অনলাইন ডেস্কঃ
কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন নতুন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কাছে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা চেয়েও না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন এক প্রার্থী। আসন্ন পাবনার সুজানগর উপজেলা পরিষদের উপনির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী হাজারী জাকির হোসেন দাবি করেছেন, তিনি এলাকার নির্বাচনী অনিয়মের বিরুদ্ধে কমিশনে নয়টি চিঠি দিয়েছেন। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ার অভিযোগ করে আজ বৃহস্পতিবার ফের আরেকটি চিঠি দেওয়া হয়েছে।
চিঠিটি নির্বাচন কমিশনে নিয়ে আসেন প্রার্থীর মেয়ে অ্যাডভোকেট জাকিয়া হুমায়রা। তিনি বলেন, ‘আজকে দিয়ে কমিশনকে দশটি চিঠি দিলাম। প্রাপ্তি জারি শাখা থেকে বলা হচ্ছে, চিঠি কমিশনে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু তারা যে চিঠি পেয়েছেন, কমিশনের সে রকম কার্যক্রম আমরা লক্ষ করছি না। আমাদের বাড়িতে হামলা হচ্ছে। আমাদের নির্বাচনী এজেন্টদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু কমিশন তার কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।’
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘আগামী ৬ মার্চ হতে যাওয়া পাবনার সুজানগর উপজেলার উপনির্বাচনকে আমি আপনার কার্যালয়ে এলাকার যাবতীয় সমস্যা, সহিংসতা, নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনসহ পরপর নয়টি চিঠি দিয়েছি। কিন্তু জানি না, চিঠিগুলো আপনার দৃষ্টিগোচর হয়েছে কি-না।’
‘একজন কমিশনার গত ২৭ ফেব্রুয়ারি এ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পাবনা জেলা রাজশাহী বিভাগীয় প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও প্রার্থীদের নিয়ে করা সভায় সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রশাসনকে যথাযথ নির্দেশনা দেওয়া সত্ত্বেও প্রশাসনের নীরব ভূমিকা সত্যিই দুঃখজনক। সেদিন থেকে এসব এলাকায় ন্যক্কারজনক সহিংসতা শুরু হয়েছে। ১ মার্চ সুজানগর পৌরতে পাবনা জেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা নির্বাচনী প্রচার করতে গেলে তাদের ওপর নৃশংস হামলা চালানো হয়।’
হামলায় আহতদের মধ্যে তিনজন গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি এবং দুজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়ি ঘেরাও করে রাখে। এতে পুলিশ নীরব ভূমিকা পালন করে বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
বিএনপির এই প্রার্থী এই নির্বাচন নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘নির্বাচনী এলাকায় আরো কী ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে তা আমার জানা নেই। আমাকে গুম বা হত্যা করারও আশঙ্কা করছি। তাই বিষয়গুলো তদন্ত করে নির্বাচনের দুদিন আগে এ নির্বাচনী এলাকার সেনা মোতায়েনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য কমিশনের কাছে অনুরোধ করছি।’
চিঠির সঙ্গে হাজারী জাকির হোসেন ১ মার্চ (বুধবার) হামলার কিছু ছবি এবং বিএনপির মহাসচিবের বিবৃতির কপি সংযুক্ত করে দেন।
কমিশনের চিঠি দিতে আসা প্রার্থীর মেয়ে অ্যাডভোকেট জাকিয়া হুমায়রা অভিযোগ করে বলেন, ‘ওখানকার সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা নিজে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর সঙ্গে বসে প্রিসাইডিং অফিসার নিয়োগ দিয়েছেন। এ বিষয়েও কমিশনকে অবহিত করেছি। ওই প্রিসাইডিং অফিসারদের পরিবর্তন করতে বলেছি। কিন্তু কোনো সাড়া পাচ্ছি না। আজকে একজন কমিশনারের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তাও পারলাম না।’
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাহাদাত হোসেন বলেন, ‘আমার কাছে এ-সংক্রান্ত কোনো চিঠি আসেনি। তবে আমি সেখানকার রিটার্নিং কর্মকর্তার সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলব। যদি কোনো অনিয়ম সেখানে হয়ে থাকে তাহলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
আগামী ৬ মার্চ সিলেটের ওসমানীনগর, খাগড়াছড়ির গুইমারা ও সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে সাধারণ এবং কুড়িগ্রামের সদর, বরিশালের বানারীপাড়া ও গৌরনদী, ঝালকাঠির কাঠালিয়া, পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালি, কুমিল্লা আদর্শ সদর, নাটোরের বড়াইগ্রাম, কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে, কুমিল্লার সদর দক্ষিণ ও পাবনার ঈশ্বরদীতে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম, নীলফামারীর জলঢাকা, সাতক্ষীরার কলারোয়া ও বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে ভাইস চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।