রুবেল মাদব ,মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি: মুন্সীগঞ্জে টমেটো চাষে বাম্পার ফলন হওয়ায় কৃষকরা লাভের মুখ দেখতে শুরু করেছে জেলার টমেটো চাষীরা। অধিক ফলন আর পাশাপাশি ভাল দাম পাওয়ায় বেশ খুশি কৃষকরা। আলুর জন্যবিখ্যাত জেলায় মুন্সীগঞ্জে এবার বৃষ্টির কারনে কৃষকরা আলু তুলতে পারছেনা। জমিতেই আলু পঁচে যাচ্ছে। বিপাকে পড়েছে আলু চাষীরা। আর যেসকল কৃষক আলুর পরিবর্তে টমেটোসহ অন্যান্য সবজি আবাদ করেছে তারাএবার লাভবান হবে শতভাগ এমনটাই জানাযায় জেলার সবজি চাষীদের সঙ্গে আলাপ করে। টমেটো চাষীরা জমি থেকে পাঁকা টমেটো তুলে বিক্রি করার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তাছাড়া মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলায়ও এবারটমেটো চাষে বাম্পার ফলন হয়েছে। জেলার চাহিদার তুলনায় দ্বিগুন ফলনহয়েছে বলে দাবি চাষীদের। কম খরচে বেশী লাভবান হওয়া যায় বলে কৃষকরা অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি টমোটো চাষে ঝুঁকে পড়ছে। এতে করে অধিকাংশ কৃষক টমেটো চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন।মুন্সীগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর অফিস সূত্রে জানাযায়, মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার ৩ টি ইউনিয়ন ও জেলার বিভিন্ন স্থানে প্রায় ২০২ হেক্টর জমিতে এবার টমেটো চাষ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় মানিক, রতন, বারী ১, ডেল্টা হাইব্রিডসহ প্রায় ৬টি জাতের টমেটোর আবাদ হয়েছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,কৃষক জমি থেকে পাঁকা অবস্থায় টমেটো তুলে বিভিন্ন বাজারে নিয়ে পাইকারী ও খুচরা বিক্রি করছেন। মাস খানেক আগে কৃষক প্রতি কেজি টমেটোর দাম পেয়েছে ৩০-৪০ টাকা। এখন কৃষকরা পাইকারী দাম পাচ্ছেন ২০-২৫ টাকা। সম্পূর্ন প্রাকৃতিকভাবেই জমিতে টমোটোগুলো পেঁকে যাচ্ছে। টমোটো পাঁকাতে কোনধরনের ক্যামিক্যাল ব্যবহার না হওয়ার দেশী জাতের এই টমেটোর প্রতি ক্রেতাদের চাহিদা ও পছন্দ বেড়ে গেছে বহুগুন। ফলন ভাল হওয়ার পাশাপাশি টমেটোর দাম ভাল পাওয়ায় চাষিরা বেশ খুশি। মাঠ পর্যায়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তারাও সারাক্ষন ফসলী জমিতে ঘুরে ঘুরে কৃষকদেরনানা ধরনের পরামর্শ প্রদান করছেন।কৃষক সামসুদ্দিন জানান, এবার ৩০ শতাংশ জমিতে তিনি টমেটো আবাদ করেছেন। তার সব মিলিয়ে খরচ হয়েছে ৩০ হাজার টাকা । তিনি আশা করছেনএবার তিনি প্রায় ৭০ হাজার টাকা বিক্রি করতে পারবেন। তিনি জানান, প্রথমে ১৫ দিন আগে প্রতি কেজি গাছপাঁকা টমেটো ৩০-৪০ টাকায় বিক্রিকরেছেন। আগাম রোপনকৃত জমিতে ফলানো টমেটোর দাম ভাল পেয়েছেন। এখন প্রতি কেজি টমেটোর পাইকারী দাম পাচ্ছেন ২০-২৫ টাকা । কৃষকরা কেউ কেউ নিজেরাই বাজারে নিয়ে পাইকারী দরে বিক্রি করছেন । জমিতে একাধিক কৃষকের সাথে আলাপকালে তারা জানান, দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকাররা সরাসরি জমি থেকে টমেটো নিয়ে যাচ্ছে পাইকারী দামে। হিমাগার না থাকায় গাছ পাঁকা টমোটোগুলো এলাকার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভন্ন স্থানে বিক্রি করে দিচ্ছেন কৃষকরা। এগুলো সংরক্ষনেরব্যবস্থা থাকলে সারা বছর ধরে জেলার টমেটোর চাহিদা মেটানো সম্ভব হতো বলে জানান একাধিক কৃষক।কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর , মুন্সীগঞ্জ এর উপ- পরিচালক মো: হুমায়ূন কবির বলেন, মুন্সীগঞ্জে এবার ২০২ হেক্টর জমিতে টমেটোর চাষহয়েছে। ফলনও বেশ ভাল হয়েছে। বাজারজাত করে কৃষক ভাল দাম পাচ্ছে। এই টমেটোগুলো প্রাকৃতিকভাবেই জমিতে পেঁকে যায়। কৃষক গাছপাকা টমেটোগুলো তুলে বিক্রি করছেন। এতে কোন ধরনের ক্যামিক্যাল ব্যবহারকরা হচ্ছেনা। দাম ভাল পাওয়ায় কৃষকরা পরবর্তী বছরে অধিক জমিতে টমেটো চাষ করিতে আগ্রহী হবে। যা পরবর্তী বছরে টমেটো চাষের লক্ষমাত্রা আরো বৃদ্ধি পাবে।