হেলাল শেখ , ঢাকা ঃ
ঢাকার আশুলিয়ার বাইপাইল ট্রাফিক মোড়ের আশপাশে সকাল সাড়ে ৬ টা থেকে প্রায় ৯টা পর্যন্ত প্রকাশ্যে চলছে
তিন তাস জুয়া খেলা ও বিভিন্ন মাদক ব্যবসা জমজমাট। এই মাদক ও জুয়ারুদের টাকা জোগার করতে সন্ত্রাসী
সিন্ডিট ও বিশাল চক্র বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ড করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই,
অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়সহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ড বাড়ছে। সরেজমিনে জানা গেছে, সাভার আশুলিয়া-
গাজীপুর জেলার সীমান্ত এলাকা জিরানী থেকে শুরু করে শ্রীপুর, জিরাবো, ঘোষবাগ, নসিংহপুর, ভাদাইল, বাঘবাড়ি,
রূপায়ন মাঠ, জামগড়া, ছয়তলা, বেরুণ, শিমুলতলা, পলাশবাড়ি, নয়ারহাট, অন্যদিকে সাভার, আমিন বাজারসহ মাছ
ব্যবসায়ীরাসহ অনেকেই নগদ টাকা নিয়ে সর্বশান্ত করছে বলে তারা জানান। এসব জুয়ারুরা বিভিন্ন এলাকায়
চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করাসহ খুন, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন ক্রাইম করছে। জুয়া
খেলাকে কেন্দ্র করে মারপিট, হাঙ্গামার মতো ঘটনাও ঘটছে বলে স্থানীয়রা জানান।
উল্লেখ্য আশুলিয়া থানার মামলা নং ৪৮, তারিখ, ৩০-০১- ২০১৭ ইং ধারা ১৪৩/ ৪২৭/৩২৩/৩৮৯/৫০৬। অন্যদিকে গোপালগঞ্জ
জেলার কোটালীপাড়া ধরাইল গ্রামের আকরাম শেখের মেয়ে মোছাঃ মনিকা খাতুন মনিয়া (২৫) কে বিদেশ পাঠানোর
ঘটনা রহস্যজনক, ঢাকা পাসপোর্ট অফিসে নেওয়ার পথে রহস্যজনক ভাবে নিখোঁজ হয়েছে মনিয়া। এ বিষয়ে
আজিজুর হাওলাদার (মজিবুর) আশুলিয়া থানায় একটি জি ডি করেন। জি ডি নং ৪৪। তারিখ, ০১/০২/২০১৭ ইং। এর
আগে সাগর ও আমিনুল নামের দুইজন দালাল নারী ও শিশু পাচারকারী চক্রের হোতা,বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে লাখ লাখ
টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসব দালাল ও প্রতারক সন্ত্রাসীরা জুয়া, মাদক এবং দেহ ব্যবসার নারীদের
সাথে জড়িত রয়েছে বলে স্থানীয়রা জানান। এরা অনেক সময় শিল্প কারখানায় কৌশলে কাজ নিয়ে চাঁদাবাজি করে থাকে
বলে আশুলিয়া থানায় অভিযোগ ও মামলা রয়েছে।
জানা গেছে, এক সময়ে ক্রাইম জোন এলাকা হিসাবে ছিলো, রাজশাহী বিভাগের-রাজশাহী, নওগাঁ, পাবনা,
সিরাজগঞ্জ, বগুড়া, জয়পুরহাট, রংপুর বিভাগের-রংপুর জেলা, গাইবান্ধা, অন্যদিকে খুলনা, কুষ্টিয়া, মাদারীপুর বরিশাল
ভোলা ও মুন্সিগঞ্জ, কেরানীগঞ্জ, মিরপুর, উত্তরা- উত্তরা পশ্চিম থানা এলাকা। এসব সন্ত্রাসীদের নিরাপদ আশ্রয় আস্তানা
হিসাবে পরিণত হয়েছে আশুলিয়া। বর্তমানে জাতীয় পত্রিকাসহ বিভিন্ন সুত্রে জানা যায়, সাভার আশুলিয়া “ক্রাইম
জোন” এলাকা হিসাবে পরিণত হয়েছে। রাজধানীর নিকটবর্তী শিল্পঞ্চল সাভার আশুলিয়ায় খুন, ধর্ষণ, চাঁদাবাজি-
সন্ত্রাস ও মাদক ব্যবসার সাথে যোগ হয়েছে তিন তাস জুয়াসহ বিভিন্ন অসামাজিক কর্মকান্ড। এসব যেন
অনেকটাই স্বাভাবিক ঘটনা এ এলাকাবাসীর কাছে। সুত্র মতে শুধু “আশুলিয়া থানা পুলিশ বিভিন্ন এলাকা থেকে
প্রায় এক বছরে ১২৩টি লাশ উদ্ধার করেছে”। অনেকেই বলছেন, সাভার ও আশুলিয়া এমন কোনো অপরাধ নেই যে তা
সংঘটিত হয় না। সেজন্যই এ এলাকা ক্রাইম জোন বলে উল্লেখ্য করা হয়েছে। “বিভিন্ন এলাকার অপরাধীরা এখন সাভার
আশুলিয়ায় নিরাপদ মনে করে আশ্রয় নিয়েছে। সুত্র জানায়, মরণ নেশা ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদকের শক্ত জাল বিস্তার করছে
এ এলাকায়। দেশের বিভিন্ন সীমান্ত পথ দিয়ে অবাধে ইয়াবাসহ নানা রকম মাদক ঢুকছে, তা ছড়িয়ে পড়ছে রাজধানী
ঢাকা জেলার আশুলিয়া। জুয়া ও মাদকের বিশাল সিন্ডিকেটের শক্তিশালী জালের মাধ্যমে অনেকেই সহজেই জড়িয়ে পড়ছে
(ক্রাইম) অপরাধমূলক কর্মকান্ডে।
এ বিষয়ে আশুলিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন্স), কর্মকর্তা আহাদ আলী বলেন, মাদক ব্যসায়ীদের কোনো ছাড়
নেই, আর বহিরাগত সন্ত্রাসী সিন্ডিকেট ও প্রতারক চক্র বা জুয়ারুদের বিরুদ্ধে কারো কোনো অভিযোগ পেলে
পুলিশ আইনত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। আর মাদকের বিষয়ে যে কোনো তথ্য পেলে আমি নিজেই অভিযানে যাবো। অপরাধী
সে যেই হোক না কেন-তাকে গ্রেফতার করা হবে বলে তিনি জানান। পুলিশের উপর মহলের কর্মকর্তা অনেকেই বলেন,
সারা দেশে মাদক বিরেধী অভিযান চলছে, মাদকের সাথে জড়িত কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। এর আগে ঢাকা জেলার
সাবেক পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান কয়েকটি অভিযানে মাদক ও জুয়ার স্পট থেকে কয়েকজনকে আটক
করেছিলেন। আবার জুয়া ও মাদক ব্যবসা জমজমাটভাবে চলছে।