শেখ হুমায়ুন হক্কানী গাইবান্ধা থেকে ঃ গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের
জাতীয় সংসদ উপ-নির্বাচনের প্রচারণা জমে উঠেছে। দেয়ালে পোস্টার
লাগানোর নিয়ম না থাকায় রাস্তায় রাস্তায় ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছে
প্রার্থীদের নির্ধারিত সাইজের পোষ্টার। অবশ্য কেউ কেউ নিয়ম ভঙ্গ করে
বিশাল বিশাল প্রতীক বানিয়ে ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন। সরকার দলীয়
প্রার্থী এক্ষেত্রে কিছুটা এগিয়ে। ইতোমধ্যে চলছে প্রার্থীদের
গনসংযোগ। সকাল হতে না হতেই প্রার্থীরা গ্রামে গ্রামে পাড়ায়
পাড়ায় ছুটে যাচ্ছেন ভোটারদের কাছে। তারা এলাকার উন্নয়নের কথা
বলছেন। ভোট প্রার্থনা করছেন। এ উপ-নির্বাচনে ৭ জন প্রার্থী হলেও
মুলতঃ আওয়ামী লীগ এবং জাতীয় পার্টির তৎপরতাই বেশী। আওয়ামী লীগ দলীয়
প্রার্থী গোলাম মোস্তফা আহমেদ দাবি করেন পূর্বাঞ্চলের ৫টি
ইউনিয়নে ভোটারদের বিপুল সমর্থন রয়েছে তার পেছনে। এছাড়া গোটা
উপজেলায় রয়েছে আওয়ামী লীগ সমর্থক হাজার হাজার ভোটার। তিনি দলের
উপজেলার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ২২ বছর ধরে দায়িত্ব পালন করছেন।
তিনি আশাবাদি নির্বাচনে তার বিজয় সুনিশ্চিত।
অপরদিকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী দলের
চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের ঘনিষ্টজন। তিনি চেয়ারম্যানের আইন
বিষয়ক উপদেষ্টা। এছাড়া তিনি সুন্দরগঞ্জ উপজেলা জাতীয় পার্টির বর্তমান
সভাপতি। এক সময় এ উপজেলা ছিল জাতীয় পার্টির দুর্গ। পরবর্তীতে
২০০১ সালে চার দলীয় জোটের জামায়াত প্রার্থী জেলা সংগঠনের সাবেক
আমির মাওলানা আব্দুল আজিজ সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ায় জাতীয়
পার্টির ভোট ব্যাংকে ধস নামে। উপজেলাটি জামায়াতের এলাকা হিসেবে
পরিচিত হয়।
২০০৮ সালে মহাজোট প্রার্থী জাতীয় পার্টির কর্ণেল (অবঃ) আব্দুল কাদের
খান বিজয়ী হলেও তার সাংগঠনিক কার্যক্রম না থাকায় দল বিভক্ত হয়ে পড়ে।
এসময় জাতীয় পার্টির শক্তি ক্ষয় হয়। ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী
পরবর্তীতে সুন্দরগঞ্জের রাজনীতিতে পদার্পন করেন। ধীরে ধীরে তিনি
সংগঠনকে গুছিয়ে গতিশীল অবস্থায় নিয়ে আসেন। ফলে জাতীয় পার্টি
বর্তমানে আবার জনসমর্থন নিয়ে সামনে এসে দাঁড়িয়েছে। তাই শামীম
হায়দার পাটোয়ারীর বিশ্বাস জাতীয় পার্টি তার হারানো গৌরব এলাকায়
ফিরে পাবে তার মাধ্যমে। তিনি বিজয়ী হবেন।
এ আসনে অন্যান্য প্রার্থীরা হচ্ছেন- জাসদের মোহাম্মদ আলী প্রামানিক
(মশাল), জেপির ওয়াহেদুজ্জামান সরকার বাদশা (সাইকেল), গণফ্রন্টের শরিফুল
ইসলাম (মাছ), এনপিপির জিয়া জামান খান (আম) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী
মোস্তফা মোহসিন (আপেল)। তাদের প্রচারণা তেমন চোখে পড়ছে না। ফলে
সাধারণ ভোটাদের বিশ্বাস আগামী ২২ মার্চ অনুষ্টিতত্ব উপ-নির্বাচনে
আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির মধ্যেই মুল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। উলেখ্য, গত
বছরের ৩১ ডিসেম্বর দুর্বৃত্তদের গুলিতে এমপি মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন নিহত
হলে এ আসনটি শূন্য হয়।