অভিযোগ গত বছরের ১ অক্টোবর সকালে বিদ্যালয়ের নৈশ্য প্রহরী জিকরুল হক ভুট্টু (৪০) কে হত্যা করে পাশ্ববর্তী পুকুরে লাশ ফেলে দেয়া হয়। তিনি খগাখড়িবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের খন্ডকালীন নৈশ প্রহরী ও খগাখড়িবাড়ী গ্রামের মৃত আব্দুল মজিদের পুত্র।২০১৩ সাল থেকে ভুট্টু উক্ত প্রতিষ্ঠানে খন্ডকালীন নৈশ প্রহরী হিসেবে চাকুরী করে আসছিলেন। ঘটনার দিন রাতে নৈশ প্রহরী জিকরুল হক ভুট্টু ও তার স্ত্রী নার্গিস বেগমের সাথে বিদ্যালয়ে একটি কক্ষে ঘুমিয়ে পড়ে। ভোর বেলা স্ত্রী দেখতে পায় তার স্বামী সেখানে নেই অনেক খোজাখুজির পর প্রায় দুপুরে বিদ্যালয়ের পুকুরে তার স্বামীর লাশ ভেষে উঠতে দেখে চিৎকার করতে থাকলে আশ পাশের মানুষেরা ঘটনাস্থলে ছুটে এসে ভুট্টুর লাশ সনাক্ত করে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে সেই লাশ উদ্ধার করেন ।উক্ত ঘটনাকে কেন্দ্র করে সহকারী শিক্ষক কৈশাল চন্দ্র রায় প্রতিবাদ করাকে কেন্দ্র করে বিদ্যালয় ব্যবস্থপনা কমিটির সদস্য কামরুল হাসান লিঠু ও একই সনদে একাধিক প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকগতা চালিয়ে যাওয়া মোফাক্কারুল ইসলাম পেলব দীর্ঘদিন থেকে তার সাথে দ্বন্দ্ব করে আসছিলেন।উক্ত বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষকের অভিযোগে জানা গেছে, নৈশ প্রহরীর স্ত্রী নার্গিজ বেগমের পরকীয়ার কারনে নৈশ্য প্রহরীকে হত্যা করে লাশ পুকুরে ফেলে দেয়া হয়। এ ঘটনায় আদালতে ২টি পৃথক পিটিশন দায়ের করে মৃত জিকরুল হক ভুট্টুর স্ত্রী ও নিহতে ছোট ভাই। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক শিক্ষকের অভিযোগ নৈশ প্রহরী হত্যার ঘটনার সুষ্ঠ, নিরপেক্ষ তদন্ত করলেই সকল ঘটনার আসল মুখোষধারীরা বেরিয়ে আসবে।উক্ত ঘটনার জের এই সদস্য বুধবার সকাল সাড়ে ১১টায় ওই বিদ্যালয়ের সিনিয়র সহকারী শিক্ষক কৈলাশ চন্দ্র রায়কে বিদ্যালয় চত্বরে ছাত্র-ছাত্রিদের উপস্থিতে মারপিট করে। এতে তিনি আহত হয়ে প্রথমে ডিমলা এবং পরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়।ঘটনারদিন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা চোখের সামনে শিক্ষা গুরু শিক্ষককে এভাবে হেনেস্তা হতে দেখে লিঠুর উপর চড়াও হয়ে তাকে ঘেড়াও করে রাখলে ডিমলা থানার পুলিশ ঘটনাস্হলে ছুটে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে এসেও পরে ছেড়ে দেন! যা এলাকাবাসীর কাছে বিস্ময়কর মনে হলে পুলিশ জানায়,তার বিরুদ্ধে কোনো লিখিত অভিযোগ না থাকায় তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।আজ শনিবার,মানববন্ধন শেষে শিক্ষার্থীরা শিক্ষক লাঞ্চিত ঘটনার দৃষ্টান্তমুলক বিচারের পাশাপাশি দপ্তরী ভুট্টু হত্যারও দ্রুত সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে বিচার দাবী করেন।মানববন্ধন শেষে বক্তব্য রাখেন বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেনীর ছাত্র রুবেল ইসলাম, আসাদুজ্জামান, শাওন ইসলাম, গোলাম মোস্তফা, রতন ইসলাম, পলাশ ইসলাম প্রমুখ।আর উক্ত বিদ্যালয়ের মুল হোতা সহকারী শিক্ষক,যিনি কিনা একই সনদে একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চাকুরীতে কর্মরত সেই মোফাক্কারুল ইসলাম পেলব এর কাছে ঘটনার দিন তার নিজ সম্পৃক্ততার বিষয় সহ সাংবাদিকরা ঘটনার মুল রহস্য জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের উপড় চড়াও হয়ে বলেন,আপনারা কি আমাকে হুমকি দিচ্ছেন?আমাকে কেউ কিছু করতে পারবেনা! আমি পেলব মাস্টার এলাকায় যা করে বেড়াই তা আপনারা নতুন করে জানলেও এই এলাকার অন্যান্য মানুষেরা অনেক আগে থেকেই জানেন।আজ শনিবার মানববন্ধন শেষে রাজা বেশের ওই পেলব মাস্টারেরর মন্তব্য নিতে সাংবাদিকরা অনেক খোজা-খুজির পরেও তার দেখা পায়নি।এমনকি একাধিকবার চেষ্টা করেও তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন (০১৭১৪-৫৬৫৪২৩) নাম্বারে পাওয়া যায়নি। এমনকি বিদ্যালয়েও এই শিক্ষক উপস্হিত ছিলেন না।
ক্রাইমরিপোর্টার নীলফামারীঃ