মহিনুল ইসলাম সুজন,নীলফামারী প্রতিনিধি ঃ-
২২ ঘন্টা আমরন অনশন করার পর অবশেষ নীলফামারীর ডিমলায় মঙ্গলবার
১৯৭১ সালের ৬নং সেক্টরের অধিনে রঙ্গাঙ্গনে মুক্তিযোদ্ধা (এফএফ)
অনশন প্রত্যাহার করেছে। নীলফামারী-১(ডোমার- ডিমলা) আসনের
সংসদ সদস্য মুক্তিযোদ্ধা আফতাব উদ্দিন সরকার, উপজেলা
নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল করিম, ডিমলা থানার ওসি
মোয়াজ্জেম হোসেন,ডিমলা সদর ইউপি চেয়ারম্যান-আবুল
কাসেম সরকার সহ স্ধসঢ়;হানীয় সরকারদলীয় নেতৃবৃন্দ শহীদ
মিনারের পাশে অনশনরত স্ধসঢ়;হানে গিয়ে তাদের দাবির বিষয়ে
প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহনের আশ্বাস ও পানি খাইয়ে দিয়ে
মুক্তিযোদ্ধাদের আমরন অনশন প্রত্যাহার করান। গত সোমবার দুপুর
সাড়ে ১২টায় থেকে স্থানীয় শহিদ মিনার চত্তরে মুক্তিযোদ্ধাদের
যাচাই বাছাই স্থগিত হওয়ায় ও প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা তালিকা
প্রকাশের দাবীতে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাগন আমরন অনশন শুরু
করেছিলে এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল করিমের
নিকট স্বারকলিপি প্রদান করেন। স্বারকলিপিতে মুক্তিযোদ্ধাগন
অভিযোগ করে করেন, লাল মুক্তি বার্তায় অন্তর্ভুক্ত ও গেজেট ভুক্ত
ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের সনদ ও গেজেট তালিকা থেকে বাদ দেয়ার দাবী
করেন।মুক্তিযোদ্ধাদের অভিযোগ ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের কারনে
প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা চরম বিপাকে পড়েছে। আমরন অনশন
কর্মসুচী শেষে দ্রত সময়ে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাচাই
প্রক্রিয়া যেন বাধাগ্রস্থ করা না হয় এবং প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার
তালিকা প্রকাশের দাবী জানানো হয়। এ সময় বক্তব্য রাখেন
মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন, মিয়ার উদ্দিন, মকবুল হোসেন,
আব্দুল্লাহ চৌধুরী, সাহাদাত হোসেন, ডা. বিমল চন্দ্র রায়
প্রমুখ।
অপরদিকে ডিমলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সামসুল হকের আবেদন
পেক্ষিতে মহামান্য সুপ্রীমকোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ ডিমলা
উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই ৪ মাসের জন্য স্থগিত করেন।
সামসুল হকের দায়েরকৃত রিট পিটিশন-২১১৫/১৭ শুনানী অন্তে
বিচারপতি তারিক উল হাকিম ও বিচারপতি মোঃ ফারুক (এম.
ফারুক) গঠিত ডিভিশন গত ১৯ ফেব্রয়ারী মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক
মন্ত্রানালয়ের সচিবসহ ৩জনের বিরুদ্ধে রুল নিশি জারী করে ৪
মাসের স্থগিতাদেশ প্রদান করেন।
ডিমলা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ও মুক্তিযোদ্ধা যাচাই
বাছাই কমিটির সদস্য সচিব রেজাউল করিম বলেন, আদালতের
নির্দেশের কারন মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কার্যক্রম স্থগিত করা
হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে মুক্তিযোদ্ধাদের অনশন প্রত্যাহার করা
হয়েছে । মুক্তিযোদ্ধারের দাবীর বিষয়টি মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক
মন্ত্রানালয়কে অবগত করা হবে।
মুক্তিযোদ্ধাদের অভিযোগ ডিমলা উপজেলার ১৪৭জন মুক্তিযোদ্ধার
মধ্যে ১৩জন বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করেন। এদের মধ্যে ১২৯জন
ভারতীয় তালিকাভুক্ত ও ১৮জন মুজিব বাহনীর সদস্য। সরকারীভাবে
