বাংলাদেশের পুলিশ বাহিনীতে নতুন নতুন ইউনিট বাড়লেও সেই অর্থে সেবা বাড়ছে না বলে অনেকের
অভিমত। গত সাত বছরে পুলিশ বাহিনীতে নতুন পাঁচটি বিশেষায়িত ইউনিট গঠন করা হলেও অনেক
ইউনিট চলছে খুঁড়িয়ে খঁড়িয়ে।ওই সব ইউনিটগুলো গঠনের সময় যে পরিমান জনবল থাকার কথা
প্রস্তাব করা হয়,সে পরিমান জনবল পাওয়া যায়নি।
সুত্রে জানা গেছে,অনেক ইউনিটে চাহিদার চেয়ে অর্ধেকেরও কম জনবল দিয়ে দৈনন্দিন কাজ
চালানো হচ্ছে এই বাহিনীটিতে। জানা গেছে,বেশিরভাগ ইউনিটগুলোর নিজস্ব কোনো ভবন নেই।
আবাসিক এলাকায় ভাড়া বাড়িতে চলছে পুলিশের কার্যক্রম। অনেক সময় অভিযান পরিচালনার জন্য
গাড়ি পাওয়া যায় না। সাধারণ মানুষ বলছে,প্রতি বছর ডাকঢোল পিটিয়ে রং বেরঙের বেলুন উড়িয়ে
পুলিশ বাহিনীতে নতুন নতুন ্ধসঢ়;ইউনিটের যাত্রা শুরু হয়,কিন্তু পুলিশি সেবার মান বাড়ে না।
বিভিন্ন সুত্রে জানা গেছে, ঢাকার সাভার আশুলিয়া, উত্তরা, মিরপুর থানায় পুলিশ সদস্যের চেয়ে
অফিসার বদলি হয়ে আসতে বেশি আগ্রহ দেখান। এর অনেক কারণ রয়েছে! বিষয়টি বেশিরভাগ
মানুষই জানেন।
বিশেষ করে ঢাকা ও ঢাকার আশপাশের কিছু থানায় এ এসআই (এসআই) রয়েছে প্রায় ৪০ থেকে ৫০
জন কিন্তু সাধারণ পুলিশ সদস্য তুলনামূলক অনেক কম দেখা যায়। “বাংলাদেশের প্রশাসনিক
কাঠামো” ৬টি বিভাগ থেকে বাড়িয়ে বর্তমানে ৮টি বিভাগ ও ৬৪ টি জেলায় ৮৬,৩০৮টি গ্রামে
১৯৭১ সালের পর ৭ কোটি জনসংখ্যা থেকে এখন প্রায় ১৬ কোটিরও বেশি জনগণ। সেখানে দেশের
জমি বাড়েনি কিন্তু প্রতিদিন মানুষ বাড়ছে। অন্য প্রতিবেশি রাষ্ট্রের তুলনায় বাংলাদেশের মানুষ
অনেক ভালো আছেন এবং ভালো খাচ্ছেন! শান্তিতে ঘুমাচ্ছেন। যেমনঃ মাছে ভাতে বাঙালী, ইলিশ
মাছের দাম গত ১৫ বছরেও এতো সস্তা হয়নি,এতো কম দামে মানুষ কিনতে পারেনি ইলিশ মাছ। তাই
বলা যেতে পারে, যে “মাছের রাজা ইলিশ আর থানার রাজা পুলিশ”এই সুফলের দাবীদার বর্তমান সরকারের
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বেশিরভাগ মানুষ বর্তমান সরকারকে ধন্যবাদ জানাচ্ছেন কারণ তারা
অনেকটা ভালো আছেন। কিছু অসাধু পুলিশের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ থাকতেই
পারে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সুত্রে জানা গেছে, জনগণের সেবা বাড়ানোর জন্য বর্তমান সরকারের টানা সাত
বছরেরও বেশি। পুলিশ বিভাগে পাঁচটি বিশেষায়িত নতুন ইউনিট গঠন করা হয়েছে। এর মধ্যে
রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীসহ ভিআইপিদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের জন্য সিকিউরিটি অ্যান্ড
প্রটেকশন ব্যাটলিয়ন (এসপিবিএন), তদন্তের গুণগতমান বৃদ্ধির জন্য পৃথক তদন্ত ইউনিট পুলিশ ব্যুরো
অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই),দেশের শিল্প এলাকার নিরাপত্তা জোরদার ও শিল্পবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টির জন্য
ইন্ডাষ্টিয়াল পুলিশ,নৌ-পুলিশ ও ট্যুরিষ্ট পুলিশ গঠন করা হয়। এ ছাড়াও কাউন্টার টেরোরিজম ও
ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট নামে নতুন আরও একটি ইউনিট আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু না করলেও মাঠে
রয়েছে। এ ইউনিটের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ডিআইজি মনিরুল ইসলামকে। বিশেষ
করে পুলিশি সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌছে দেওয়ার জন্য নতুন হলো ময়মনসিংহ বিভাগ ও রংপুর
রেঞ্জ রিজাভ ফোর্স (আর আর এফ) এবং পাবনার আতাইকলা, আমিনপুর থানাসহ ২৯টি নতুন থানা,
প্রায় ৪৭ টি তদন্ত কেন্দ্র । পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, বিমানবন্দরের নিরাপত্তার জন্য এপিবিএনের
একটি শাখাও গঠন করা হয়েছে বর্তমান সরকারের আমলেই।
বিশেষ করে পুলিশের শীর্ষস্থানীয় কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, বর্তামান সরকারের প্রায় সাত বছরেরও
বেশি সময় যাচ্ছে পুলিশ বাহিনীতে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দাবি
করেন। পুলিশ বাহিনীতে এসেছে নতুন নতুন অস্ত্র, সরঞ্জাম, বেড়েছে অনেক জনবল যা বর্তমানে
প্রায় ১ লাখ ৯৪ হাজার পুলিশ সদস্য। বেতন-ভাতা বৃদ্ধির পাশাপাশি ঝঁকিভাতা করায় পুলিশ বাহিনীর
সদস্যদের মনোবল বাড়ছে। বিশেষ করে বেশিরভাগ কর্মকর্তাদের পদমর্যাদা বৃদ্ধি করায় পুলিশ বাহিনীর
সদস্যদের মধ্যে রয়েছে সন্তুষ্টি। তারা বলেন, গত সাত বছরে নতুন নতুন থানা ভবন নির্মাণসহ
আবাসন সমস্যা সমাধানে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। নতুন নতুন যানবাহনসহ পুলিশ বাহিনীকে
আধুনিক করে গড়ে তুলতে নানামুখী চেষ্টা করছে বর্তমান সরকার।
হেলাল শেখ ঃ