বুধবার, ০৮ জানুয়ারী ২০২৫, ০৯:২৮ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
কবে হবে জাতীয় নির্বাচন, জানালেন প্রধান উপদেষ্টা কুমিল্লায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে বাসের ধাক্কা, নিহত ৩ মোরেলগঞ্জে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে প্রশাসনের আয়োজনে ফুটবল টুর্নামেন্ট খেলার উদ্বোধন জাতীয়তাবাদী রেলওয়ে শ্রমিক ও কর্মচারী দলের ৪৪ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন তারেক রহমান দেশে ফিরবেন কখন, যা বললেন মির্জা ফখরুল গুম-খুনে আর জড়াবে না র‍্যাব : মহাপরিচালক শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যক্রম সমর্থন করে না ভারতের মোদি সরকার সোনারগাঁয়ে দুটি চুনা কারখানার অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিছিন্ন পাঁচবিবিতে জনবল সংকট ইউনিয়ন স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রে ক্যারিবিয়ান জয়ের পর তাসকিন-তাইজুল যা বললেন

রাজধানীতে বন্ধ হচ্ছে ‘সিটিং’ বাসের ‘নৈরাজ্য’

বাংলার প্রতিদিন ডেস্ক ::
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ২৪ মার্চ, ২০১৭
  • ৪০৫ বার পড়া হয়েছে

অনালাইন ডেস্কঃ

রাজধানী ঢাকায় অপ্রতুল গণপরিবহন ব্যবস্থার মধ্যেই ‘সিটিং বাস সার্ভিস’ নামের ‘নৈরাজ্য’ নগরবাসীর ওপর যেন এতদিন চেপে বসেছিল ‘বোঝার ওপর শাকের আঁটি’র মত।

শেষ পর্যন্ত বাস মালিক ও শ্রমিকদের হয়রানি- অনিয়মের কারণে সার্ভিসটি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সমিতি। আসছে ৩০ মার্চ এমনই সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে সমিতি। এর আগে একাধিকবার এ নিয়ে বৈঠক হয়েছে।

দীর্ঘদিন ধরে যাত্রীদের অভিযোগ, সিটিং সার্ভিসের নামে চলছে ‘চিটিংবাজি’। অথচ বিআরটিএ বলছে, রাজধানীতে চলাচলকারী সব বাসই লোকাল বাস। সিটিং সার্ভিস বলে কোনো গণপরিবহন নেই। অধিকাংশ বাস সরকারি নিয়ম ভেঙে রাতারাতি সিটিং সার্ভিসে পরিণত হয়েছে। সরকার নির্ধারিত ভাড়া মানছে না কোনো গণপরিবহনই।

যাত্রী যেখানেই নামুক, সর্বশেষ গন্তব্যের ভাড়া আদায় করা হচ্ছে, যা ন্যায্য ভাড়ার চার থেকে পাঁচগুণ পর্যন্ত। এ কারণে বেশি বিপাকে আছে স্বল্পদূরত্বের যাত্রীরা। তাদের এখন ৫ টাকার জায়গায় গুনতে হচ্ছে ১০ থেকে ২০ টাকা। নয়তো ৭ টাকার জায়গায় ২০ থেকে ৩০ টাকা।

আগারগাঁও থেকে আব্দুল্লাহপুর এ/১৮৪ রুটে জাবালে নুর, আসাদ গেট থেকে আব্দুল্লাহপুর রুটে প্রজাপতি; মিরপুর থেকে আব্দুল্লাহপুর রুটে বসুমতি, মধুমতি; মিরপুর থেকে কুড়িল হয়ে বাড্ডাসহ অন্যান্য রুটে চলাচলকারী জাবালে নূর, আকিক, নূরে মক্কা, অছিম সহ রাজধানীর সব রুটেই সিটিং সার্ভিসের নামে চলা গাড়িগুলোতে নেয়া হচ্ছে বাড়তি ভাড়া।

‘ভাড়া বেশি নেয়া হচ্ছে কেন? এ প্রশ্নের জবাবে জাবালে নুর বাসের কন্ডাক্টর জানান, ‘ভাই এটা হলো সিটিং বাস। এখান থেকে খিলক্ষেত গেলেও ৩০ টাকা আব্দুল্লাহপুর গেলেও ৩০ টাকা। মালিক যা ভাড়া নির্ধারণ করে দিচ্ছে আমরা তাই নিই। এর বেশি নিই না।’