উপজেলার ২২৫জন মুক্তিযোদ্ধা ভাতা প্রদান করা হয়। চলতি বছর নতুন
করে আরও ৪৭৬জন মুক্তিযোদ্ধার তালিকার জন্য আবেদন করেন।
আবেদনকারীদের মধ্যে অনলাইনে ৪০৩ ও লিখিতভাবে ৭৩জন রয়েছেন।
তবে সরেজমিনে দেখা গেছে, অনশনের প্রথমদিন ২১শে ফেব্রুয়ারী
প্রথম প্রহর রাত-১২টা- ১মিনিটে শহীদ ভাষা সৈনিকদের বিনম্র
শ্রদ্ধায় স্বরনে স্ধসঢ়;হানীয় শহীদ মিনারে পুষ্পমাল্য অর্পনের পর একই
স্ধসঢ়;হানের পাশেই আমরন অনশনরত মুক্তিযোদ্ধাদের তাদের কর্মসুচী
প্রত্যাহারের অনুরোধ জানাতে ও খোজ-খবর নিতে যান-স্ধসঢ়;হানীয়
সংসদ সদস্য-আফতাব উদ্দিন সরকার,উপজেলা নিবার্হী
কর্মকর্তা-রেজাউল করিম,উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান-তবিবুল
ইসলাম,ডিমলা থানার ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন।এ সময়ে মহান
মুক্তিযুদ্ধের সহযোদ্ধা স্ধসঢ়;হানীয় সংসদ সদস্য এবং চেয়ারম্যানকে
কাছে পেয়ে নিজেদের দীর্ঘদিনের বিভিন্ন দাবি গুলোর বিষয়ে
আলোচনা ও দাবি পুরন না হওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করেন মুক্তিযোদ্ধারা।
এর মাঝেই উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা রেজাউল করিম অনশনরত
মুক্তিযোদ্ধাদের তাদের কর্মসুচী প্রত্যাহারের কথা বলা মাত্রই তাদের
তোপের মুখে পড়েন তিনি। এ সময়ে তারা বিভিন্ন সময়ের
উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তার মুক্তিযোদ্ধা বিদ্বেসী ভুমিকা ও
কর্মকান্ডের তীব্র সমলোচনা সহ প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের
অবমুল্যায়ন,অসহযোগীতার অভিযোগ করেন শত শত মানুষের
সামনে !
তারা এ সময়ে ক্ষিপ্ত হয়ে উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তাকে প্রশ্ন
ছুড়ে দিয়ে বলেন, আপনাকে উপজেলার প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাগন –
২০জন ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয়
ব্যবস্ধসঢ়;হার লিখিত অনুরোধ জানালেও আপনি কেনো মাত্র ৪জনের
বিরুদ্ধে দায়সারা ব্যবস্ধসঢ়;হা নিয়েছেন? এবং বাকী ১৬জনের
বিরুদ্ধে কেনো তদন্ত করা হলোনা, ব্যবস্ধসঢ়;হা নেয়াও হলোনো?
কেনো মাণনীয় প্রধানমন্ত্রী’র ব্যক্তিগত উদ্যোগের প্রকৃত
মুক্তিযোদ্ধাদের দুই লাখ করে ঋনের টাকা প্রকৃতরা না পেয়ে ভুয়ারা
পেলেন? কেনো উপজেলা প্রশাসনের কোনো সভা কিম্বা
অন্ধুসঢ়;ষ্ঠানে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের বসবার কোনো ব্যবস্ধসঢ়;হা না
থাকলেও ভুয়াদের জন্য থাকে ভিআইপি ব্যবস্ধসঢ়;হা?
কেনো নতুন ভাবে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই- কমিঠির তালিকায়
মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষের শক্তি ও বিতর্কিত ব্য্িধসঢ়;ক্তদের নাম?
তবে এ সব প্রশ্নের কোনো উপযুক্ত সৎ উত্তরই দিতে পারেননি
নিবার্হী কর্মকর্তা-রেজাউল করিম !
তিনি দিশেহারা হয়ে তালবাহানা মুলক কিছুু কথা বলেই উল্টো
আমরন অনশনরত মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে একাত্বতা প্রকাশ করে বসে
পড়েন তাদের সাথে মাটিতেই !
আর তার এ অভিনয় সুলভ একাত্বতার এক মিনিট না পেরুতেই
তিনি তড়িঘড়ি করে উঠে তাকে ধারনকৃত ছবি উপস্ধিসঢ়;হতিদের
ডিলেট করে দিতে অনুরোধ জানান।আর সকলকে জানিয়ে দেন
তিনি আগামীকালের মধ্যেই বদলি নিয়ে অন্য এলাকায় চলে যাবেন ।
তবে জাতীর এই বীর সন্তানদের উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তার
এমনটা ভুমিকার কথা গোটা উপজেলাবাসীকে বিস্ময়কর ভাবে
ভাবিয়ে তুলেছেন!