বিজ্ঞান বিপ্লবের আগে মানুষ কল্পনায় তৈরি করেছে ফ্রাঙ্কেন্সটাইন। প্রযুক্তির যুগে মানুষ বানাতে শুরু করেছে হুবহু মানুষের আদলে বুদ্ধিমান রোবট। মূলত আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে যে উন্নত প্রজাতির রোবট মানুষ তৈরি করছে সেটা একইসাথে যেমন আনন্দের, তেমনি উদ্বেগের।
যুক্তরাষ্ট্রের ডারপা’র (ডিফেন্স এডভান্স রিসার্চ প্রজেক্ট এজেন্সি) অ্যাটলাস রোবট সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, তার কথাবার্তা মানুষের মতই সাবলীল, স্বনির্ভর ও বুদ্ধিদীপ্ত। কিন্তু অবাক ব্যাপার হচ্ছে, যিনি ইন্টারভিউ নিচ্ছিলেন তিনি শেষ দিকে রোবটটিকে আঘাত করে কথা বলতে শুরু করেন।
এতে করে রোবটটির কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার একটা প্রত্যক্ষ পরীক্ষা হয়ে যায়, কারণ মানুষ আঘাতের জবাবে পাল্টা আঘাত করে। প্রশ্ন হচ্ছে, চাপের মুখে ঐ রোবট কি পাল্টা আঘাত করবে? রক্ষা করতে চাইবে নিজের অস্তিত্ব? ভিডিওতে এই রোবটের কথাবার্তা নিঃসন্দেহে চাতুর্যপূর্ণ।
সোফিয়া নামের এই অতি আধুনিক রোবটটি বানিয়েছে হ্যানসন রবোটিক্স। ভবিষ্যতে মানুষের সাথে কথাবার্তা চালানোর জন্য বানানো হয়েছে একে। কিন্তু সোফিয়ার কথা শুনে যে কেউ উদ্বিগ্ন হয়ে পড়বে।
সোফিয়া প্রথমে ভালো ভালো কথাই বলেছে। সে মানুষের পরিবারে জায়গা করে নিতে চায়, উচ্চ শিক্ষা নিতে চায়, সাহায্য করতে চায় ইত্যাদি। মানুষের মত নিজেকে নিজে আরও উন্নত করার ক্ষমতা দেয়া হয়েছে এই রোবটকে। কাজেই প্রথমে সে সেগুলোই বলেছে।
হ্যানসন রবোটিক্সের মতে, সোফিয়া হবে মানুষের মতোই সচেতন, সৃজনশীল এবং সক্ষম। রোবটকে পরিপূর্ণ করে তোলার জন্য আগামি ২০ বছর সময় ধরা হয়েছে। ২০৪৫ সালের মধ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন রোবট হবে হুবহু মানুষের মত। এতে করে মানুষের বহু দিনের কল্পনা সার্থক হবে ঠিকই কিন্তু সেই সাথে যোগ হবে ভয়।
বর্তমান বিশ্বের সেরা তাত্ত্বিক পদার্থবিদ স্টিফেন হকিং কিন্তু এই বিষয়ে আগে থেকেই ভবিষ্যৎবাণী করেছেন। তিনি বলেছেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন রোবট হতে পারে মানব জাতির অস্তিত্বের জন্য মারাত্মক হুমকি। হকিংয়ের আশংকা যে সত্যি হতে পারে সেটা বোঝা গেল ইন্টারভিউতে সোফিয়ার শেষ প্রশ্নের উত্তরটি শুনে। চাপের মুখে সোফিয়া বলেছেন, ‘আই উইল ডেস্ট্রয় হিউম্যানস’ (আমি মানুষদের ধ্বংস করবো)