অথচ ভাড়া বেশি নেয়া হলেও লোকাল বাসের মতই রাস্তা থেকে বেপরোয়া যাত্রী তুলছে এসব বাসের হেলপার কন্ডাক্টররা। প্রতিবাদ করলেই যাত্রীদের সঙ্গে করা হচ্ছে খারাপ ব্যবহার। অনেক সময় করা হচ্ছে মারধরও। এসব গাড়ির মালিক-শ্রমিক সিন্ডিকেটের কাছে সাধারণ যাত্রীরা অসহায়।

যাত্রাবাড়ী থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত বেশ কিছু বাস সার্ভিসে এই ‘সিস্টেম’ ব্যবহার করে বাড়তি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। এই রুটে মেশকাত ও গাবতলি লিংক (সিটিং সার্ভিস) যাত্রীপ্রতি ২০ টাকা করে ভাড়া আদায় করে। অথচ বিআরটিএ’র ওয়েবসাইটে দেওয়া তালিকা বলছে এখানে বড় বাসের ভাড়া হওয়া উচিত ১৫ টাকা।

‘সিটিং সার্ভিস’, ‘গেট লক’, ‘বিরতিহীন’, ‘সময় নিয়ন্ত্রণ’, ‘কম স্টপেজ’, ‘কাউন্টার সার্ভিস’ এসব গালভরা নামের বাসগুলোর এখন রমরমা কারবার। এর পরও চালকদের খেয়াল খুশিমতো যেখানে সেখানে এসব বাস দাঁড়াতে দেখাতে যায়।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) হিসাবে ঢাকা মহানগরে অভ্যন্তরীণ রুটে নিয়মিত চলাচল করে প্রায় ছয় হাজার বাস। ঢাকা মহানগরে বিআরটিএ–নির্ধারিত সর্বনিম্ন ভাড়া বাসের জন্য ৭ টাকা আর মিনিবাসের জন্য ৫ টাকা। অথচ গেটলক সিটিং সার্ভিসের বাসগুলোতে সর্বনিম্ন ভাড়া ১০ টাকা থেকে ক্ষেত্র বিশেষে ৫০ টাকা পর্যন্ত নিতে দেখা যায়।

প্রতিটি বাসে বিআরটিএ–নির্ধারিত ভাড়ার তালিকা টাঙানোর নিয়ম আছে। গত কয়েক দিনে বিভিন্ন পথে চলাচলকারী অন্তত ২০টি পরিবহনের বাসে উঠে দেখা যায়, নির্ধারিত ভাড়ার তালিকা টাঙানো নেই। আর গেটলক সিটিং সেবা বলা হলেও দাঁড়ানো যাত্রী নিতে এবং যেখানে–সেখানে থামিয়ে যাত্রী নামাতে দেখা গেছে অন্তত ১১টি পরিবহনের বাসকে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ বলেন, ঢাকায় সিটিং গাড়িতে অনিয়ম রয়েছে। নিয়মিত আমরা মিটিং করছি। ঢাকায় সিটিং সার্ভিসের নামে অতিরিক্ত ভাড়ার অভিযোগ তদন্তের পর আমরা এ সিদ্ধান্তে যাচ্ছি। যা ৩০ তারিখের মিটিং এ ঘোষণা হবে। স্টপেজ অনুসারে গাড়ি চলাচল করবে।

তিনি বলেন, যাদের ফিটনেস নাই তাদের বিষয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত যে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে তাতে আমাদের আপত্তি নেই। এদিকে রুট পারমিটে সিটিং সার্ভিস বলতে কিছু নেই। সিটিং সার্ভিস হিসেবে বিআরটিএ কোনো বাস অনুমোদন দেয় না বলেও তিনি জানান।

এদিকে গত ৫ মার্চ থেকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) তত্ত্বাবধানে নগরীতে ধারাবাহিকভাবে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চলছে। এতে অংশ নিচ্ছে ডিএসসিসি, ঢাকা জেলা প্রশাসন ও বিআরটিএ। ফিটনেস সার্টিফিকেট, চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স ইত্যাদি পরীক্ষা করছেন আদালত। কাগজপত্র ঠিক না থাকলে গাড়ি আটকের পাশাপাশি চালকদের জেল-জরিমানা সহ আইনি ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

২০ বছরের পুরনো ফিটনেসবিহীন গাড়ি আটক এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকলে চালকদের কারাদণ্ড দিচ্ছেন আদালত।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © banglarprotidin.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazarbanglaro4451