অনলাইন ডেস্কঃ
একাধিক হত্যা মামলার আসামি মুফতি হান্নানসহ ৩ জঙ্গিকে ফাঁসির মঞ্চে যেতেই হচ্ছে। সাবেক ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ের বিরুদ্ধে করা ৩ আসামির রিভিউ আবেদনর খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ। ফলে যে কোনো সময় তাদের রায় কার্যকর হবে।রোববার প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাব রিভিউ আবেদন খারিজ করে ফাঁসির আদেশ বহাল রাখেন।এর আগে গেলো ১৭ জানুয়ারি আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলা মামলায় মুফতি হান্নানসহ ৩ জনের ফাঁসির আদেশ বহাল রেখে আপিল বিভাগের পুর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হয়। প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বে আপিল বিভাগের ৪ সদস্যের সইয়ের পর সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে ৬৫ পৃষ্ঠার এ রায় প্রকাশ করা হয়। গেলো বছরের ৭ ডিসেম্বর মুফতি হান্নানসহ ৩ আসামির আবেদন খারিজ করে হাইকোর্টের রায় বহাল রাখেন সর্বোচ্চ আদালত। মুফতি হান্নান ছাড়া মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত অপর ২ আসামি হলেন-শরীফ শাহেদুল আলম ওরফে বিপুল ও দেলোয়ার ওরফে রিপন।২০০৪ সালের ২১ মে সিলেটে হযরত শাহজালালের মাজারে সাবেক ব্রিটিশ হাই কমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। এতে ঘটনাস্থলেই পুলিশের এএসআই কামাল উদ্দিন নিহত হন। এছাড়া পুলিশ কনস্টেবল রুবেল আহমেদ ও হাবিল মিয়া নামে আরেক ব্যক্তি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। আনোয়ার চৌধুরী ও সিলেটের জেলা প্রশাসকসহ কমপক্ষে ৪০ জন ওই ঘটনায় আহত হন।ওই ঘটনায় পুলিশ সিলেট কোতোয়ালি থানায় অজ্ঞাত পরিচয় আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করে। তদন্ত শেষে ২০০৭ সালের ৭ জুন হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি আবদুল হান্নান, তার ভাই মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান ওরফে মফিজ ওরফে অভি, শরীফ শাহেদুল আলম ওরফে বিপুল ও দেলোয়ার ওরফে রিপনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়া হয়।২০০৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক সামীম মোহাম্মদ আফজাল আসামি মুফতি হান্নান, বিপুল ও রিপনকে মৃত্যুদণ্ড এবং মহিবুল্লাহ ও আবু জান্দালকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। ওই রায়ের বিরুদ্ধে আসামিপক্ষের আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানি শেষে গেলো বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট দণ্ড বহাল রাখেন।হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামী বাংলাদেশের জঙ্গিরা দেশে ৭ বছরে ১৩টি নাশকতার ঘটনা ঘটায়। এসবের মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন হুজি-বি ও হরকাতুল মুজাহিদীনের অন্যতম শীর্ষ নেতা মুফতি আবদুল হান্নান। এর মধ্যে একটি হামলা ও দুটি হামলাচেষ্টার ঘটনার মূল লক্ষ্য ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।এসব বোমা ও গ্রেনেড হামলার ঘটনায় মুফতি হান্নানের বিরুদ্ধে ১৭টি মামলা হয়। দুটির বিচারকাজ শেষ হয়েছে। আর সাবেক ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলার দায়ে মুফতি হান্নানসহ তিন জঙ্গির ফাঁসি বহাল রাখলেন আদালত।